রাহুল শর্মা, ঢাকা
মাধ্যমিক স্তরের এক শিক্ষক অবসরে গেছেন ২০২০ সালে। অবসরকালীন আর্থিক সুবিধার আশায় তিনি চাকরিরত অবস্থায় নিয়মিত চাঁদা দিয়েছেন। কিন্তু অবসর নেওয়ার পর তিন বছর হতে চললেও তিনি প্রাপ্য আর্থিক সুবিধা পাননি। এর জন্য তহবিল সংকটের অজুহাত দেখানো হচ্ছে। আর তহবিল সংকট কাটাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বছরে প্রায় ২২১ কোটি টাকা তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিছু ক্ষেত্রে এ বাবদ ফি নেওয়াও শুরু হয়েছে।
শিক্ষাবিদেরা বলছেন, শিক্ষকদের অবসর ও কল্যাণ সুবিধা পরিশোধ করার দায় রাষ্ট্রের। এ জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি নেওয়া অনৈতিক।
এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ১৯৯০ সাল থেকে কল্যাণ ট্রাস্টের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ২০০৫ সাল থেকে শুরু হয়েছে অবসর সুবিধা দেওয়া। এই দুই সুবিধা বাবদ শিক্ষকেরা চাকরিকাল অনুযায়ী এককালীন অর্থ পান। আইন অনুযায়ী, শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও (বেতনের সরকারি অংশ) থেকে চাঁদা হিসাবে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণে অর্থ কেটে রাখা হয়। এর মধ্যে অবসর সুবিধা বোর্ড ৬ শতাংশ এবং কল্যাণ ট্রাস্ট ৪ শতাংশ পায়। এর বাইরে বিশেষ বা থোক বরাদ্দ এবং বিভিন্ন সময়ে সরকারের দেওয়া সিড মানি বা গচ্ছিত অর্থের লভ্যাংশ পায় সংস্থা দুটি।
তহবিল সংকট কাটাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি নেওয়ার কথা জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি পদাধিকারবলে অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান। নেহাল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তহবিল সংকটের কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষকদের আবেদনগুলো পেন্ডিং (অনিষ্পন্ন) থাকে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা ফি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
বছরে ২২১ কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনা
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, মাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত প্রায় ২ কোটি ২১ লাখ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০০ টাকা করে বছরে প্রায় ২২১ কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ওই টাকা দিয়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড এবং বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের তহবিল সংকট মেটানো হবে।
সূত্রমতে, বছরে কত টাকা তোলা যাবে, এর খসড়া হিসাবও করেছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড। ওই হিসাবে দেখা যায়, ষষ্ঠ থেকে মাস্টার্স শ্রেণির ১ কোটি ৭৫ লাখ ৯৩ হাজার ৫২২ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ভর্তির সময় ১০০ টাকা করে নেওয়া হলে বছরে সম্ভাব্য আয় হবে ১৭৫ কোটি ৯৩ লাখ ৫২ হাজার ২০০ টাকা। এর বাইরে এসএসসি, এইচএসসি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোতে স্নাতক (পাস), স্নাতক (সম্মান) ও মাস্টার্স পর্যায়ে ৪৫ লাখ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ফরম পূরণ থেকে ৪৫ কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনা আছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার জানান, চলতি বছর শিক্ষা বোর্ডগুলো একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সময় ১০০ টাকা করে নিয়েছে। নিজ নিজ বোর্ডের হিসাবে তা জমা আছে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, তহবিল সংকটের কারণে অবসরের পর বেসরকারি শিক্ষকেরা যথাসময়ে প্রাপ্য আর্থিক সুবিধা পান না। এই সংকট কাটাতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। শিগগির তা হস্তান্তর করা হবে। এসএসসি ও এইচএসসির ফরম পূরণের সময় এ খাতে ১০০ টাকা করে নেওয়ার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
জানা যায়, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেণির ভর্তির নীতিমালায়ও অবসর সুবিধা ফি নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। চলতি বছরই ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তির সময় এই ফি নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চলতি বছর ভর্তির সময় ১০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে।
তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান জানান, এ ধরনের কোনো প্রস্তাব এখনো পাননি। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিষয়টি আমার নলেজে নেই।’
অবসর সুবিধা বোর্ডের ৬০তম সভার কার্যবিবরণীতেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহের বিষয়টি উল্লেখ আছে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ব্যানবেইসে অনুষ্ঠিত সেই সভায় সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান। সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়, ‘মাধ্যমিক ও এমপিওভুক্ত সংযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের রেজিস্ট্রেশনের সময় অবসর ও কল্যাণের জন্য কর্তনকৃত বার্ষিক ১০০ টাকার মোট টাকা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ থেকে বোর্ড অথবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে কালেকশন এবং জমাকৃত মোট টাকার ৪ ভাগের ৩ ভাগ অবসর সুবিধা বোর্ডের জন্য বাকি ১ ভাগ কল্যাণ ট্রাস্টের ফান্ডে জমাকরণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।’
এ বিষয়ে জানতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খানকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। পরে এসএমএস পাঠালেও তিনি সাড়া দেননি।
৬১ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর আবেদন ঝুলছে
জানা যায়, তহবিল সংকটের কারণে প্রায় ৬১ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর অবসর ও কল্যাণ সুবিধার আবেদন নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না। এগুলোর মধ্যে ৩৮ হাজার অবসর সুবিধা বোর্ডের এবং ২৩ হাজার কল্যাণ ট্রাস্টের।
এ প্রসঙ্গে অবসর সুবিধা বোর্ডের সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী আজকের পত্রিকাকে বলেন, তহবিল সংকটের কারণে শিক্ষক-কর্মচারীদের পাওনা যথাসময়ে পরিশোধ করা যাচ্ছে না। তবে আগে এ জট আরও দীর্ঘ ছিল। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর জট অনেকটা কমিয়ে এনেছি।’
তবে দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব শাহজাহান আলম সাজুর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
অনৈতিক বলছেন শিক্ষাবিদেরা
শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিক্ষকদের অবসরের পর প্রাপ্য সুবিধা অবশ্যই যথাসময়ে দিতে হবে। তহবিল সংকটের কথা বলে এ ক্ষেত্রে গড়িমসি অনুচিত, এটা বড় অন্যায়। প্রয়োজনে বড় প্রকল্প বন্ধ করে হলেও শিক্ষকদের প্রাপ্য আর্থিক সুবিধা দ্রুত দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘এর (তহবিল সংকট) নাম করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এভাবে টাকা তোলা অন্যায়। একটা অন্যায় বিহিত করার জন্য আরেকটা অন্যায় করা উচিত নয়। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো ক্রমেই ফি নেওয়া যাবে না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন বলেন, ‘এ খাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া অনৈতিক। এটা কখনোই নেওয়া উচিত নয়। এটা সরকারের দায়; কারণ, সরকার অর্থ দিতে কমিটেড। তাহলে এর দায় কেন শিক্ষার্থীরা বহন করবে? এর ফলে সরকারের দায় শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে।’
অধ্যাপক কামরুল হাসান আরও বলেন, ‘শিক্ষকদের বিষয় এলে সরকার নানা টালবাহানা শুরু করে। তখন তহবিল সংকটসহ নানা সমস্যা শুরু হয়। অন্য সরকারি কর্মকর্তাদের বেলায় তো এমন হয় না।’
মাধ্যমিক স্তরের এক শিক্ষক অবসরে গেছেন ২০২০ সালে। অবসরকালীন আর্থিক সুবিধার আশায় তিনি চাকরিরত অবস্থায় নিয়মিত চাঁদা দিয়েছেন। কিন্তু অবসর নেওয়ার পর তিন বছর হতে চললেও তিনি প্রাপ্য আর্থিক সুবিধা পাননি। এর জন্য তহবিল সংকটের অজুহাত দেখানো হচ্ছে। আর তহবিল সংকট কাটাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বছরে প্রায় ২২১ কোটি টাকা তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিছু ক্ষেত্রে এ বাবদ ফি নেওয়াও শুরু হয়েছে।
শিক্ষাবিদেরা বলছেন, শিক্ষকদের অবসর ও কল্যাণ সুবিধা পরিশোধ করার দায় রাষ্ট্রের। এ জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি নেওয়া অনৈতিক।
এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ১৯৯০ সাল থেকে কল্যাণ ট্রাস্টের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ২০০৫ সাল থেকে শুরু হয়েছে অবসর সুবিধা দেওয়া। এই দুই সুবিধা বাবদ শিক্ষকেরা চাকরিকাল অনুযায়ী এককালীন অর্থ পান। আইন অনুযায়ী, শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও (বেতনের সরকারি অংশ) থেকে চাঁদা হিসাবে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণে অর্থ কেটে রাখা হয়। এর মধ্যে অবসর সুবিধা বোর্ড ৬ শতাংশ এবং কল্যাণ ট্রাস্ট ৪ শতাংশ পায়। এর বাইরে বিশেষ বা থোক বরাদ্দ এবং বিভিন্ন সময়ে সরকারের দেওয়া সিড মানি বা গচ্ছিত অর্থের লভ্যাংশ পায় সংস্থা দুটি।
তহবিল সংকট কাটাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি নেওয়ার কথা জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি পদাধিকারবলে অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান। নেহাল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তহবিল সংকটের কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষকদের আবেদনগুলো পেন্ডিং (অনিষ্পন্ন) থাকে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা ফি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
বছরে ২২১ কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনা
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, মাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত প্রায় ২ কোটি ২১ লাখ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০০ টাকা করে বছরে প্রায় ২২১ কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ওই টাকা দিয়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড এবং বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের তহবিল সংকট মেটানো হবে।
সূত্রমতে, বছরে কত টাকা তোলা যাবে, এর খসড়া হিসাবও করেছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড। ওই হিসাবে দেখা যায়, ষষ্ঠ থেকে মাস্টার্স শ্রেণির ১ কোটি ৭৫ লাখ ৯৩ হাজার ৫২২ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ভর্তির সময় ১০০ টাকা করে নেওয়া হলে বছরে সম্ভাব্য আয় হবে ১৭৫ কোটি ৯৩ লাখ ৫২ হাজার ২০০ টাকা। এর বাইরে এসএসসি, এইচএসসি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোতে স্নাতক (পাস), স্নাতক (সম্মান) ও মাস্টার্স পর্যায়ে ৪৫ লাখ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ফরম পূরণ থেকে ৪৫ কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনা আছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার জানান, চলতি বছর শিক্ষা বোর্ডগুলো একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সময় ১০০ টাকা করে নিয়েছে। নিজ নিজ বোর্ডের হিসাবে তা জমা আছে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, তহবিল সংকটের কারণে অবসরের পর বেসরকারি শিক্ষকেরা যথাসময়ে প্রাপ্য আর্থিক সুবিধা পান না। এই সংকট কাটাতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। শিগগির তা হস্তান্তর করা হবে। এসএসসি ও এইচএসসির ফরম পূরণের সময় এ খাতে ১০০ টাকা করে নেওয়ার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
জানা যায়, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেণির ভর্তির নীতিমালায়ও অবসর সুবিধা ফি নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। চলতি বছরই ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তির সময় এই ফি নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চলতি বছর ভর্তির সময় ১০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে।
তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান জানান, এ ধরনের কোনো প্রস্তাব এখনো পাননি। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিষয়টি আমার নলেজে নেই।’
অবসর সুবিধা বোর্ডের ৬০তম সভার কার্যবিবরণীতেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহের বিষয়টি উল্লেখ আছে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ব্যানবেইসে অনুষ্ঠিত সেই সভায় সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান। সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়, ‘মাধ্যমিক ও এমপিওভুক্ত সংযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের রেজিস্ট্রেশনের সময় অবসর ও কল্যাণের জন্য কর্তনকৃত বার্ষিক ১০০ টাকার মোট টাকা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ থেকে বোর্ড অথবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে কালেকশন এবং জমাকৃত মোট টাকার ৪ ভাগের ৩ ভাগ অবসর সুবিধা বোর্ডের জন্য বাকি ১ ভাগ কল্যাণ ট্রাস্টের ফান্ডে জমাকরণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।’
এ বিষয়ে জানতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খানকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। পরে এসএমএস পাঠালেও তিনি সাড়া দেননি।
৬১ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর আবেদন ঝুলছে
জানা যায়, তহবিল সংকটের কারণে প্রায় ৬১ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর অবসর ও কল্যাণ সুবিধার আবেদন নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না। এগুলোর মধ্যে ৩৮ হাজার অবসর সুবিধা বোর্ডের এবং ২৩ হাজার কল্যাণ ট্রাস্টের।
এ প্রসঙ্গে অবসর সুবিধা বোর্ডের সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী আজকের পত্রিকাকে বলেন, তহবিল সংকটের কারণে শিক্ষক-কর্মচারীদের পাওনা যথাসময়ে পরিশোধ করা যাচ্ছে না। তবে আগে এ জট আরও দীর্ঘ ছিল। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর জট অনেকটা কমিয়ে এনেছি।’
তবে দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব শাহজাহান আলম সাজুর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
অনৈতিক বলছেন শিক্ষাবিদেরা
শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিক্ষকদের অবসরের পর প্রাপ্য সুবিধা অবশ্যই যথাসময়ে দিতে হবে। তহবিল সংকটের কথা বলে এ ক্ষেত্রে গড়িমসি অনুচিত, এটা বড় অন্যায়। প্রয়োজনে বড় প্রকল্প বন্ধ করে হলেও শিক্ষকদের প্রাপ্য আর্থিক সুবিধা দ্রুত দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘এর (তহবিল সংকট) নাম করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এভাবে টাকা তোলা অন্যায়। একটা অন্যায় বিহিত করার জন্য আরেকটা অন্যায় করা উচিত নয়। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো ক্রমেই ফি নেওয়া যাবে না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন বলেন, ‘এ খাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া অনৈতিক। এটা কখনোই নেওয়া উচিত নয়। এটা সরকারের দায়; কারণ, সরকার অর্থ দিতে কমিটেড। তাহলে এর দায় কেন শিক্ষার্থীরা বহন করবে? এর ফলে সরকারের দায় শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে।’
অধ্যাপক কামরুল হাসান আরও বলেন, ‘শিক্ষকদের বিষয় এলে সরকার নানা টালবাহানা শুরু করে। তখন তহবিল সংকটসহ নানা সমস্যা শুরু হয়। অন্য সরকারি কর্মকর্তাদের বেলায় তো এমন হয় না।’
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে