Ajker Patrika

‘স্বপ্নের ফসল তলিয়ে গেল করতে পারলাম না কিছুই’

জাকির হোসেন, সুনামগঞ্জ
আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২২, ০৮: ৪৬
‘স্বপ্নের ফসল তলিয়ে গেল করতে পারলাম না কিছুই’

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার চাপতির হাওরের বৈশাখী বাঁধটি রক্ষায় দুই দিন ধরে কম চেষ্টা করেননি কৃষকেরা। তার পরও শেষরক্ষা হলো না। মাঝরাতে ভেঙে গেল বাঁধ। পানির নিচে চলে গেল প্রায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে চাপতি হাওরে দেখা যায়, ফসল হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন কৃষকেরা, তাঁরা ঘোরাঘুরি করছেন

বাঁধের ওপর। উত্তর চানপুর গ্রামের কৃষক নুরুল আমিন (৭৫) প্রায় ৫ লাখ টাকা খরচ করে ৩০ কেয়ার জমিতে ধান লাগিয়েছিলেন। এর মধ্যে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন ব্যাংক থেকে। এখন ঋণ শোধ কীভাবে হবে, সেই চিন্তায় পড়েছেন তিনি।

নুরুল আমিন আজকের পত্রিকাকে, ‘নিয়ত করছিলাম, আজকে (বৃহস্পতিবার) সাহ্‌রি খাইয়া ধান কাটা শুরু করমু। কিন্তু রাইত থাইকা যখন শুনতাছি হাওরো পানি ডুকতাছে তখন আমি বোবার মতো ওই গেছি। চোখের সামনে স্বপ্নের ফসল তলিয়ে গেল, কিছুই করতে পারলাম না।’

দুই দিন ধরে সুনামগঞ্জসহ ভারতের মেঘালয়েও বৃষ্টি নেই। সুনামগঞ্জের নদীর পানিও কমতে শুরু করেছে। তবে হাওরের বাঁধের ওপর ঢলের পানির চাপ এখনো কমেনি। ফলে গত দুই দিনে সুনামগগঞ্জের পাঁচ উপজেলার ছয়টি বাঁধ ভেঙে ফসল তলিয়ে গেছে প্রায় ৬০০ হেক্টর জমির।

হাওরের চিত্র পরিদর্শন করেছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম। গতকাল জেলার জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশা উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, হাওরে আগাম বন্যার হাত

থেকে কৃষকের ফসল রক্ষায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে। বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সাংসদ শামীমা আক্তার খানম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তরা।

জেলার বড় হাওরগুলোর ফসল রক্ষায় বাঁধে স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছেন হাজারো কৃষক। উজানে বৃষ্টি না হলেও এখনো জেলার অনেক নদীর পানি টইটম্বুর হয়ে আছে। হাওরের বাঁধের বিপৎসীমার প্রায় সমানে সমানে নদীর পানি। ফলে একমাত্র ফসল রক্ষার জন্য কৃষকেরা নিজেরাই বাঁধের কাজে রাতদিন কাটাচ্ছেন।

গত দুই দিনে সুনামগঞ্জের শাল্লা, ধর্মপাশা, তাহিরপুর, ছাতক ও দিরাই উপজেলার ৬টি বাঁধ ভেঙে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।

দিরাই উপজেলার চাপতি হাওরের ফসল তলিয়ে ক্ষতির শিকার হওয়া কৃষকদের তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হবে বলে জানালেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. নাহিদ আহমদ। তিনি বলেন, ‘চাপতির হাওর একটি বড় হাওর। এই হাওরে প্রায় ৫০ হাজার কৃষক চাষাবাদ করেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনাসহ অন্যান্য সহযোগিতার জন্য আমরা চিঠি লিখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হেলিকপ্টারে নেওয়ার অবস্থায় নেই, দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে তামিম

অর্ধশতাধিক পুলিশ কর্মকর্তার ‘বিশেষ বৈঠক’, ব্যাখ্যা চাইল সদর দপ্তর

অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, পালানোকালে আটক ৫ পুলিশ সদস্য

নতুন বাহিনীর প্রস্তাবে অসন্তোষ বেবিচকে

বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের বিরুদ্ধে ৪৭ ব্রিটিশ এমপিকে ‘সন্দেহজনক’ ই–মেইল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত