Ajker Patrika

দক্ষিণাঞ্চলে আনন্দের বন্যা

আপডেট : ২৬ জুন ২০২২, ১৪: ৫১
দক্ষিণাঞ্চলে আনন্দের বন্যা

বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে গতকাল শনিবার স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয়েছে। আর এদিনটি উদ্‌যাপন করেছে গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, ফরিদপুর ও রাজবাড়ী জেলার মানুষ।

বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে দিনটি উদ্‌যাপন করে কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, শরণখোলা, মোংলা, ফকিরহাট, সদরপুর এবং কালুখালীবাসী। এই সেতু পাল্টে দেবে এ অঞ্চলগুলোর অর্থনীতি, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ জেলার মানুষের জীবনমান। এ কারণে এই দিনটিকে বরণ করে নিতে কমতি ছিল না কোনো কিছুর। ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনটি উদ্‌যাপন করা হয়।

উপজেলা এবং জেলাগুলোতে বড় পর্দায় উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি সরাসরি দেখার আয়োজন করা হয়। সেখানে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষসহ সরকারি- বেসরকারি, প্রশাসনিক কর্মকর্তা- কর্মচারীরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিরা, জেলা উপজেলার জনসাধারণ অনুষ্ঠানটি উপভোগ করে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

কোটালীপাড়া : পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা হয়েছে। গতকাল সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফিয়া শারমিন, কোটালীপাড়া থানার ওসি মো. জিল্লুর রহমানসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বক্তব্য দেন। আলোচনা সভা শেষে প্রজেক্টরের মাধ্যমে উপস্থিত বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ও শ্রেণি পেশার মানুষদের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখানো হয়।

গোপালগঞ্জ: পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের আনন্দে গোপালগঞ্জে আনন্দ শোভাযাত্রা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ৯টার দিকে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সুশাসন চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেখ ফজলুল হক মণি স্মৃতি মিলনায়তনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে বেলুন উড়িয়ে আনন্দ-উল্লাস করা হয়।

বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শেষে শেখ ফজলুল হক মণি স্মৃতি মিলনায়তনের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ডিসপ্লে বোর্ডে বিটিভির মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান সবাই উপভোগ করেন।

জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানার নেতৃত্বে শোভাযাত্রায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. কিউ. এম. মাহবুব, সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোর্শেদ, পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা, আড়াই শ’ বেড জেনারেল হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. অসিত মল্লিক, কৃষি বিভাগের উপপরিচালক ড. অরবিন্দু কুমার রায়, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এহসানুল হক, জেলা নির্বাচন অফিসার মো. ফয়জুল মোল্লা ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বদরুদ্দোজা বদরসহ জেলা শহরের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবক এবং সামাজিক সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনসহ সাধারণ মানুষ শোভাযাত্রায় অংশ নেন।

বাগেরহাট: বাগেরহাটে শহীদ মিনার চত্বর থেকে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রায় হাজার হাজার মানুষ অংশ নেয়। সেখানে পদ্মাসেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে সাত দিন ব্যাপী লোকজ আনন্দ মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান।

পরে স্বাধীনতা উদ্যানে সাধারণ মানুষের জন্য বড় পর্দায় পদ্মাসেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়। এসব অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক, সিভিল সার্জন ডা. জালাল উদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খোন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করিম, বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে পদ্মাসেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জেলার অর্ধলক্ষাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

শরণখোলা: শরণখোলা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল সকাল থেকে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন। উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক ভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেখানো হয়। এরপর পদ্মা সেতুর ছবি সংযুক্ত ফেস্টুন ও বেলুন উড়িয়ে দিয়ে আনন্দ উদ্‌যাপন করা হয়। পরে উপজেলা সদরের রায়েন্দা বাদল চত্বর পাঁচ রাস্তার মোড়ে বিভিন্ন পেশার সাধারণ মানুষের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুর ই আলম সিদ্দিকী। এ সময় উপজেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে শরণখোলা থানা-পুলিশ স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে। উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে থানা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রা শেষে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করেন শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম হোসেন।

মোংলা: বাগেরহাটের মোংলা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আনন্দ মিছিল বের হয়। গতকাল সকাল ১০টার দিকে পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে আনন্দ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার। সমাবেশে বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. আসিফ ইকবাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শিক্ষাবিদ সুনীল কুমার বিশ্বাস, মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাংবাদিক মো. নূর আলম শেখ, অধ্যক্ষ আবু সাইদ খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা রনজিৎ মণ্ডল, পৌর কাউন্সিলর মো. বাহাদুর মিয়া প্রমুখ।

স্বপ্নের পদ্মাসেতু উদ্বোধনকে স্মরণীয় করে রাখতে ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছে টুরিস্ট পুলিশ খুলনা রিজিয়ন। বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ এই ইউনিটটির উদ্যোগে গতকাল দিনব্যাপী বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার মামার ঘাট এলাকায় বিনা মূল্যে চিকিৎসা ক্যাম্প করা হয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘আমাদের গ্রাম’ এর ডিজিটাল স্বাস্থ্য সেবা প্রকল্পের কারিগরি সহায়তায় সকালে ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, টুরিস্ট পুলিশ খুলনা রিজিয়নের পুলিশ সুপার দেওয়ান লালন আহমেদ। এ সময় বাংলাদেশের প্রথম এভারেস্ট জয়ী ও আমাদের গ্রাম স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্পের বোর্ড অফ ডিরেক্টর এর সদস্য মুসা ইব্রাহীম, আমাদের গ্রামের কর্মকর্তা শেখ সাদীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এদিন প্রায় ৫ শতাধিক দরিদ্র মানুষকে বিনা মূল্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ওষুধ সরবরাহ করা হয়।

ফকিরহাট : বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল সকাল ১০টার দিকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেনের পরিচালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফকিরহাট সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিধান কান্তি হালদার, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহ্ মো. মহিবুল্লাহ, কাটাখালী হাইওয়ে থানার ওসি মোহম্মদ আলী, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. পুষ্পেন কুমার শিকদার, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেবাশীস কুমার বিশ্বাস, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাঈদা দিলরুবা সুলতানা, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তাহিরা খাতুন, সহকারী প্রোগ্রাম কর্মকর্তা শহিনা আক্তার, পল্লি বিদ্যুতের ডিজিএম আহসানুল করিম প্রমুখ।

সদরপুর: ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলা প্রশাসন ও পরিষদের আয়োজনে গতকাল সকাল ১০টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান মাহমুদ রাসেলের সভাপতিত্বে উপজেলা চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রা শেষে উপজেলা দরবার হলে আলোচনা সভা হয়। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, সদরপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. কাকলী মুখোপাধ্যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মাদ ওমর ফয়সাল, উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোমেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ আহমেদ জামসেদসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাসহ সর্বস্তরের জনগণ।

কালুখালী : রাজবাড়ীর কালুখালীতে প্রজেক্টরের মাধ্যমে সরাসির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখানো ও কালুখালী থানা-পুলিশের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা হয়েছে। গতকাল ঐতিহাসিক এই দিনে রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুল হাকিমের নির্দেশনায় উপজেলা চেয়ারম্যান আলিউজ্জামান চৌধুরী টিটোর তত্বধায়নে রতনদিয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রজেক্টরের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি দেখানো হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে কালুখালী থানা-পুলিশের আয়োজনে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাজমুল হাসানের নেতৃত্বে পুলিশের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা হয়। এতে অংশ গ্রহণ করেন কালুখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলিউজ্জামান চৌধুরী টিটো, উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও কালুখালী থানায় কর্মরত সকল পুলিশ সদস্যরা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

বাসস, ঢাকা  
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।

আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।

এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।

পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্‌ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।

মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

  • এবার ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
  • গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলে পল্লিগুলোতে ব্যস্ততা।
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।

বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’

জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’

নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’

সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।

কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।

একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।

কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।

[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

  • ক্রয়াদেশের চালান নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা
  • সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা
  • আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডেকেছে জরুরি বৈঠক
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ০২: ৪৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।

ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।

গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।

বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।

জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।

স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।

এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।

গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।

সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?

১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।

ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত