পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশা উপজেলার যাতায়াত ব্যবস্থা নাজুক। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সরকার শিগগিরই উড়াল সেতুর কাজ করবে। ৩২শ কোটি টাকা ব্যয়ে এই উড়াল সড়ক হবে। এতে হাওরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের দুর্ভোগ অনেকটা কমে আসবে।’

গতকাল রোববার সকাল ১০টায় সুনামগঞ্জ জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় তিনি এ কথা বলেন। জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে এ সভা হয়। এতে অক্টোবর মাসে জেলায় ঘটে যাওয়া অপরাধ এবং তাহিরপুর উপজেলার জাদুকাটা-১ পাথর মিশ্রিত বালুমহালের জায়গা সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে আলোচনা হয়।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, ‘বর্তমানে গ্রাম আর শহরের মধ্যে কোনো বিভাজন নেই। ভবিষ্যতেও কোনো বিভাজন না থাকে সে জন্য সরকার গ্রামীণ উন্নয়নে বেশি কাজ করছে। সুনামগঞ্জ থেকে ঢাকা যেতে এখন পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা সময় লাগে। এই সময়টা কমিয়ে আনার জন্য সড়কের কাজ করবে সরকার।’

এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সার্বিক আলোচনা করা হয় আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায়। এতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন সভাপতিত্ব করেন।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

তাহিরপুরের জাদুকাটা-১ বালু মহালের জায়গা সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে ইজারাকৃত অংশে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বালু উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এ বিষয়ে বক্তব্য দেন তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হানুল কবির। তিনি বলেন আমরা সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে ইজারাকৃত জায়গা নির্ধারণ করে দিয়েছি। ছোট একটা মহাল এর মধ্যে ৫০০ গজ ছেড়ে দিলে অবশিষ্ট কিছুই থাকে না।

জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ইজারাদারদের অধিকার যাতে সুরক্ষিত থাকে সেটা আমাদের দেখতে হবে।’ এ সময় তিনি বিজিবির সদস্যদের আহ্বান জানান যাতে ইজারাদারেরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

সভায় উপস্থিত বিজিবির অধিনায়কের প্রতিনিধি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘প্রথমে ইজারাদার আমরা কোনো বাধা দিইনি। কিন্তু সম্প্রতি কিছু পরিস্থিতির কারণে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশেই সীমান্ত এলাকায় বালু তুলতে বাধা দিয়েছি। তবুও আমরা বিষয়টি নিয়ে আবারও ঊর্ধ্বতন মহলে কথা বলব।’

সভায় টাঙ্গুয়ার হাওরে জীববৈচিত্র্য রক্ষা বিষয়েও আলোচনা করা হয়। জেলা পুলিশের তথ্য মতে গত অক্টোবর মাসে দস্যুতার ঘটনা ঘটেছে একটি, চুরি আটটি, খুন চারটি, মাদকদ্রব্য আটকের মামলা ৩০টি, চোরাচালান আটটি, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা পাঁচটি যৌতুকের মামলা চারটি।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন—পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বিপিএম, সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত, ডিডি এলজি মোহাম্মদ জাকির হোসেন, এন এস আই ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, র‍্যাব অধিনায়ক সিঞ্চন আহমেদ প্রমুখ।