মাওলানা ইসমাইল নাজিম
ভূমিকম্প মহান আল্লাহর অসীম শক্তিমত্তার বহিঃপ্রকাশ। অবাধ্যতার কারণে অতীতে অনেক জাতিকে ভূমিকম্প দিয়ে সমূলে ধ্বংস করে দিয়েছেন তিনি। যেদিন মহাবিশ্বের আয়ু ফুরিয়ে যাবে, সেদিন ভয়ংকর ভূমিকম্পের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা পুরো সৃষ্টিজগৎ ধ্বংস করে দেবেন। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত ভূমিকম্পগুলো এরই ছোট নমুনামাত্র।
ভূমিকম্প আল্লাহর নিদর্শন
মহান আল্লাহ তাঁর বিভিন্ন নিদর্শনের মাধ্যমে মানুষকে সতর্ক করেন। তাদের অবাধ্যতার পরিণাম স্মরণ করিয়ে দিয়ে সৎ পথে ফিরে আসার আহ্বান জানান। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি ভয় দেখানোর জন্যই নিদর্শনগুলো পাঠাই।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ৫৯)।
ভূমিকম্প তেমনই এক নিদর্শন। আল্লাহ বলেন, ‘বলো, আল্লাহ তোমাদের ওপর থেকে অথবা তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষম।’ (সুরা আনআম: ৬৫) আয়াতটি নাজিল হলে মহানবী (সা.) বলেন, ‘হে আল্লাহ, আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’ (বুখারি) শায়খ ইস্পাহানি (রহ.) আয়াতের তাফসিরে বলেছেন, এখানে ভূমিকম্প ও ভূমিধসের কথা
বলা হয়েছে।
মানুষের গুনাহ, অনাচার, পাপাচার, প্রকৃতির প্রতি অবিচার ইত্যাদির কারণে আল্লাহ তাআলা মানুষকে বিভিন্ন দুর্যোগের মুখোমুখি করেন। এ কারণেই এসবকে মানুষের হাতের কামাই আখ্যা দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যে বিপদ-আপদই তোমাদের ওপর আসুক না কেন, তা তোমাদের নিজেদের হাতের কামাই। আর আল্লাহ তোমাদের অনেক (গুনাহ) ক্ষমা করে দেন।’ (সুরা শুরা: ৩০)
অবাধ্যদের জন্য সতর্কতা
অতীতে আল্লাহ তাআলা অবাধ্যতার সাজা হিসেবে ভূমিকম্প দিয়ে কয়েকটি জাতিকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছেন। সালিহ (আ.)-এর জাতি সামুদ, শোয়াইব (আ.)-এর জাতি মায়ইয়ানবাসী ও লুত (আ.)-এর জাতি কওমে লুতকে ভূমিকম্পের মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের কাউকে আমি মাটির নিচে গেড়ে দিয়েছি।’ (সুরা আনকাবুত: ৪০)
তবে মহানবী (সা.)-এর বিশেষ দোয়ার কারণে তাঁর উম্মতকে পুরোপুরি ধ্বংস না করার অঙ্গীকার করেছেন আল্লাহ তাআলা। অবশ্য মাঝেমধ্যে তাদের সতর্ক করার জন্য ভূমিকম্পের মতো ধ্বংসাত্মক দুর্যোগ পাঠিয়ে থাকেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘জনপদের মানুষগুলো কি নির্ভয় হয়ে ধরে নিয়েছে যে আমার আজাব তাদের ওপর মধ্য দিনে এসে পড়বে না? তখন তারা খেল-তামাশায় মত্ত থাকবে। কিংবা তারা কি আল্লাহর কলাকৌশল থেকে নির্ভয় হয়ে গেছে? অথচ আল্লাহর কলাকৌশল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত জাতি ছাড়া অন্য কেউই নিশ্চিত হতে পারে না।’ (সুরা আরাফ: ৯৮-৯৯)
মহানবী (সা.)-এর সতর্কবার্তা
মহানবী (সা.) ভূমিকম্পের ব্যাপারে মানুষকে সতর্ক করেছেন। আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘এ উম্মত ভূমিকম্প, বিকৃতি এবং পাথরবর্ষণের মুখোমুখি হবে।’ (তিরমিজি) অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যখন জাতির নিকৃষ্ট ব্যক্তি তাদের নেতা হবে, ক্ষতির ভয়ে মানুষকে সম্মান করা হবে, সে সময় তোমরা অপেক্ষা করো লাল রঙের ঝড়ের, ভূকম্পনের, ভূমিধসের, রূপ বিকৃতির, পাথরবৃষ্টির এবং সুতো ছেঁড়া দানার মতো একের পর এক নিদর্শনের জন্য।’ (তিরমিজি)
কিয়ামতের আগে ভূমিকম্প বেড়ে যাবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন মহানবী (সা.)। ইবনু হাওয়ালা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আমার মাথার তালুতে হাত রেখে বলেন, ‘হে ইবনু হাওয়ালা, যখন তুমি দেখবে যে বাইতুল মুকাদ্দাসের ভূমিতে খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তখন মনে করবে বেশি বেশি ভূমিকম্প, বিপদ-আপদ, মহাদুর্ঘটনা ও পেরেশানি খুব কাছে। আমার এই হাত তোমার মাথার যত কাছে আসে, তখন কিয়ামত মানুষের তত কাছে চলে আসবে।’ (আবু দাউদ)
কিয়ামতের ছোট নমুনা
ভূমিকম্প কিয়ামতের দিনের ভয়াবহতার কথা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘হে মানুষ, তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় করো। কিয়ামতের ভূমিকম্প এক ভয়ংকর ব্যাপার। যেদিন তোমরা তা দেখবে, সেদিন স্তন্যদায়ী মা তার দুগ্ধপোষ্য সন্তানের কথা ভুলে যাবে আর সব গর্ভবতীর গর্ভপাত হয়ে যাবে। দৃশ্যত মানুষকে মাতালের মতো দেখাবে, আসলে তারা নেশাগ্রস্ত হবে না। মূলত আল্লাহর শাস্তি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ।’ (সুরা হজ, আয়াত: ১-২)
কিয়ামতের ভয়াবহতা নিয়ে অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘(সেদিন) প্রবল কম্পনে প্রকম্পিত হবে পৃথিবী এবং পর্বতমালা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে তা বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পর্যবসিত হবে।’ (সুরা ওয়াকিয়া: ৪-৬)
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক
ভূমিকম্প মহান আল্লাহর অসীম শক্তিমত্তার বহিঃপ্রকাশ। অবাধ্যতার কারণে অতীতে অনেক জাতিকে ভূমিকম্প দিয়ে সমূলে ধ্বংস করে দিয়েছেন তিনি। যেদিন মহাবিশ্বের আয়ু ফুরিয়ে যাবে, সেদিন ভয়ংকর ভূমিকম্পের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা পুরো সৃষ্টিজগৎ ধ্বংস করে দেবেন। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত ভূমিকম্পগুলো এরই ছোট নমুনামাত্র।
ভূমিকম্প আল্লাহর নিদর্শন
মহান আল্লাহ তাঁর বিভিন্ন নিদর্শনের মাধ্যমে মানুষকে সতর্ক করেন। তাদের অবাধ্যতার পরিণাম স্মরণ করিয়ে দিয়ে সৎ পথে ফিরে আসার আহ্বান জানান। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি ভয় দেখানোর জন্যই নিদর্শনগুলো পাঠাই।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ৫৯)।
ভূমিকম্প তেমনই এক নিদর্শন। আল্লাহ বলেন, ‘বলো, আল্লাহ তোমাদের ওপর থেকে অথবা তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষম।’ (সুরা আনআম: ৬৫) আয়াতটি নাজিল হলে মহানবী (সা.) বলেন, ‘হে আল্লাহ, আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’ (বুখারি) শায়খ ইস্পাহানি (রহ.) আয়াতের তাফসিরে বলেছেন, এখানে ভূমিকম্প ও ভূমিধসের কথা
বলা হয়েছে।
মানুষের গুনাহ, অনাচার, পাপাচার, প্রকৃতির প্রতি অবিচার ইত্যাদির কারণে আল্লাহ তাআলা মানুষকে বিভিন্ন দুর্যোগের মুখোমুখি করেন। এ কারণেই এসবকে মানুষের হাতের কামাই আখ্যা দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যে বিপদ-আপদই তোমাদের ওপর আসুক না কেন, তা তোমাদের নিজেদের হাতের কামাই। আর আল্লাহ তোমাদের অনেক (গুনাহ) ক্ষমা করে দেন।’ (সুরা শুরা: ৩০)
অবাধ্যদের জন্য সতর্কতা
অতীতে আল্লাহ তাআলা অবাধ্যতার সাজা হিসেবে ভূমিকম্প দিয়ে কয়েকটি জাতিকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছেন। সালিহ (আ.)-এর জাতি সামুদ, শোয়াইব (আ.)-এর জাতি মায়ইয়ানবাসী ও লুত (আ.)-এর জাতি কওমে লুতকে ভূমিকম্পের মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের কাউকে আমি মাটির নিচে গেড়ে দিয়েছি।’ (সুরা আনকাবুত: ৪০)
তবে মহানবী (সা.)-এর বিশেষ দোয়ার কারণে তাঁর উম্মতকে পুরোপুরি ধ্বংস না করার অঙ্গীকার করেছেন আল্লাহ তাআলা। অবশ্য মাঝেমধ্যে তাদের সতর্ক করার জন্য ভূমিকম্পের মতো ধ্বংসাত্মক দুর্যোগ পাঠিয়ে থাকেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘জনপদের মানুষগুলো কি নির্ভয় হয়ে ধরে নিয়েছে যে আমার আজাব তাদের ওপর মধ্য দিনে এসে পড়বে না? তখন তারা খেল-তামাশায় মত্ত থাকবে। কিংবা তারা কি আল্লাহর কলাকৌশল থেকে নির্ভয় হয়ে গেছে? অথচ আল্লাহর কলাকৌশল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত জাতি ছাড়া অন্য কেউই নিশ্চিত হতে পারে না।’ (সুরা আরাফ: ৯৮-৯৯)
মহানবী (সা.)-এর সতর্কবার্তা
মহানবী (সা.) ভূমিকম্পের ব্যাপারে মানুষকে সতর্ক করেছেন। আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘এ উম্মত ভূমিকম্প, বিকৃতি এবং পাথরবর্ষণের মুখোমুখি হবে।’ (তিরমিজি) অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যখন জাতির নিকৃষ্ট ব্যক্তি তাদের নেতা হবে, ক্ষতির ভয়ে মানুষকে সম্মান করা হবে, সে সময় তোমরা অপেক্ষা করো লাল রঙের ঝড়ের, ভূকম্পনের, ভূমিধসের, রূপ বিকৃতির, পাথরবৃষ্টির এবং সুতো ছেঁড়া দানার মতো একের পর এক নিদর্শনের জন্য।’ (তিরমিজি)
কিয়ামতের আগে ভূমিকম্প বেড়ে যাবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন মহানবী (সা.)। ইবনু হাওয়ালা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আমার মাথার তালুতে হাত রেখে বলেন, ‘হে ইবনু হাওয়ালা, যখন তুমি দেখবে যে বাইতুল মুকাদ্দাসের ভূমিতে খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তখন মনে করবে বেশি বেশি ভূমিকম্প, বিপদ-আপদ, মহাদুর্ঘটনা ও পেরেশানি খুব কাছে। আমার এই হাত তোমার মাথার যত কাছে আসে, তখন কিয়ামত মানুষের তত কাছে চলে আসবে।’ (আবু দাউদ)
কিয়ামতের ছোট নমুনা
ভূমিকম্প কিয়ামতের দিনের ভয়াবহতার কথা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘হে মানুষ, তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় করো। কিয়ামতের ভূমিকম্প এক ভয়ংকর ব্যাপার। যেদিন তোমরা তা দেখবে, সেদিন স্তন্যদায়ী মা তার দুগ্ধপোষ্য সন্তানের কথা ভুলে যাবে আর সব গর্ভবতীর গর্ভপাত হয়ে যাবে। দৃশ্যত মানুষকে মাতালের মতো দেখাবে, আসলে তারা নেশাগ্রস্ত হবে না। মূলত আল্লাহর শাস্তি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ।’ (সুরা হজ, আয়াত: ১-২)
কিয়ামতের ভয়াবহতা নিয়ে অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘(সেদিন) প্রবল কম্পনে প্রকম্পিত হবে পৃথিবী এবং পর্বতমালা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে তা বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পর্যবসিত হবে।’ (সুরা ওয়াকিয়া: ৪-৬)
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৪ দিন আগে