এ সময়ের আলোচিত শিশুশিল্পীরা

প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২২, ০৬: ৩১
আপডেট : ১৮ আগস্ট ২০২২, ০৮: ৪৭

জাতীয় পুরস্কার পাওয়া শিশুশিল্পী
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে শিশুশিল্পী হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে অনেকেই। তাঁরা হলেন আদনান, আজাদ রহমান শাকিল, সুমন, ইলোরা গহর, আজাদ রহমান শাকিল, বিন্দী হুসাইন, আঁখি আলমগীর, জয়, কামরুন্নাহার আজাদ স্বপ্না, রাসেল, তুষার, দোদুল, বেবি সিমী, অনিক, শিলা আহমেদ, তন্ময়, অরুণ সাহা, নিশি, রাসেল ফরায়েজী, প্রিয়াংকা, অমল, হৃদয় ইসলাম, প্রার্থনা ফারদিন দিঘী, সৈয়দা ওয়াহিদা সাবরীনা, সেমন্তী, মামুন, স্বচ্ছ, আবির হোসেন অংকন, যারা যারিব, সাঁঝবাতি প্রমুখ। এদের অনেকেই এখন আর অভিনয়ে নেই।

শিশু থেকে বড় তারকা
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিশুশিল্পী আঁখি আলমগীর এখন বড় গায়িকা। তিশাও খ্যাতিমান অভিনেত্রী। সাবরিনা সাকা মিম বড় হয়ে অভিনয়ে আর নিয়মিত নেই। একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে সংবাদ উপস্থাপনায় দেখা যায় প্রায়ই। ইলোরা গহরও এখনো অভিনয়ে নিয়মিত। বাণিজ্যিক সিনেমায় বেশ আলোচিত নাম দিঘী। তারকা দম্পতি দোয়েল ও সুব্রত তনয়া দীঘি  গ্রামীণফোনের ‘ময়নাপাখি’ বিজ্ঞাপন দিয়ে রাতারাতি তারকাখ্যাতি অর্জন করেছিলেন। এরপর শিশুশিল্পী হিসেবে একের পর এক সিনেমায় অভিনয় করেছেন দীঘি। এখন তিনি পুরোদস্তুর নায়িকা। ‘দীপু নাম্বার টু’ শিশুতোষ চলচ্চিত্রের দুষ্টু ছেলে তারেক চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছিলেন শুভাশীষ রায়। তিনি এখন পরিচালক। স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা নির্মাণ করেছেন শুভাশিষ। ‘রিন ওয়াশিং পাউডার’-এর বিজ্ঞাপন দিয়ে আলোচনায় আসা পূজা চেরি এখন প্রথম সারির নায়িকা। 

পুরস্কার সিনেমায় মাস্টার শাকিলকোথায় গেলেন তাঁরা?
১৯৮০ সালে মুক্তি পায় ‘ছুটির ঘণ্টা’। স্কুলের বাথরুমে আটকা পড়ে নির্মম মৃত্যুর শিকার হওয়া গল্পের সেই খোকন বা মাস্টার সুমনকে আজও ভোলেনি দর্শকেরা। তার আরেকটি আলোচিত সিনেমা ‘অশিক্ষিত’। সুমন এখন আমেরিকাপ্রবাসী। তিনি বলেন, ‘১৯৮৮ সালে টিনেজ নায়ক হিসেবে মুক্তি পায় আমার সর্বশেষ সিনেমা ‘‘রাম রহিম জন’’। সেই সময় একটা অনুষ্ঠানের জন্য আমেরিকা যাই। উদ্দেশ্য ছিল ফিরে আসব। কিন্তু আত্মীয় বন্ধুবান্ধবের অনুরোধে ওখানেই থেকে গেলাম।’

আইরিন পারভীন লোপা বহু সিনেমায় নায়িকার ছোটবেলার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। বর্তমানে শিল্পকলা একাডেমিতে কর্মরত। তিনি বলেন, ‘আমি নাট্যকলার ওপর ভারত সরকারের একটা বৃত্তি পেয়ে সেখানে চলে গিয়েছিলাম। ওখানে অনার্স, মাস্টার্স ও পিএইচডি করি। এখন নাটকের সঙ্গেই যুক্ত আছি বাংলাদেশে।’

১৯৭৮ সালে সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘ডুমুরের ফুল’ সিনেমায় প্রথম অভিনয় করেন শাকিল। এ সিনেমা থেকেই তাঁর দর্শকপ্রিয়তার শুরু। তিনবার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন। তিনি এখন একজন পরিণত মানুষ। ১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত খান আতাউর রহমান পরিচালিত শেষ সিনেমা ‘এখন অনেক রাত’ শাকিলেরও শেষ সিনেমা। ব্যবসা নিয়েই আছেন তিনি। অবসরে গানবাজনা করেন। নিজে লেখেন, নিজেই সুর দেন, নিজেই কণ্ঠ দেন।

মোহনা মাহাজাবীনএ সময়ের আলোচিত শিশুশিল্পীরা
এ সময় শিশুশিল্পী হিসেবে আলোচনায় আছে আফরীন শিখা রাইসা। ২০১৯ সালে ‘যদি একদিন’ সিনেমায় তাহসানের মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করে পেয়েছে জাতীয় পুরষ্কার। রাইসা এখন অস্টম শ্রেণিতে পড়ে। ২০১৪ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মিত একটি বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছিল রাইসা। ছোট্ট রাইসার বিলবোর্ড হয়েছিল পুরো দেশজুড়ে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত নাটকে নিয়মিত অভিনয় করছে রাইসা।

শরিফুলের ‘বেসম্ভব ঠান্ডা’ আর ‘অয়েল ইয়ুর ওন মেশিন’-এর মতো সংলাপ বেশ জনপ্রিয়তা পায়। রবির বিজ্ঞাপনচিত্রের আলোচিত শিশুশিল্পী শরিফুল ইসলামকে এখন অনেক নাটকেই দেখা যায়। আয়নাবাজি সিনেমায়ও অভিনয় করেছে শরিফুল। জনপ্রিয় অভিনেতা আবদুল কাদেরের নাতনি সিমরিন লুবাবা। মাত্র ১০ বছর বয়সেই শিশুশিল্পী হিসেবে লুবাবার জনপ্রিয়তা তৈরি হয়েছে। নানা রকম বিজ্ঞাপনে নিয়মিতই দেখা যায় তাকে। কাজ করছে চলচ্চিত্রেও। ‘৫৭০’,‘ রিকশা গার্ল’, ‘নেত্রী দ্য লিডার’সহ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছে সে।

শরিফুল ইসলামবরেণ্য প্রযোজক হাবিবুর রহমানের নাতনি সাঁঝবাতি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এই শিল্পী ‘শঙ্খচীল’ সিনেমায় প্রসেনজিতের মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছে। বর্তমানে পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত। মাঝেমধ্যে বিজ্ঞাপনে দেখা যায় তাকে।বিটিভিতে ‘ছোবল’ নাটক দিয়ে মিডিয়ায় যাত্রা শুরু মোহনা মাহাজাবীনের। ২০টির বেশি বিজ্ঞাপনে কাজ করেছে এরই মধ্যে। দুরন্ত টিভির ‘মনের জাদুঘর’ ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করেও নাম কামিয়েছে। ‘পরাণ’ সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে।

প্রথম শ্রেণিতে থাকতেই অভিনয়ে আসে ইরফান মোর্শেদ খান সামির। ‘বড় ছেলে’ নাটকে এবং ‘পোড়ামন-২’ সিনেমাতে শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করেছে। এখন নিয়মিত নাটক, বিজ্ঞাপনচিত্র ও সিনেমায় কাজ করছে সে। ইমেল হকের টেলিফিল্ম ‘মায়া ও মমতার গল্প’-তে অভিনয় করে তাক লাগিয়েছে চটপটে আরিয়া অরিত্র। মাত্র পাঁচ বছর বয়স থেকেই নাটক, বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় করছে। ‘জানোয়ার’ ওয়েব ফিল্মের প্রশংসিত বাচ্চা মেয়েটিই অরিত্র।

আদনান আল রাজীবের ‘বিকালবেলার পাখি’ নাটকটিতে অভিনয় করে তাক লাগায় সাফানা নমনী। শতাধিক বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হয়েছে। অভিনয় করেছে ‘পোড়ামন ২’ সিনেমায়। ইতিমধ্যে পাঁচ শতাধিক পর্ব প্রচার হওয়া ‘মাশরাফি জুনিয়র’ ধারাবাহিকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছে সে। চলচ্চিত্র নির্মাতা আবু শাহেদ ইমনের ‘গোল্ডেন এ প্লাস’ নাটকে ব্যাপক প্রশংসিত হয় অনিন্দ্য। অনিন্দ্য এর আগে অভিনয় করেছে পরিচালক বিজনের ‘মাটির প্রজার দেশে’ চলচ্চিত্রে। বিজ্ঞাপন ও নাটক দুই মাধ্যমেই সমানতালে অভিনয় করছে অনিন্দ্য।

রাইসাএই সময়ের আলোচিত ফুটফুটে শিশুশিল্পী মুনতাহা এমেলিয়া। শোবিজের প্রায় সব তারকার সঙ্গেই অসংখ্য নাটক ও বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করেছে সে। ওয়েব ফিল্ম ‘বিলাপ’-এ তার অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে। অভিনয় করেছে একাধিক ধারাবাহিক ও সিনেমায়। নাফিসা জাহান মৌমি অসংখ্য নাটক, মিউজিক ভিডিও, বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্রে কাজ করেছে। দীপ্ত টিভিতে মোস্তফা মননের ‘গ্যাংস্টার গণি ভাই’ ধারাবাহিকে, অমিতাভ রেজার সিনেমা ‘রিকশাগার্ল’ ও রায়হান জুয়েলের ‘অ্যাডভেঞ্জার অব সুন্দরবন’-এ অভিনয় করেছে মৌমি। মৌমি অভিনয়, গান, নাচ, আর্ট—সর্বগুণে পারদর্শী।

দুরন্ত টিভির ‘গিরগিটি’তে অভিনয় করে সবার প্রশংসা কুড়ায় তূর্য। কাজ করেছে বেশ কিছু বিজ্ঞাপন ও নাটকে। তানভীর মোকাম্মেলের ‘রূপসা নদীর বাঁকে’, ইস্পাহানী আরিফ জাহানের ‘হৃদিতা’, সাইফ চন্দনের ‘আব্বাস’ সিনেমায় অভিনয় করেছে। তূর্যর হাতে রয়েছে আরও বেশ কিছু চলচ্চিত্র।অভিনয় ও মডেলিংয়ে এখন বেশ পরিচিত মুখ রিজওয়ান রোহান। রোহান অনেক নাটক ও বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করেছে। অভিনয় করেছে ‘চিরঞ্জীব মুজিব’ ও ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ চলচ্চিত্রে।

এ ছাড়া অভিনয়ে প্রশংসা কুড়াচ্ছে শিশুশিল্পী মুশফিকুল আজম হা-মীম, স্পর্শ, জাফনা সুবাইতা হাসান, মারিয়া রিদা নিজাম, মিশকাত মাহামুদ মেহরিন, আবদুল্লাহ আরিয়ান, নুসরাত জাহান নদী, নাইমুর রহমান আপন, সাদিকা রহমান রাইসা প্রমুখ। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত