রুশা চৌধুরী
দোরগোড়ায় জাতীয় সংসদ নির্বাচন। মুখে মুখে উৎসবের আমেজ, তবে মন যেন পুরোটা মিশে যেতে পারছে না! দেশটার বয়স বায়ান্ন বছর না হতেই সবার মতামত একদম ছত্রখান হয়ে গেল!
দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ এই ভোটকে বলে ‘রাজার ভোট’। কী সুন্দর না নামটা? রাজা যায়, রাজা আসে। সেই সঙ্গে আসে মন্ত্রী, রানি, রাজকন্যা, রাজপুত্র। তবে কেন্দ্রবিন্দু তেমন পাল্টায় না। এই কেন্দ্রবিন্দুটা কেমন যেন ‘বায়বীয়’, এর কোনো নির্দিষ্ট আদল নেই, এর নাম ‘রাজনীতি’! আসলে মানুষ কখনোই মুখ্য ছিল না কোনোকালে। তাই তো একসময় তারা ‘নাম’ থেকে ‘স্মৃতি’ তারপর ‘জাদুঘরে’ ঠাঁই পেয়েছে!
আর ‘আমজনতা’? তারা তেমনিই আছে, যেমন আগেও ছিল। কেউ ছুটছে, কেউ হাঁটছে, কেউ টেবিল চাপড়াচ্ছে, খুব আলাভোলা কেউ ঘুমের মাঝে হাসছে, কেউ স্বপ্ন দেখছে...‘দিন আসবেই, দিন সমতার’!
এ দুই দলের মাঝে, কিছু ভোল পাল্টে ফেলতে জানা মানুষও আছে। তারা মনে মনে বলে, ‘উই উইল মেক পলিটিকস মোর ডিফিকাল্ট!’ এদের চেহারা মোটেও ডাইনোসরের মতো নয়, এরা তেলাপোকার মতো... যেকোনো খোপে খাপ খেয়ে যায়!
কী বলতে গিয়ে কোথায় চলে গেলাম! আমজনতার কাজই তো প্যানপ্যানানি, পথ হারাতে পথে নামা, সঙ্গে খুচরো কথার ফুলঝুরি। আরে বাবা, পেঁয়াজ ২০০ টাকা, শীতের আলু ৮০ টাকা, অন্য তরকারিও ৮০ টাকার নিচে না, ডিমের ডজন দেড় শ। এর পরেও এত চিন্তা কীভাবে আসে? পান্তা ভাতও তো আজকাল জাত পাল্টেছে। আসলে বাজারে নাকি চিনি নেই, তাই মুখের তেতো মনেও পৌঁছে যাচ্ছে সবার।
তবে ‘মন’ নামক বিটকেলে জিনিসটা কিন্তু এই ‘আমজনতার’ মাঝেই টিকে আছে আজও। টিকে থাকাটা বুকের মাঝের ভালোবাসায় নাকি পেটের ক্ষুধায়, তা না জানলেও চলে।
নির্বাচনের জন্য শহরটা প্রার্থীদের পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে, তাতে প্লাস্টিকের মোড়ক লাগানো। অবাক কাণ্ড না?
বৃষ্টি নেই, বর্ষা নেই—তাহলে কেন এত জবরদস্তি করে একটা পোস্টারকেও টিকিয়ে রাখতেই হবে? খুঁত খুঁজে বেড়ানো ‘আমজনতার’ মন বলছে, ‘কী দরকার ছিল এই প্লাস্টিক লাগানোর? এই যে এমন নামীদামি প্রার্থীরা যে তাঁদের চেহারাগুলো অদ্ভুত সুন্দর করে পাল্টেছে, তা তো চকচকানির জ্বালায় দেখাই যাচ্ছে না!’
মনুষ্য শরীরে জায়গা নেই, তবু এই ‘মন’টারই দেখি এখনো কিছু বুদ্ধি অবশিষ্ট আছে! সে বুঝেছে পৃথিবীর অন্যতম দূষিত শহরটাতে এই প্লাস্টিকগুলো পচবে না, গলবে না বরং ভীষণ ভয়ানকভাবে থেকে যাবে। আর আমরা হব লাল-সবুজে মোড়ানো প্লাস্টিকের মানুষ!
যে ধান ভানতে চেয়েছিলাম, তার নাম প্রিয় দেশের ‘রাজার ভোটের’ গল্প। কিন্তু ধান ভানার গানটাই ভুলে গেলাম। কপাল কুঁচকে, দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে শুধু আবোলতাবোল বলে গেলাম। ‘আমজনতা’ হয়ে জন্মালে গানও ভুলতে হয় তাহলে!
ভুলে যাই, ক্ষয়ে যাই, নিঃস্ব হয়ে যাই। তবু যদি আমরা মিলে যেতে পারতাম! এই মিলে যাওয়ার সূত্রটা ধাঁধার থেকেও জটিল, তবে অবশ্যই ক্ষুধার থেকে স্পষ্ট। তাই তো শাক দিয়ে মাছ ঢেকে রাখতে শিখতে হয়। ইশ্, বাংলাদেশের সেরা বিজ্ঞানীরাই কিন্তু খুঁজে পেয়েছে যে মাছের শরীরেও প্লাস্টিক। তাহলে বরং প্লাস্টিককেই ভালোবাসি!
নিঃশব্দ ঘাতক হলেও কী সুন্দর ওদের চাকচিক্য! এই যে রাস্তার পোস্টারগুলো এবার কেমন আরাম করে দুলছে। বলছে, ‘যাক, আমজনতার ভালোবাসাটা পাওয়া গেল তবে! এবার নির্বাচন যা হয় হোক, আমরা আরাম করে শীতের দিনগুলোর ওম নেই।’
লেখক: আবৃত্তিশিল্পী
দোরগোড়ায় জাতীয় সংসদ নির্বাচন। মুখে মুখে উৎসবের আমেজ, তবে মন যেন পুরোটা মিশে যেতে পারছে না! দেশটার বয়স বায়ান্ন বছর না হতেই সবার মতামত একদম ছত্রখান হয়ে গেল!
দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ এই ভোটকে বলে ‘রাজার ভোট’। কী সুন্দর না নামটা? রাজা যায়, রাজা আসে। সেই সঙ্গে আসে মন্ত্রী, রানি, রাজকন্যা, রাজপুত্র। তবে কেন্দ্রবিন্দু তেমন পাল্টায় না। এই কেন্দ্রবিন্দুটা কেমন যেন ‘বায়বীয়’, এর কোনো নির্দিষ্ট আদল নেই, এর নাম ‘রাজনীতি’! আসলে মানুষ কখনোই মুখ্য ছিল না কোনোকালে। তাই তো একসময় তারা ‘নাম’ থেকে ‘স্মৃতি’ তারপর ‘জাদুঘরে’ ঠাঁই পেয়েছে!
আর ‘আমজনতা’? তারা তেমনিই আছে, যেমন আগেও ছিল। কেউ ছুটছে, কেউ হাঁটছে, কেউ টেবিল চাপড়াচ্ছে, খুব আলাভোলা কেউ ঘুমের মাঝে হাসছে, কেউ স্বপ্ন দেখছে...‘দিন আসবেই, দিন সমতার’!
এ দুই দলের মাঝে, কিছু ভোল পাল্টে ফেলতে জানা মানুষও আছে। তারা মনে মনে বলে, ‘উই উইল মেক পলিটিকস মোর ডিফিকাল্ট!’ এদের চেহারা মোটেও ডাইনোসরের মতো নয়, এরা তেলাপোকার মতো... যেকোনো খোপে খাপ খেয়ে যায়!
কী বলতে গিয়ে কোথায় চলে গেলাম! আমজনতার কাজই তো প্যানপ্যানানি, পথ হারাতে পথে নামা, সঙ্গে খুচরো কথার ফুলঝুরি। আরে বাবা, পেঁয়াজ ২০০ টাকা, শীতের আলু ৮০ টাকা, অন্য তরকারিও ৮০ টাকার নিচে না, ডিমের ডজন দেড় শ। এর পরেও এত চিন্তা কীভাবে আসে? পান্তা ভাতও তো আজকাল জাত পাল্টেছে। আসলে বাজারে নাকি চিনি নেই, তাই মুখের তেতো মনেও পৌঁছে যাচ্ছে সবার।
তবে ‘মন’ নামক বিটকেলে জিনিসটা কিন্তু এই ‘আমজনতার’ মাঝেই টিকে আছে আজও। টিকে থাকাটা বুকের মাঝের ভালোবাসায় নাকি পেটের ক্ষুধায়, তা না জানলেও চলে।
নির্বাচনের জন্য শহরটা প্রার্থীদের পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে, তাতে প্লাস্টিকের মোড়ক লাগানো। অবাক কাণ্ড না?
বৃষ্টি নেই, বর্ষা নেই—তাহলে কেন এত জবরদস্তি করে একটা পোস্টারকেও টিকিয়ে রাখতেই হবে? খুঁত খুঁজে বেড়ানো ‘আমজনতার’ মন বলছে, ‘কী দরকার ছিল এই প্লাস্টিক লাগানোর? এই যে এমন নামীদামি প্রার্থীরা যে তাঁদের চেহারাগুলো অদ্ভুত সুন্দর করে পাল্টেছে, তা তো চকচকানির জ্বালায় দেখাই যাচ্ছে না!’
মনুষ্য শরীরে জায়গা নেই, তবু এই ‘মন’টারই দেখি এখনো কিছু বুদ্ধি অবশিষ্ট আছে! সে বুঝেছে পৃথিবীর অন্যতম দূষিত শহরটাতে এই প্লাস্টিকগুলো পচবে না, গলবে না বরং ভীষণ ভয়ানকভাবে থেকে যাবে। আর আমরা হব লাল-সবুজে মোড়ানো প্লাস্টিকের মানুষ!
যে ধান ভানতে চেয়েছিলাম, তার নাম প্রিয় দেশের ‘রাজার ভোটের’ গল্প। কিন্তু ধান ভানার গানটাই ভুলে গেলাম। কপাল কুঁচকে, দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে শুধু আবোলতাবোল বলে গেলাম। ‘আমজনতা’ হয়ে জন্মালে গানও ভুলতে হয় তাহলে!
ভুলে যাই, ক্ষয়ে যাই, নিঃস্ব হয়ে যাই। তবু যদি আমরা মিলে যেতে পারতাম! এই মিলে যাওয়ার সূত্রটা ধাঁধার থেকেও জটিল, তবে অবশ্যই ক্ষুধার থেকে স্পষ্ট। তাই তো শাক দিয়ে মাছ ঢেকে রাখতে শিখতে হয়। ইশ্, বাংলাদেশের সেরা বিজ্ঞানীরাই কিন্তু খুঁজে পেয়েছে যে মাছের শরীরেও প্লাস্টিক। তাহলে বরং প্লাস্টিককেই ভালোবাসি!
নিঃশব্দ ঘাতক হলেও কী সুন্দর ওদের চাকচিক্য! এই যে রাস্তার পোস্টারগুলো এবার কেমন আরাম করে দুলছে। বলছে, ‘যাক, আমজনতার ভালোবাসাটা পাওয়া গেল তবে! এবার নির্বাচন যা হয় হোক, আমরা আরাম করে শীতের দিনগুলোর ওম নেই।’
লেখক: আবৃত্তিশিল্পী
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৪ দিন আগে