বরাদ্দের আগেই প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য প্রার্থীরা। নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী আগামী ১১ নভেম্বর এই উপজেলায় ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার কথা ছিল গতকাল বুধবার।

গত ১৭ অক্টোবর উপজেলার সাতটি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ৩৩ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৬১ এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৯২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। কিন্তু প্রতীক বরাদ্দ না হওয়ার আগেই প্রতীকসহ পোস্টার, প্রচারপত্র বের করে প্রচার শুরু করেছেন তাঁরা। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও দৃষ্টি আকর্ষণ করে পোস্ট করেছেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক প্রতীক বরাদ্দের পূর্বে প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা আচরণবিধি লঙ্ঘন তবুও প্রার্থীরা এক সপ্তাহ ধরে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। চলছে উঠোন বৈঠক, সভা সমাবেশও। সাধারণ ভোটারেরা মোবাইল ফোনে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলী হোসেনের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন। কিন্তু এরপরও আচরণবিধি ভঙ্গ করে নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ হয়নি।

বাংলাবান্ধা ইউপিতে আওয়ামী লীগদলীয় প্রার্থী মাহাবুবুল আলম মিলন, স্বতন্ত্র প্রার্থী কুদরত ই খুদা মিলন, ভজনপুর ইউপিতে আওয়ামী লীগদলীয় প্রার্থী হারুন উর রশিদ লিটন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোকসেদ আলী, তিরনইহাট ইউপিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী আলমগীর হোসাইন, বুড়াবুড়ি ইউপির আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী শেখ কামাল, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. তারেক হোসেন ও মো. রবিউল ইসলাম, শালবাহানহাট ইউপিতে আওয়ামী লীগদলীয় প্রার্থী মো. আশরাফুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মতিয়ার রহমান, দেবনগর ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আবু কালাম আজাদ ডাবলু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মহসিন উল হকের প্রচার প্রচারণা দেখা গেছে।

প্রতীক না পেলেও ব্যক্তিগত পছন্দের প্রতীক নিয়ে প্রচারণা চালানোর কথা স্বীকার করেছেন প্রার্থীরা। তবে কেউ কেউ বলছেন প্রার্থীদের পক্ষে সাধারণ ভোটাররা প্রচার-প্রচারণা করছেন। ইউপি চেয়ারম্যানদের প্রার্থী ছাড়াও ইউপি সদস্যরাও প্রতীক নিয়ে প্রচার চালিয়ে আসছেন।

তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলী হোসেন বলেন, সাধারণ ভোটারদের কাছ থেকে এ ধরনের কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা ফেসবুক থেকে প্রতীকসংবলিত পোস্টার মুছে ফেলতে প্রার্থীদের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। প্রতীক বরাদ্দের আগে এ ধরনের প্রচারণা নিষিদ্ধ। আচরণবিধিতে এই নির্দেশনা দেওয়া আছে যে প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো প্রার্থী প্রচারণা করতে পারবেন না। আমার কাছে যে অভিযোগগুলো এসেছে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছি।

তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন সময়ে আমার চোখে পড়া এ ধরনের প্রচারণার জন্য আমি সতর্ক করেছি এবং ব্যবস্থা নিয়েছি।

তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তেঁতুলিয়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদে আগামী ১১ নভেম্বর ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এখানে মোট ভোটার ৯৭ হাজার ২২৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪৮ হাজার ৭১৬ জন ও নারী ভোটার ৪৮ হাজার ৫১১ জন।