স্কুলের মাঠে নির্মাণ সামগ্রী স্বাস্থ্যঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

রানা আহমেদ, নলডাঙ্গা (নাটোর)
Thumbnail image

নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মির্জাপুর দিয়াড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে সড়কের নির্মাণসামগ্রী রেখে চলছে পিচ কার্পেটিংয়ের পাথর মিশ্রণের কাজ। পাশেই আগুন জ্বালিয়ে গোলানো হচ্ছে বিটুমিন। এতে কালো ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টসহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে শিশু শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়ের ক্লাস। এদিকে উপজেলা প্রশাসন বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে সড়কের নির্মাণসামগ্রী সরানোর চেষ্টা করেও পারেনি বলে জানা গেছে। 

জানা গেছে, শিক্ষা কর্মকর্তা ইউএনওকে নিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠ পরিদর্শন করে নির্মাণসামগ্রী সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেন। কিন্তু নির্দেশের তোয়াক্কা করেননি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। এ ছাড়া বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই এসব নির্মাণসামগ্রী রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতুন ফেরদৌস, চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আলামিন, বাঁধন ও রিয়া খাতুন বলে, ‘বিটুমিন গলানোর গন্ধে ক্লাসে বসা যাচ্ছে না। কালো ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। মেশিনের শব্দে ক্লাসে স্যারদের কথা বোঝা যাচ্ছে না। আমরা মাঠে নিয়মিত শরীরচর্চা ও খেলাধুলা করতে পারছি না।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আব্দুল্লাহ এন্টারপ্রাইজের সাব ঠিকাদার ইমরান হোসেন বলেন, ‘এলজিইডি বিভাগের কেশবপুর সড়কে কাজ করার জন্য বিদ্যালয়ের মাঠে নির্মাণসামগ্রী রেখে সড়ক নির্মাণকাজ শুরু করেছি। আগামী শুক্রবার পর্যন্ত কাজ চলবে। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় এ কাজ চলছে।’ 

মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রৌকিয়া খাতুন বলেন, ‘গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে ঠিকাদারের লোকজন আমাদের অনুমতি না নিয়ে নির্মাণসামগ্রী রেখে কার্যক্রম চালাচ্ছেন। বিদ্যালয় চলাকালীন বিটুমিন গলানোর গন্ধ ও কালো ধোঁয়ায় শিশু শিক্ষার্থীদের শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে। বাচ্চারা মাঠে খেলাধুলা করতে পারছে না। ঠিকাদারের লোকজনকে নির্মাণসামগ্রী বারবার অনুরোধ করে সরিয়ে নিতে বললেও তাঁরা সরাচ্ছেন না। অভিভাবকেরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন না। এ কারণে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে।’ 

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সানাউল্লাহ বলেন, ‘বিদ্যালয়ের মাঠে সড়ক নির্মাণের সামগ্রী রেখে কার্যক্রম করার কোনো বিধান নাই। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাকে জানানোর পর আমি ইউএনও স্যারকে নিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে চলা কার্যক্রম বন্ধ করে ঠিকাদারের লোকজনকে নির্মাণসামগ্রী অন্যত্র সরিয়ে নিতে বলি। পরে মাঠের ছবি তুলে জেলা প্রশাসক স্যারকে দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদাররা এসব কার্যক্রম চালানোর ফলে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।’ 

ইউএনও দেওয়ান আকরামুল হক বলেন, ‘গত সোমবার আমি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। ঠিকাদারদের নির্মাণসামগ্রী দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। তারপরও যদি না সরায় তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত