Ajker Patrika

নিষেধাজ্ঞার সময় কিস্তির চাপ মাছ ধরে গুনছেন জরিমানা

লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২২, ১৩: ৫৯
নিষেধাজ্ঞার সময় কিস্তির চাপ মাছ ধরে গুনছেন জরিমানা

নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরায় দুই মাস নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। এতে বেকার ভোলার লালমোহন উপজেলার জেলেরা ঋণের টাকা শোধ করতে পড়েছেন বিপাকে। বাধ্য হয়ে লুকিয়ে নদীতে মাছ ধরতে যাচ্ছেন। প্রশাসনের হাতে ধরা পড়ে গুনছেন জরিমানা। ভোগ করছেন কারাদণ্ড। এদিকে নিষেধাজ্ঞা ১৪ দিন পেরিয়ে গেলেও পুনর্বাসনের চাল পাননি জেলেরা। ফলে পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি নিষেধাজ্ঞার সময় বন্ধ রাখতে সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জেলেদের। তবে উপজেলা মৎস্য অফিসের দাবি, জেলেরা লিখিত দিলে ব্যবস্থা নেবে। আর জেলেদের পুনর্বাসনের চাল ইউনিয়ন পরিষদে পৌঁছে গেছে। দ্রুতই তাঁরা চাল পাবেন।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নদীতে মাছ ধরায় এ পর্যন্ত ১৭ জনকে আটক করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এদের মধ্যে দুজনকে এক বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিনজন ‘অপ্রাপ্তবয়স্ক’ হওয়ায় মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি ১২ জনকে ৫ হাজার টাকা করে মোট ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

উপজেলার গজারিয়া খাল গোড়া মৎস্যঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে অলস সময় কাটাচ্ছেন জেলেরা। কেউ জাল বুনছেন আবার কেউবা নৌকা-ট্রলার মেরামত করছেন।

জেলে আবদুল মোকশেদ বলেন, ‘মাছ ধরা বন্ধ। উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। কীভাবে সংসার চালাব, সে চিন্তায় দিশেহারা। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) কিস্তির টাকাও দিতে পারছি না। দুই মাসের জন্য কিস্তি আদায় বন্ধ হলে আমাদের জন্য ভালো হতো।’

মো. ইয়াছিন বলেন, ‘আমরা নদীর কাজ জানি, অন্য কাজ জানি না। তাই কেউ অন্য কাজেও নিতে চান না। খেতখামারেও কাজ পাচ্ছি না। একদিকে আয়-রোজগার বন্ধ, অন্যদিকে ঋণের দেনায় জর্জরিত। সব মিলিয়ে চরম বিপাকে। পুনর্বাসনের চালও পাচ্ছি না। ফলে বাধ্য হয়ে অনেকে পেটের দায়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরতে যাচ্ছেন। ধরা পড়লে কারাভোগ করছেন, জরিমানা গুনছেন।’

গজারিয়া খাল গোড়া মৎস্যঘাটের জেলে মো. মনির জানান, মাছ ধরে যে আয় হতো, তা দিয়ে সংসার চলত। মাছ ধরা বন্ধের সময় চাল দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনো সেই চাল পাইনি। কবে পাব তা-ও জানি না।’

গজারিয়া খাল গোড়া মৎস্যঘাটের আড়তদার খোকন মাতব্বর জানান, এ ঘাটে এক হাজারের বেশি জেলে রয়েছে। সবাই দেনায় জর্জরিত। তাঁদের মতো আড়তদারদেরও ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রুহুল কুদ্দুছ বলেন, ‘উপজেলার নিবন্ধিত ২৩ হাজার জেলের মধ্যে ১১ হাজারের জন্য ৮০ কেজি করে চাল এসেছে। চাল ইউনিয়ন পরিষদে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত তা বিতরণের জন্য বলা হয়েছে।’

এদিকে লালমোহনে ৫০ হাজারের বেশি জেলে থাকলেও নিবন্ধনের আওতায় এসেছেন ২৩ হাজার। বাকি ১২ হাজার জেলে চাল থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া ইরানি নারী এখন পানামার জঙ্গলে

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত