কামরুল হাসান, ঢাকা
বর্ষীয়ান সাংবাদিক তোয়াব খানকে বনানী কবরস্থানে গাছের ছায়ায় চিরঘুমে রেখে এলাম। সত্যিই কি তিনি মারা গেছেন? যিনি ‘সত্য মিথ্যা-মিথ্যা সত্য’ কলাম লিখতে পারেন, তাঁর তো মৃত্যু নেই, হয়তো আমরা সেটা বুঝতে পারি না। কিছুদিন আমি তাঁর সহকর্মী ছিলাম বলে আজও বুকের ছাতি ফুলে ওঠে। বারবার মনে হয়, এ আমার বিরাট পাওয়া।
এরপর আর কিছু না হলেও চলে। আজকাল আশপাশে এমন অনেককে দেখি, যারা একটু সুযোগ পেলেই বোঝা আর না বোঝার জ্ঞান উগরে দেয়। বিদ্বজ্জন হওয়ার বাসনায় ‘পীরের থানে শিরনি’ চড়ায়। তোয়াব খানকে খুব কাছ থেকে দেখেছি অনেক বছর, তিনি তাদের ধারেকাছেও ছিলেন না। তিনি ছিলেন আপাদমস্তক সাংবাদিক, প্রতিষ্ঠানতুল্য।
জনকণ্ঠে আমার যোগদান ছিল অনেকটা আকস্মিক। জেনারেল মঞ্জুর হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা আসামি এরশাদকে জিজ্ঞাসাবাদের খবর ফাঁস করে হইচই ফেলে দিতেই জনকণ্ঠ থেকে ডাক এল। অগ্রজ সাংবাদিক ফজলুল বারী আমাকে পূর্বকোণ থেকে নিয়ে গেলেন জনকণ্ঠে। তোয়াব খান বললেন, ‘আজই যোগ দাও।’ সেই হয়ে গেলাম জনকণ্ঠ পরিবারের সদস্য। এরপর তাঁর অপত্যস্নেহ আমাকে বছরের পর বছর আগলে রেখেছিল। প্রতিবেদন প্রকাশের কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে একবার একটি মহল আমাকে চাকরিচ্যুত করতে চাপ দিয়েছিল। তোয়াব খান সেদিন তাদের পথ আগলে দাঁড়িয়েছিলেন, তা না হলে কবে কোথায় ভেসে যেতাম!
জনকণ্ঠ ভবনে আমরা বসতাম সপ্তম তলায়, তার ওপরের তলায় বসতেন উপদেষ্টা সম্পাদক তোয়াব খান। বিশাল কক্ষের ভেতরে তিনি একা বসে কাজ করতেন, নীরবে। দিনের বেলায় তাঁর টেবিলের সামনে কোনো চেয়ার থাকত না। রাতে নিউজ এডিটর বাইরে থেকে চেয়ার এনে পাশে বসে নিউজ দেখতেন। নিউজ দেখার সময় তিনি টেপরেকর্ডারে গান শুনতেন, শান্তিদেব ঘোষের গলায় রবীন্দ্রনাথের গান। যেদিন তোয়াব খানের ছোট মেয়ে এষা মারা গেলেন, সেদিন পত্রিকা অফিসে ছুটি ছিল। আমরা অবাক হয়ে দেখলাম, পরদিন সকালে সবার আগে তিনি অফিসে এসেছেন। তাঁর দুই চোখ টলমল।
তোয়াব খান যেদিন মারা গেলেন, সেদিন তাঁর শ্যালক রফিকুল আনাম খান ইউনাইটেড হাসপাতালে হিমঘরের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, জীবনের শেষ দিকে তিনি প্রায়ই একটি গান শুনতেন, ‘ওই ঝঞ্ঝার ঝঙ্কারে ঝঙ্কারে বাজল ভেরী, বাজল ভেরী।/ কখন্ আমার খুলবে দুয়ার—নাইকো দেরি, নাইকো দেরি…’। হাসি-রাগ-দুঃখ-অভিমানে, জীবনের প্রতি পদে তিনি রবীন্দ্রনাথের অস্তিত্ব টের পেতেন। এ যুগের কবি শ্রীজাত বলেন, যে রবীন্দ্রনাথের গান শোনে, পৃথিবীর কোনো দুঃখ-কষ্ট তাঁকে স্পর্শ করতে পারে না।
কবি শামসুর রাহমানের ওপর জঙ্গি হামলার পর সেই ঘটনা নিয়ে বিটিভিতে ‘ঘটনার আড়ালে’ নামে সংবাদভিত্তিক একটি অনুষ্ঠান করেছিলেন তাঁর অনুজ খ্যাতিমান সাংবাদিক আবেদ খান। সেই অনুষ্ঠানে আমার একটি সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়েছিল। বিটিভিতে সেটি প্রচারের পর একদিন তিনি আমাকে ডেকে বললেন, ‘সাংবাদিকদের নিজেদের অত প্রকাশ করতে নেই। লক্ষ্যের চেয়ে উপলক্ষটা বড় হলে লক্ষ্যটা কক্ষচ্যুত হয়।’ কথাটা শুনে প্রথম দিন আমার একটু খারাপ লাগলেও পরে মনে হয়েছিল, ঠিকই তো। এর পর থেকে তাঁর এই বাণী নিজের জীবনের ব্রত হিসেবে নেওয়ার চেষ্টা করেছি।
জনকণ্ঠ অফিসে প্রতিদিন বেলা ১১টায় রিপোর্টারদের মিটিং হতো। উপদেষ্টা সম্পাদক হয়েও তোয়াব খান নিজে সেই মিটিং করতেন। মিটিংয়ে আসতেন একেবারে পাটভাঙা কাপড় পরে। দুপুরে বাসায় গিয়ে বিকেলে আসতেন অন্য কাপড়ে। বেশির ভাগ দিনই থাকত অমলিন পাজামা-পাঞ্জাবি। সঙ্গে ম্যাচ করা চপ্পল, ঘড়ি আর পারফিউম। যত দিন তিনি কর্মক্ষম ছিলেন, এ নিয়মের কোনো ব্যত্যয় হয়নি।
রিপোর্টারদের মিটিংয়ে তিনি বঙ্গবন্ধুর কথা বলতেন, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র আর মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতেন, একটি জাতির বেড়ে ওঠার ইতিহাস বলতেন। আমরা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে সেসব কথা শুনতাম। ক্রাইম রিপোর্টারদের ডাকতেন ‘ক্রিমিনাল রিপোর্টার’ বলে। আমি ছিলাম ক্রাইম রিপোর্টারদের মধ্যে কনিষ্ঠ সদস্য। আমাকে ডাকতেন ‘ছোট ক্রিমিনাল’। সাপ্তাহিক মিটিংয়ে তিনি ছোট ক্রিমিনাল ডাকলেই আমি সাড়া দিতাম। সবাই হাসলেও এতে আমার এতটুকু মন খারাপ হতো না। আমি জানতাম, তোয়াব খানের সেই ডাক ছিল মমতায় ভরা।
তোয়াব খান অফিসে আসতেন বেলা পৌনে ১১টার দিকে। আমরাও সে সময় আসতাম। অফিসের নিচে দেখা হলে প্রতিবারই তিনি আদুরে গলায় বলতেন, ‘কী মিয়া, কী খবর?’ জনকণ্ঠ ছাড়ার পর যতবার তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছে, সেই একই ডাক। আজকের পত্রিকায় যুক্ত হওয়ার বছর দেড়েক আগে দুবার তাঁর বাসায় গিয়েছিলাম। ড্রয়িং রুমে আমাকে দেখে হাসি দিয়ে বললেন, ‘কী মিয়া, কী খবর?’
হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা যেদিন শাপলা চত্বর ঘিরে ফেলেছিল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে সেদিন পুরো ঢাকায় শত শত মানুষ নিহত হওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। অভিযান চলার সময় রাত আড়াইটার দিকে তিনি আমাকে ফোন করলেন। তার আগে জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক ওবায়দুল কবীর আমাকে ফোন করে বললেন, তোয়াব খান খুঁজছেন। এরপর তোয়াব খান আমাকে ফোন করে জানতে চাইলেন, ‘কতজন নিহত হয়েছে?’ আমি বললাম, অভিযানে কেউ নিহত হয়নি। এ ঘটনার কিছুদিন পর পিআইবিতে দেওয়া একক বক্তৃতায় তিনি সেই রাতের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। বলেছিলেন, ‘আমার বিশ্বাস কামরুলের খবর ভুল হবে না।’ আমার মতো সাধারণ মানের একজন সাংবাদিকের প্রতি তাঁর কত আস্থা! এই শব্দগুলো সেদিন আমার চোখ ভিজিয়ে দিয়েছিল।
কাল সারা দিন ছিল বৃষ্টি। আশ্বিনের সেই বৃষ্টি মাথায় নিয়ে তোয়াব খানকে শ্রদ্ধা জানাতে গেলাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, সেখান থেকে প্রেসক্লাব। বিকেলে তাঁর দাফন হলো। অনেক দিন পর বনানী কবরস্থানে গেলাম। পৃথিবীতে কত কী বদলে গেছে। কবরস্থানটা আছে সেই আগের মতোই। চারদিকে মৃতের সারি। তার ওপরে শরতের শিউলি ফুল ফুটেছে, বসন্তে ফুটবে রুদ্রপলাশ। পুরো প্রাঙ্গণজুড়ে পাখির কলতান। মৃত্যু নয়, এখানে শুধু জীবনের হিল্লোল। তার মাঝে পরম শান্তিতে শুয়ে থাকবেন তোয়াব খান, আধুনিক সাংবাদিকতার পথিকৃৎ আর আমাদের যুগের কিংবদন্তি।
বর্ষীয়ান সাংবাদিক তোয়াব খানকে বনানী কবরস্থানে গাছের ছায়ায় চিরঘুমে রেখে এলাম। সত্যিই কি তিনি মারা গেছেন? যিনি ‘সত্য মিথ্যা-মিথ্যা সত্য’ কলাম লিখতে পারেন, তাঁর তো মৃত্যু নেই, হয়তো আমরা সেটা বুঝতে পারি না। কিছুদিন আমি তাঁর সহকর্মী ছিলাম বলে আজও বুকের ছাতি ফুলে ওঠে। বারবার মনে হয়, এ আমার বিরাট পাওয়া।
এরপর আর কিছু না হলেও চলে। আজকাল আশপাশে এমন অনেককে দেখি, যারা একটু সুযোগ পেলেই বোঝা আর না বোঝার জ্ঞান উগরে দেয়। বিদ্বজ্জন হওয়ার বাসনায় ‘পীরের থানে শিরনি’ চড়ায়। তোয়াব খানকে খুব কাছ থেকে দেখেছি অনেক বছর, তিনি তাদের ধারেকাছেও ছিলেন না। তিনি ছিলেন আপাদমস্তক সাংবাদিক, প্রতিষ্ঠানতুল্য।
জনকণ্ঠে আমার যোগদান ছিল অনেকটা আকস্মিক। জেনারেল মঞ্জুর হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা আসামি এরশাদকে জিজ্ঞাসাবাদের খবর ফাঁস করে হইচই ফেলে দিতেই জনকণ্ঠ থেকে ডাক এল। অগ্রজ সাংবাদিক ফজলুল বারী আমাকে পূর্বকোণ থেকে নিয়ে গেলেন জনকণ্ঠে। তোয়াব খান বললেন, ‘আজই যোগ দাও।’ সেই হয়ে গেলাম জনকণ্ঠ পরিবারের সদস্য। এরপর তাঁর অপত্যস্নেহ আমাকে বছরের পর বছর আগলে রেখেছিল। প্রতিবেদন প্রকাশের কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে একবার একটি মহল আমাকে চাকরিচ্যুত করতে চাপ দিয়েছিল। তোয়াব খান সেদিন তাদের পথ আগলে দাঁড়িয়েছিলেন, তা না হলে কবে কোথায় ভেসে যেতাম!
জনকণ্ঠ ভবনে আমরা বসতাম সপ্তম তলায়, তার ওপরের তলায় বসতেন উপদেষ্টা সম্পাদক তোয়াব খান। বিশাল কক্ষের ভেতরে তিনি একা বসে কাজ করতেন, নীরবে। দিনের বেলায় তাঁর টেবিলের সামনে কোনো চেয়ার থাকত না। রাতে নিউজ এডিটর বাইরে থেকে চেয়ার এনে পাশে বসে নিউজ দেখতেন। নিউজ দেখার সময় তিনি টেপরেকর্ডারে গান শুনতেন, শান্তিদেব ঘোষের গলায় রবীন্দ্রনাথের গান। যেদিন তোয়াব খানের ছোট মেয়ে এষা মারা গেলেন, সেদিন পত্রিকা অফিসে ছুটি ছিল। আমরা অবাক হয়ে দেখলাম, পরদিন সকালে সবার আগে তিনি অফিসে এসেছেন। তাঁর দুই চোখ টলমল।
তোয়াব খান যেদিন মারা গেলেন, সেদিন তাঁর শ্যালক রফিকুল আনাম খান ইউনাইটেড হাসপাতালে হিমঘরের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, জীবনের শেষ দিকে তিনি প্রায়ই একটি গান শুনতেন, ‘ওই ঝঞ্ঝার ঝঙ্কারে ঝঙ্কারে বাজল ভেরী, বাজল ভেরী।/ কখন্ আমার খুলবে দুয়ার—নাইকো দেরি, নাইকো দেরি…’। হাসি-রাগ-দুঃখ-অভিমানে, জীবনের প্রতি পদে তিনি রবীন্দ্রনাথের অস্তিত্ব টের পেতেন। এ যুগের কবি শ্রীজাত বলেন, যে রবীন্দ্রনাথের গান শোনে, পৃথিবীর কোনো দুঃখ-কষ্ট তাঁকে স্পর্শ করতে পারে না।
কবি শামসুর রাহমানের ওপর জঙ্গি হামলার পর সেই ঘটনা নিয়ে বিটিভিতে ‘ঘটনার আড়ালে’ নামে সংবাদভিত্তিক একটি অনুষ্ঠান করেছিলেন তাঁর অনুজ খ্যাতিমান সাংবাদিক আবেদ খান। সেই অনুষ্ঠানে আমার একটি সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়েছিল। বিটিভিতে সেটি প্রচারের পর একদিন তিনি আমাকে ডেকে বললেন, ‘সাংবাদিকদের নিজেদের অত প্রকাশ করতে নেই। লক্ষ্যের চেয়ে উপলক্ষটা বড় হলে লক্ষ্যটা কক্ষচ্যুত হয়।’ কথাটা শুনে প্রথম দিন আমার একটু খারাপ লাগলেও পরে মনে হয়েছিল, ঠিকই তো। এর পর থেকে তাঁর এই বাণী নিজের জীবনের ব্রত হিসেবে নেওয়ার চেষ্টা করেছি।
জনকণ্ঠ অফিসে প্রতিদিন বেলা ১১টায় রিপোর্টারদের মিটিং হতো। উপদেষ্টা সম্পাদক হয়েও তোয়াব খান নিজে সেই মিটিং করতেন। মিটিংয়ে আসতেন একেবারে পাটভাঙা কাপড় পরে। দুপুরে বাসায় গিয়ে বিকেলে আসতেন অন্য কাপড়ে। বেশির ভাগ দিনই থাকত অমলিন পাজামা-পাঞ্জাবি। সঙ্গে ম্যাচ করা চপ্পল, ঘড়ি আর পারফিউম। যত দিন তিনি কর্মক্ষম ছিলেন, এ নিয়মের কোনো ব্যত্যয় হয়নি।
রিপোর্টারদের মিটিংয়ে তিনি বঙ্গবন্ধুর কথা বলতেন, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র আর মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতেন, একটি জাতির বেড়ে ওঠার ইতিহাস বলতেন। আমরা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে সেসব কথা শুনতাম। ক্রাইম রিপোর্টারদের ডাকতেন ‘ক্রিমিনাল রিপোর্টার’ বলে। আমি ছিলাম ক্রাইম রিপোর্টারদের মধ্যে কনিষ্ঠ সদস্য। আমাকে ডাকতেন ‘ছোট ক্রিমিনাল’। সাপ্তাহিক মিটিংয়ে তিনি ছোট ক্রিমিনাল ডাকলেই আমি সাড়া দিতাম। সবাই হাসলেও এতে আমার এতটুকু মন খারাপ হতো না। আমি জানতাম, তোয়াব খানের সেই ডাক ছিল মমতায় ভরা।
তোয়াব খান অফিসে আসতেন বেলা পৌনে ১১টার দিকে। আমরাও সে সময় আসতাম। অফিসের নিচে দেখা হলে প্রতিবারই তিনি আদুরে গলায় বলতেন, ‘কী মিয়া, কী খবর?’ জনকণ্ঠ ছাড়ার পর যতবার তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছে, সেই একই ডাক। আজকের পত্রিকায় যুক্ত হওয়ার বছর দেড়েক আগে দুবার তাঁর বাসায় গিয়েছিলাম। ড্রয়িং রুমে আমাকে দেখে হাসি দিয়ে বললেন, ‘কী মিয়া, কী খবর?’
হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা যেদিন শাপলা চত্বর ঘিরে ফেলেছিল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে সেদিন পুরো ঢাকায় শত শত মানুষ নিহত হওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। অভিযান চলার সময় রাত আড়াইটার দিকে তিনি আমাকে ফোন করলেন। তার আগে জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক ওবায়দুল কবীর আমাকে ফোন করে বললেন, তোয়াব খান খুঁজছেন। এরপর তোয়াব খান আমাকে ফোন করে জানতে চাইলেন, ‘কতজন নিহত হয়েছে?’ আমি বললাম, অভিযানে কেউ নিহত হয়নি। এ ঘটনার কিছুদিন পর পিআইবিতে দেওয়া একক বক্তৃতায় তিনি সেই রাতের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। বলেছিলেন, ‘আমার বিশ্বাস কামরুলের খবর ভুল হবে না।’ আমার মতো সাধারণ মানের একজন সাংবাদিকের প্রতি তাঁর কত আস্থা! এই শব্দগুলো সেদিন আমার চোখ ভিজিয়ে দিয়েছিল।
কাল সারা দিন ছিল বৃষ্টি। আশ্বিনের সেই বৃষ্টি মাথায় নিয়ে তোয়াব খানকে শ্রদ্ধা জানাতে গেলাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, সেখান থেকে প্রেসক্লাব। বিকেলে তাঁর দাফন হলো। অনেক দিন পর বনানী কবরস্থানে গেলাম। পৃথিবীতে কত কী বদলে গেছে। কবরস্থানটা আছে সেই আগের মতোই। চারদিকে মৃতের সারি। তার ওপরে শরতের শিউলি ফুল ফুটেছে, বসন্তে ফুটবে রুদ্রপলাশ। পুরো প্রাঙ্গণজুড়ে পাখির কলতান। মৃত্যু নয়, এখানে শুধু জীবনের হিল্লোল। তার মাঝে পরম শান্তিতে শুয়ে থাকবেন তোয়াব খান, আধুনিক সাংবাদিকতার পথিকৃৎ আর আমাদের যুগের কিংবদন্তি।
পর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে‘বঙ্গবন্ধু’ পদবি বিলীন হবে না। হতে পারে না। যেমনটি ‘দেশবন্ধু’ চিত্তরঞ্জন দাশের পদবি বিলীন হয়নি। ইতিহাসে এসব পদবি অম্লান ও অক্ষয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ছিল অনন্যসাধারণ। আপনজনকে তো অবশ্যই, শত্রুপক্ষের লোকেরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদের
২ দিন আগে