হোমনা উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) মধ্যে ৯টিতেই চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনে লড়ছেন। তাঁরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আপর দিকে বিএনপি সরাসরি নির্বাচনে না এলেও আটটি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দলটির আট নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ১ নম্বর মাথাভাঙা ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান নাজিরুল হক ভূঁইয়া, দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী যুবলীগ নেতা স্বপন খান ও বিএনপি নেতা সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে স্বপন খানের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। তবে এ ব্যাপারে তিনি আপিল করতে পারবেন।

২ নম্বর ঘাগুটিয়া ইউপিতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ইকবাল হোসেন রনি দলটির মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচন করছেন। এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী দুজন। ছাত্রলীগ নেতা ইউনুছ মিয়া স্বাধীন ও বর্তমান চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম গণি। এ ছাড়া বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আমান উল্লাহ মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

৩ নম্বর দুলালপুর ইউপিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিন সওদাগর, ছাত্রলীগ নেতা সজীব রানা ও আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছেন।

৪ নম্বর চান্দেরচর ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সহসভাপতি মো. মোজাম্মেল হক মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেব রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল বাশার মোল্লা। এ ছাড়া বিএনপির আবদুল কুদ্দুস মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

৫ নম্বর আছাদপুর ইউপিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ছিদ্দিকুর রহমান, বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও কৃষক লীগ নেতা জালাল উদ্দিন পাঠান ও বিএনপির সাবেক চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

৬ নম্বর নিলখী ইউপিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন খন্দকার ও বিদ্রোহী প্রার্থী যুবলীগ নেতা মো. লাখ মিয়া মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

৭ নম্বর ভাষানিয়া ইউপিতে আবদুল আউয়াল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে লড়ছেন। এখানে তিনজন বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি কামরুল ইসলাম, সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা মো. কামরুজ্জামান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক সাদেক হোসেন সরকার মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ ছাড়া বিএনপির সাবেক চেয়ারম্যান আবু নাসের ওয়াহেদও মাঠে রয়েছেন।

৮ নম্বর ঘাড়মোড়া ইউপিতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এ কে এম মনিরুজ্জামান, বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতা মর্তুজা হাসান ও মৎস্যজীবী লীগ নেতা মোস্তফা কামাল এবং বিএনপির বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান মোল্লা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

৯ নম্বর জয়পুর ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান তাইজুল ইসলাম মোল্লা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে লড়ছেন। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন ধনু।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে সাংসদ সেলিমা আহমাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে আহ্বান করা হবে। আমরা আশাবাদী তাঁরা সরে যাবেন।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আরও বলেন, ‘আমরা নৌকার পক্ষে কাজ করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী করব।’

আগামী ২৮ নভেম্বর এসব ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ভোট অনুষ্ঠিত হবে।