মহিউদ্দিন খান মোহন
২৮ অক্টোবর তারিখটির কথা মনে হলেই এ দেশের মানুষের হৃৎকম্প শুরু হয়। ২০০৬ সালের এই দিনে যে নৃশংস ঘটনা ঘটেছিল, সেই দুঃসহ স্মৃতি মানুষ আজও ভুলতে পারেনি। প্রাগৈতিহাসিক যুগের হিংস্রতা সেদিন দেখা গেছে এই সভ্য যুগে রাজধানী ঢাকার রাজপথে।
প্রকাশ্য দিবালোকে একদল মানুষ আরেক দল মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এক বীভৎস জিঘাংসায়। পিটিয়ে হত্যা করে লাশের ওপর একদল মানুষকে পাশবিক উল্লাসে মেতে উঠতে দেখে শিউরে উঠেছিল জাতি। শুধু রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব কিছু কিছু মানুষকে কতটা হিংস্র করে তুলতে পারে, তার নজির স্থাপিত হয়েছিল সেদিন বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর পাশের রাস্তায়। রাজনৈতিক সহিংসতার সেই উৎকট রূপ বাকরুদ্ধ করে দিয়েছিল বিবেকবোধসম্পন্ন মানুষকে। আসলে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা যখন জিঘাংসায় রূপ নেয় কেবল তখনই ঘটতে পারে অমন পাশবিক ঘটনা।
আমরা, মানে এ দেশের সাধারণ মানুষেরা রাজনীতি পছন্দ করি, দলকে সাপোর্ট করি, নিজের ভোটটি নিজে দিতে চাই। তাই বলে সেই রাজনীতি, সেই ভোট নিয়ে দলগুলো অমানবিক কর্মকাণ্ডে মেতে উঠবে তা কেউ প্রত্যাশা করে না, সমর্থন তো দূরের কথা। রাজনৈতিক কারণে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষ, মারামারি, হানাহানি মাঝেমধ্যেই ঘটে থাকে। এসব ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত হলেও অস্বাভাবিক নয়। অন্তত আমাদের দেশে। এর প্রধান কারণ রাজনৈতিক দলগুলোর অসহিষ্ণুতা। তারা পরস্পরকে প্রতিদ্বন্দ্বী না ভেবে শত্রু ভাবে। ফলে শত্রুকে নিশ্চিহ্ন করার ক্রোধ তাদের এমনভাবে আচ্ছন্ন করে, অনেক সময় তারা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
যার ফলে ২৮ অক্টোবরের মতো পিলে চমকানো তারিখের জন্ম হয়। আমি এখানে সেই ঘটনার জন্য কারা দায়ী, কারা দোষী, সে বিচার-বিশ্লেষণে যাব না। আমি মনে করি, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতালিপ্সা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি অবিশ্বস্ততা এবং জনগণের ওপর আস্থাহীনতাই এসব সংঘাত-সংঘর্ষের জন্য দায়ী। রাজনৈতিক দল তথা এর নেতৃত্বের মধ্যে যত দিন পর্যন্ত সহনশীলতা ও জনগণের রায় মেনে নেওয়ার মানসিকতা সৃষ্টি না হবে, তত দিন এ অবস্থার পরিবর্তনের আশা বাতুলতা মাত্র।
ইদানীং অনেকেই প্রশ্ন করেন, ‘ভাই, কেমন বুঝতাছেন? সবকিছু সমাধান হবে তো? নাকি আবার কোনো গাড্ডায় পড়ব আমরা?’ আসলে আমরা এ দেশের জনসাধারণ তো ‘ঘর পোড়া গরু’। পশ্চিম আকাশে লাল মেঘ দেখলেই ভয়ে কম্পমান হই। এই বুঝি আবার কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এলোমেলো করে দেয় সবকিছু! আবার বুঝি নেমে আসে কোনো ভয়াবহ দুর্যোগ জাতির ওপর। আবার বুঝি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে যৎসামান্য যে গণতন্ত্র আছে, তাও।
এই মুহূর্তে সবারই মনে প্রশ্ন, দেশে কি আরেকটি ২৮ অক্টোবর সৃষ্টি হতে যাচ্ছে? নির্বাচনকালীন সরকার প্রশ্নে সরকার ও প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দলটির যুদ্ধংদেহী অবস্থান তাদের মনে এ শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। ১৪ অক্টোবরের আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ছিল, ‘সরকার পতনের চূড়ান্ত দফা শুরু ২৮ অক্টোবর’। শিরোনামের তারিখটি দেখে অনেকেই ভ্রুকুঞ্চিত করেছেন। এর কারণ আগেই উল্লেখ করেছি। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অক্টোবরের শেষ সপ্তাহেই দাবি আদায়ে সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি।
১৮ অক্টোবর রাজধানীর সমাবেশ থেকে সেই কর্মসূচি ঘোষণা করবে দলটি। ১৬ অক্টোবর অন্য একটি পত্রিকা ‘লাগাতার কর্মসূচিতে যাচ্ছে বিএনপি’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ১৮ অক্টোবরের সমাবেশ থেকে সরকারকে কয়েক দিনের আলটিমেটাম দিয়ে কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে বিএনপি। ওই সময়ের মধ্যে দাবি না মানলে দুর্গাপূজার পর থেকেই তারা তাদের শেষ ধাপের আন্দোলন শুরু করবে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, সরকারি স্থাপনা ঘেরাওসহ হরতাল, অবরোধ, এমনকি অসহযোগের পরিকল্পনা।
এ বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পত্রিকাটিকে বলেছেন, ‘এই সরকারের সময় শেষ হয়ে গেছে। আশা করি আসন্ন দুর্গাপূজার মধ্যেই সরকার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেবে। অন্যথায় জনগণ এই সরকারের পতন ঘটাতে প্রস্তুত।’
অপরদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, ‘শাপলা চত্বর থেকে শেষ রাতে পালায়া গেল না? আরও করুণ পরিণতি হবে।’
এদিকে ১৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেছেন, ‘মহাসমাবেশ থেকে আমাদের মহাযাত্রা শুরু হবে। ...আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে অশান্তি সৃষ্টিকারী আওয়ামী লীগের পতন ঘটাব।’
একই দিনে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে অনুষ্ঠিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপির আন্দোলনের জবাব দেওয়া হবে জানিয়ে বলেছেন, ‘অবরোধ করলে পাল্টা অবরোধ। দাঁড়াতে দেব না। যারা অবরোধ দেওয়ার কথা বলছে, তারাই নির্বাচনে বাধা দেবে। তাদের বিরুদ্ধে বন্ধুরা কী ব্যবস্থা নেবে দেখব।’
দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের এমন হুমকি, পাল্টা হুমকি জনসাধারণকে ভীত-সন্ত্রস্ত করে তুলেছে সংগত কারণেই। এত দিন মঞ্চের বক্তৃতা, আর বিবৃতিতে পরস্পরের প্রতি হুমকি-ধমকির মধ্যে দুই দলের বাগ্যুদ্ধ সীমাবদ্ধ থাকলেও অচিরেই তা জীবন-সংহারি মল্লযুদ্ধে রূপ নেয় কি না, তা ভেবে তারা শঙ্কিত। কেননা, এ ধরনের রাজনৈতিক সংঘাত অতীতে বহু মর্মান্তিক ঘটনার জন্ম দিয়েছে এবং একই সঙ্গে তা দেশের রাজনীতি, গণতন্ত্র এবং সার্বিক অর্থনীতির জন্য বিপর্যয় ডেকে এনেছে।
সচেতন ব্যক্তিরা মনে করেন, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো, তথা এর নেতৃত্ব ‘মৌখিক গণতন্ত্রী’ না হয়ে যদি ‘মৌলিক গণতন্ত্রী’ (আইয়ুব খানের ‘মৌলিক গণতন্ত্র’ অর্থে নয়, এখানে তা ‘প্রকৃত’ অর্থে) হতেন, তাহলে অনেক সমস্যারই সমাধান হয়ে যেত। কিন্তু তা যেন হওয়ার নয়। কারণ আমাদের রাজনীতিকেরা মঞ্চে-ময়দানে গণতন্ত্রের জন্য প্রাণপাত করলেও এর মর্মার্থ উপলব্ধি করতে পারেন না।
বিএনপি বলেছে ২৮ অক্টোবর থেকে তারা আন্দোলনের যে এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছাড়বে, তা পথিমধ্যে আর কোনো স্টেশন ধরবে না, সরকার পতনের শেষ গন্তব্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত। বিএনপির সেই দ্রুতগতির ট্রেনকে সরকারি দল যদি মাঝপথে থামাতে চায়, তাহলেই সৃষ্টি হবে সংঘাত; যা কারও জন্যই মঙ্গলজনক হবে না। কিন্তু এই সর্বনাশা পরিণতির কথা তাদের বোঝাবে কে, যখন তারা একে অপরকে বধ করতে (রাজনৈতিক) দৃঢ় প্রতিজ্ঞ?
সচেতন ব্যক্তিরা তাই শঙ্কিত। তাঁরা বলছেন, দেশ ও জাতির স্বার্থে দুই পক্ষের আলোচনার টেবিলে বসা উচিত; যে পরামর্শ যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল দিয়েছে। অন্যথায় কী ঘটবে তা বোধকরি দুই দলের কারোরই জানা নেই।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক
২৮ অক্টোবর তারিখটির কথা মনে হলেই এ দেশের মানুষের হৃৎকম্প শুরু হয়। ২০০৬ সালের এই দিনে যে নৃশংস ঘটনা ঘটেছিল, সেই দুঃসহ স্মৃতি মানুষ আজও ভুলতে পারেনি। প্রাগৈতিহাসিক যুগের হিংস্রতা সেদিন দেখা গেছে এই সভ্য যুগে রাজধানী ঢাকার রাজপথে।
প্রকাশ্য দিবালোকে একদল মানুষ আরেক দল মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এক বীভৎস জিঘাংসায়। পিটিয়ে হত্যা করে লাশের ওপর একদল মানুষকে পাশবিক উল্লাসে মেতে উঠতে দেখে শিউরে উঠেছিল জাতি। শুধু রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব কিছু কিছু মানুষকে কতটা হিংস্র করে তুলতে পারে, তার নজির স্থাপিত হয়েছিল সেদিন বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর পাশের রাস্তায়। রাজনৈতিক সহিংসতার সেই উৎকট রূপ বাকরুদ্ধ করে দিয়েছিল বিবেকবোধসম্পন্ন মানুষকে। আসলে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা যখন জিঘাংসায় রূপ নেয় কেবল তখনই ঘটতে পারে অমন পাশবিক ঘটনা।
আমরা, মানে এ দেশের সাধারণ মানুষেরা রাজনীতি পছন্দ করি, দলকে সাপোর্ট করি, নিজের ভোটটি নিজে দিতে চাই। তাই বলে সেই রাজনীতি, সেই ভোট নিয়ে দলগুলো অমানবিক কর্মকাণ্ডে মেতে উঠবে তা কেউ প্রত্যাশা করে না, সমর্থন তো দূরের কথা। রাজনৈতিক কারণে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষ, মারামারি, হানাহানি মাঝেমধ্যেই ঘটে থাকে। এসব ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত হলেও অস্বাভাবিক নয়। অন্তত আমাদের দেশে। এর প্রধান কারণ রাজনৈতিক দলগুলোর অসহিষ্ণুতা। তারা পরস্পরকে প্রতিদ্বন্দ্বী না ভেবে শত্রু ভাবে। ফলে শত্রুকে নিশ্চিহ্ন করার ক্রোধ তাদের এমনভাবে আচ্ছন্ন করে, অনেক সময় তারা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
যার ফলে ২৮ অক্টোবরের মতো পিলে চমকানো তারিখের জন্ম হয়। আমি এখানে সেই ঘটনার জন্য কারা দায়ী, কারা দোষী, সে বিচার-বিশ্লেষণে যাব না। আমি মনে করি, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতালিপ্সা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি অবিশ্বস্ততা এবং জনগণের ওপর আস্থাহীনতাই এসব সংঘাত-সংঘর্ষের জন্য দায়ী। রাজনৈতিক দল তথা এর নেতৃত্বের মধ্যে যত দিন পর্যন্ত সহনশীলতা ও জনগণের রায় মেনে নেওয়ার মানসিকতা সৃষ্টি না হবে, তত দিন এ অবস্থার পরিবর্তনের আশা বাতুলতা মাত্র।
ইদানীং অনেকেই প্রশ্ন করেন, ‘ভাই, কেমন বুঝতাছেন? সবকিছু সমাধান হবে তো? নাকি আবার কোনো গাড্ডায় পড়ব আমরা?’ আসলে আমরা এ দেশের জনসাধারণ তো ‘ঘর পোড়া গরু’। পশ্চিম আকাশে লাল মেঘ দেখলেই ভয়ে কম্পমান হই। এই বুঝি আবার কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এলোমেলো করে দেয় সবকিছু! আবার বুঝি নেমে আসে কোনো ভয়াবহ দুর্যোগ জাতির ওপর। আবার বুঝি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে যৎসামান্য যে গণতন্ত্র আছে, তাও।
এই মুহূর্তে সবারই মনে প্রশ্ন, দেশে কি আরেকটি ২৮ অক্টোবর সৃষ্টি হতে যাচ্ছে? নির্বাচনকালীন সরকার প্রশ্নে সরকার ও প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দলটির যুদ্ধংদেহী অবস্থান তাদের মনে এ শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। ১৪ অক্টোবরের আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ছিল, ‘সরকার পতনের চূড়ান্ত দফা শুরু ২৮ অক্টোবর’। শিরোনামের তারিখটি দেখে অনেকেই ভ্রুকুঞ্চিত করেছেন। এর কারণ আগেই উল্লেখ করেছি। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অক্টোবরের শেষ সপ্তাহেই দাবি আদায়ে সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি।
১৮ অক্টোবর রাজধানীর সমাবেশ থেকে সেই কর্মসূচি ঘোষণা করবে দলটি। ১৬ অক্টোবর অন্য একটি পত্রিকা ‘লাগাতার কর্মসূচিতে যাচ্ছে বিএনপি’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ১৮ অক্টোবরের সমাবেশ থেকে সরকারকে কয়েক দিনের আলটিমেটাম দিয়ে কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে বিএনপি। ওই সময়ের মধ্যে দাবি না মানলে দুর্গাপূজার পর থেকেই তারা তাদের শেষ ধাপের আন্দোলন শুরু করবে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, সরকারি স্থাপনা ঘেরাওসহ হরতাল, অবরোধ, এমনকি অসহযোগের পরিকল্পনা।
এ বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পত্রিকাটিকে বলেছেন, ‘এই সরকারের সময় শেষ হয়ে গেছে। আশা করি আসন্ন দুর্গাপূজার মধ্যেই সরকার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেবে। অন্যথায় জনগণ এই সরকারের পতন ঘটাতে প্রস্তুত।’
অপরদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, ‘শাপলা চত্বর থেকে শেষ রাতে পালায়া গেল না? আরও করুণ পরিণতি হবে।’
এদিকে ১৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেছেন, ‘মহাসমাবেশ থেকে আমাদের মহাযাত্রা শুরু হবে। ...আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে অশান্তি সৃষ্টিকারী আওয়ামী লীগের পতন ঘটাব।’
একই দিনে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে অনুষ্ঠিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপির আন্দোলনের জবাব দেওয়া হবে জানিয়ে বলেছেন, ‘অবরোধ করলে পাল্টা অবরোধ। দাঁড়াতে দেব না। যারা অবরোধ দেওয়ার কথা বলছে, তারাই নির্বাচনে বাধা দেবে। তাদের বিরুদ্ধে বন্ধুরা কী ব্যবস্থা নেবে দেখব।’
দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের এমন হুমকি, পাল্টা হুমকি জনসাধারণকে ভীত-সন্ত্রস্ত করে তুলেছে সংগত কারণেই। এত দিন মঞ্চের বক্তৃতা, আর বিবৃতিতে পরস্পরের প্রতি হুমকি-ধমকির মধ্যে দুই দলের বাগ্যুদ্ধ সীমাবদ্ধ থাকলেও অচিরেই তা জীবন-সংহারি মল্লযুদ্ধে রূপ নেয় কি না, তা ভেবে তারা শঙ্কিত। কেননা, এ ধরনের রাজনৈতিক সংঘাত অতীতে বহু মর্মান্তিক ঘটনার জন্ম দিয়েছে এবং একই সঙ্গে তা দেশের রাজনীতি, গণতন্ত্র এবং সার্বিক অর্থনীতির জন্য বিপর্যয় ডেকে এনেছে।
সচেতন ব্যক্তিরা মনে করেন, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো, তথা এর নেতৃত্ব ‘মৌখিক গণতন্ত্রী’ না হয়ে যদি ‘মৌলিক গণতন্ত্রী’ (আইয়ুব খানের ‘মৌলিক গণতন্ত্র’ অর্থে নয়, এখানে তা ‘প্রকৃত’ অর্থে) হতেন, তাহলে অনেক সমস্যারই সমাধান হয়ে যেত। কিন্তু তা যেন হওয়ার নয়। কারণ আমাদের রাজনীতিকেরা মঞ্চে-ময়দানে গণতন্ত্রের জন্য প্রাণপাত করলেও এর মর্মার্থ উপলব্ধি করতে পারেন না।
বিএনপি বলেছে ২৮ অক্টোবর থেকে তারা আন্দোলনের যে এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছাড়বে, তা পথিমধ্যে আর কোনো স্টেশন ধরবে না, সরকার পতনের শেষ গন্তব্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত। বিএনপির সেই দ্রুতগতির ট্রেনকে সরকারি দল যদি মাঝপথে থামাতে চায়, তাহলেই সৃষ্টি হবে সংঘাত; যা কারও জন্যই মঙ্গলজনক হবে না। কিন্তু এই সর্বনাশা পরিণতির কথা তাদের বোঝাবে কে, যখন তারা একে অপরকে বধ করতে (রাজনৈতিক) দৃঢ় প্রতিজ্ঞ?
সচেতন ব্যক্তিরা তাই শঙ্কিত। তাঁরা বলছেন, দেশ ও জাতির স্বার্থে দুই পক্ষের আলোচনার টেবিলে বসা উচিত; যে পরামর্শ যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল দিয়েছে। অন্যথায় কী ঘটবে তা বোধকরি দুই দলের কারোরই জানা নেই।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে