নেত্রকোনায় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন উপলক্ষে এক বাউল সংগীতের আসর অনুষ্ঠিত হয়।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শহরের অজহর রোডের জেলা উদীচী কার্যালয়ে এই আসর হয়। এতে বাউল গান পরিবেশন করেন বাউল শিল্পী সুনীল কর্মকার। এছাড়া স্থানীয় শিল্পীদের মধ্যে বাউল গান পরিবেশন করেন পূজা চক্রবর্তী, আইনুল হক, সোহাগ বণিক শুভ, প্রিয়া বৈষ্য, আবুল বাশার ও দেবাশীষ সরকার।

গান ও কথায় সন্ধ্যার আসরটাকে জমিয়ে তোলেন সুনীল কর্মকার। তিনি একে একে বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় বাউল গান পরিবেশন করেন। সেই সঙ্গে নেত্রকোনার মাটিতে জন্মগ্রহণ করা বাউল শিল্পীদেরও স্মরণ করেন। তিনি বলেন, জীবনে কোনো ধরনের দলের সঙ্গে জড়াইনি। বাউল গান নিয়ে আছি। এটাই আমাকে সবকিছু দিয়েছে। এটা নিয়েই আমৃত্যু থাকতে চাই।

সুনীল কর্মকার বলেন, সংগীতের আধুনিক যন্ত্রের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নাই। যুগ পাল্টাবে, নতুন যন্ত্রও আসবে। কিন্তু মূল কথাটা হল তাল, লয়, সুর ঠিক করে বাজাতে হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উদীচীর জেলার সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান খান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন।

এতে বাউল গানের ওপর প্রবন্ধ পাঠ করেন উদীচীর সহসম্পাদক সঞ্জয় সরকার। বক্তব্য রাখেন, উদীচী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সারওয়ার কামাল রবিন, উদীচী নেত্রকোনা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অসিত ঘোষ, কবি সরোজ মোস্তফা প্রমুখ।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বর্তমানে দেশে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এতে বাউল গান খুবই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। কারণ বাউলেরাই তাদের গানের মধ্যে দিয়ে জোরালো কণ্ঠে মানুষের কথা বলেছেন।

বক্তারা বলেন, নেত্রকোনা হচ্ছে শিল্প সাহিত্যের তীর্থভূমি। এই মাটি অনেক আলোকিত মানুষের জন্ম দিয়েছে। তাদের পথ ধরেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। তাদের দেখানো পথ ধরে এগিয়ে যেতে পারলেই একটি মানবিক সমাজ বিনির্মাণ করা সম্ভব।

সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া বাউল সংগীতের এই আসরটি রাত ১১টা নাগাদ উপভোগ করেন শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।