ইশতিয়াক হাসান
আমাদের সৌভাগ্য, অজগরের মতো এত সুন্দর প্রজাতির সাপ এখনো বাংলাদেশে আছে। তাও একটি নয়, এর দুটি প্রজাতি দেশের বনাঞ্চলে দেখা যায়। আমার নিজেরও সরীসৃপকুলে সবচেয়ে পছন্দ অজগরই। তাই ১৬ জুলাই বিশ্ব সাপ দিবসে অজগর নিয়েই লেখা।
শুরুতে বরং গোটা বিশ্বের অজগর নিয়ে দু-চারটি তথ্য দিচ্ছি। এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ৪০ ধরনের বেশি অজগরের প্রজাতি আবিষ্কৃত হয়েছে। এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ায় অজগরদের দেখা মেলে। এরা সাধারণত উষ্ণ এবং আর্দ্র জলবায়ু অঞ্চলে থাকতে ভালোবাসে।
অজগর গর্ত, পাথরের নিচে, স্তন্যপায়ী প্রাণীর তৈরি করা পরিত্যক্ত গর্ত এবং গাছের শাখায় বাস করে। প্রজাতিভেদে থাকার জায়গায় পার্থক্য থাকে। তবে মানুষ একে একে অজগরের আবাসস্থল দখল করে নেওয়ায়, কোথাও কোথাও এরা শহরের আশপাশে এবং খামার এলাকায় থাকাও রপ্ত করে নিয়েছে। কখনো কখনো বাংলাদেশেও মুরগির খামারে খাবারের খোঁজে অজগরের হানা দেওয়ার ও ধরা পড়ার ঘটনা ঘটে।
আকারে বিশাল কিন্তু অজগর মোটেই বিষধর নয়। এদের দাঁত অত্যন্ত শক্তিশালী হলেও বিষদাঁত নেই। এরা ভালো সাঁতারুও বটে।বাংলাদেশে অজগরের দুটি প্রজাতি আছে। এর একটি বার্মিজ অজগর বা ময়াল সাপ এবং অন্যটি গোলবাহার বা রেটিকুলেটেড পাইথন।অবশ্য স্থানীয়ভাবে কোথাও কোথাও যেকোনো ধরনের অজগরকেই ময়াল হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
ভাওয়াল-মধুপুরের শাল বন এবং সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের চিরসবুজ ও মিশ্র চিরসবুজ বনে ময়াল বা বার্মিজ অজগরের দেখা মেলে। তেমনি পাওয়া যায় সুন্দরবনেও। অবশ্য এখনো দেশের কোনো কোনো গ্রামীণ বনেও টিকে আছে এরা। এ ধরনের অজগর ৫-৬ মিটার (১৬ থেকে ২০ ফুট) লম্বা হয়। শরীরটা অনেক মোটা ও লম্বা আঁশে মোড়া।
অন্যদিকে পৃথিবীর দীর্ঘতম সাপ হলো গোলবাহার বা রেটিকুলেটেড পাইথন। সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনে এখনো আছে গোলবাহাররা। লম্বায় ৯ মিটার বা ৩২ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। বার্মিজ পাইথন বা ময়ালদের মতো এদের শরীরে হলুদ বা বাদামি ছোপ থাকে। তবে এটা অনেকটা জালের আকার ধারণ করে।
এবার প্রচণ্ড সাহসী এক অজগরের গল্প বলব। ভারতের কোয়েল নদীর কাছে ঘটনাটি ঘটে। তা আজ থেকে শ দেড়েক বছর আগে তো হবেই। বর্ণনা পাওয়া যায় খনি প্রকৌশলী মারভিন স্মিথের এক বইয়ে। বুনো কুকুরদের তাড়া করা একটি শূকরকে বাগে পেয়ে শরীর দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে ২০ ফুট লম্বা বিশাল এক অজগর। একটু পরেই ঘটনাস্থলে হাজির হয় বুনো কুকুরের দল। বুনো কুকুরেরা খুব বেপরোয়া। বিখ্যাত শিকারি ও লেখক কেনেথ অ্যান্ডারসনের বইয়ে ভারতের জঙ্গলে বুনো কুকুরের দল বাঘকে মেরে খেয়ে ফেলার ঘটনারও বর্ণনা আছে।
কিন্তু কোয়েল নদীর ধারের ঘটনাটায় বুনো কুকুরদের পরাজয়ই মেনে নিতে হয়। আট সঙ্গীর মৃতদেহ ফেলে রেখে পালায় দলের বাকি সদস্যরা। অন্যদিকে বুনো কুকুরের কামড়-আঁচড়ে রক্তাক্ত হলেও অজগরটি বেঁচে যায়। বইটিতে বুনো কুকুরের দলের মোকাবিলা করার সময় অজগরটির একটি অদ্ভুত কৌশল ব্যবহারের কথা বলা হয়। এটি শক্তিশালী মাথা দিয়ে বুনো কুকুরের পাঁজরে আঘাত করে হাড় ভেঙে ফেলছিল।
অজগরের প্রজনন সময় শুরু ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে। মিলনের তিন-চার মাস পর এরা ডিম দেয়। স্ত্রী অজগর ডিমের চারদিকে কুণ্ডলী পাকিয়ে তা দেয়। ময়ালরা মার্চ থেকে জুনের মধ্যে ৫০-১০০টি ডিম দেয়। গোলবাহাররা বর্ষার গোড়ায় ১০ থেকে ১০০টি ডিম দেয়।
সাধারণত বন্য প্রাণী পানি খেতে আসে এমন জায়গায় লুকিয়ে মরার মতো পড়ে থাকে। শিকারকে প্রথমে কামড়ে ধরে, তারপর দেহের বিভিন্ন ভাঁজে একে পেঁচিয়ে দম বন্ধ করে মেরে ফেলে। এরপর ধীরে ধীরে খায়। একটি বড় প্রাণী খাওয়ার পর কয়েক দিন স্থির মরার মতো পড়ে থাকে অজগরেরা।
ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী থেকে শুরু করে হরিণ কিংবা শূকরও খায় এরা। কখনো কখনো হরিণ খেতে গিয়ে এদের মারা পড়ারও নজির আছে। অন্য সাপের মতো অজগরদের দাঁত পেছনে বাঁকা হওয়ায় খাবার মুখে ঢুকলে বের করতে পারে না। এতে হরিণ খাবার সময় শিং আটকে শিকারের সঙ্গে সঙ্গে অজগরের মৃত্যুর রেকর্ডও আছে।
পাকিস্তান আমলে গোটা পাকিস্তানের বন বিভাগের বড় কর্তা বা ইন্সপেক্টর জেনারেল অব ফরেস্ট ছিলেন ইউসুফ এস আহমদ। তিনি তাঁর উইথ দ্য ওয়াইল্ডস অ্যানিমেলস অব বেঙ্গল বইয়ে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে পড়া বক্সার রাজাভাতখাওয়া জঙ্গলে একটি বিশালকায় অজগরের বড়সড় একটি মায়া হরিণ খাওয়ার দৃশ্যের বর্ণনা করেছিলেন। তেমনি ভারতের কুচবিহারের জঙ্গলে একটি হরিণ খাওয়ার অপেক্ষায় থাকা পাঁচটি অজগরকে দেখেছিলেন একসঙ্গে। এতগুলো অজগর একত্রে থাকার ঘটনা খুব বিরল। এগুলোও অবশ্য অন্তত ৭০-৮০ বছর আগের ঘটনা।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অজগর পোষা প্রাণী হিসেবেও জনপ্রিয়; বিশেষ করে বল পাইথন ও কার্পেট পাইথন। মাঝখানে অস্ট্রেলিয়ার এক ব্যক্তি কার্পেট অজগরসহ সার্ফিং করায় স্থানীয় বন্য প্রাণী সংরক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা তাঁকে জরিমানা করেন। কেনেথ অ্যান্ডারসনও অজগর পুষতেন।
অজগর নিয়ে বাংলাদেশে চমৎকার গবেষণা করেছে শাহরিয়ার সিজার রহমান এবং তাঁর সংগঠন ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স। লাউয়াছড়ার বনে অজগরের শরীরে রেডিও ট্রান্সমিটার বসিয়ে প্রকৃতিতে ছেড়ে দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেন তাঁরা সরীসৃপটি সম্পর্কে।
অজগরের এমনিতে মানুষকে আক্রমণের খুব বেশি রেকর্ড নেই। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইন্দোনেশিয়ায় অল্প কয়েক দিনের ব্যবধানে অজগরের পেটে যান দুই নারী। অজগর দুটিকেও অবশ্য পরে মেরে ফেলা হয়। বাংলাদেশে ২০০৩ সালে রাঙামাটির সাজেক ইউনিয়নেও এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটে। বাসন্তী ত্রিপুরা নামের এক নারী স্বামীর সঙ্গে জুমে কাজ করছিলেন।
এ সময় একটি অজগর তাঁকে গিলে ফেলে। পরে স্বামী পাড়ার মানুষদের ডেকে সবাই মিলে সাপটিকে মেরে মৃত অবস্থায় ওই নারীকে বের করে আনেন। তবে এটি ব্যতিক্রম। এমন আর কোনো নজির দেশের বনাঞ্চলে নেই। আপাতদৃষ্টিতে মানুষের জন্য নিরীহ বলা চলে অজগরকে।
বর্তমানে বাংলাদেশে অজগরেরা আছে বড় বিপদে। খাবারের খোঁজে লোকালয়ে এসে এমনিতেই এরা মানুষের হাতে মারা পড়ছিল। এরপর আবার চন্দ্রবোড়ার সঙ্গে গায়ের রঙে কিছু মিল থাকায় ইদানীং প্রচুর হারে মারা পড়েছে নির্বিষ এ সাপটি।
বিশ্ব সাপ দিবসে একটাই চাওয়া, অজগরেরা নিজেদের মতো বিচরণ করুক বাংলাদেশের পাহাড়-অরণ্যে এবং গ্রামীণ বনে। খুব বিপদে না পড়লে আমরা অজগরসহ অন্য সাপদেরও না মারার চেষ্টা করি। কারণ প্রকৃতি থেকে সাপ হারিয়ে গেলে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে আমাদের ওপরও।
লেখক: সাংবাদিক ও প্রকৃতিপ্রেমী
আমাদের সৌভাগ্য, অজগরের মতো এত সুন্দর প্রজাতির সাপ এখনো বাংলাদেশে আছে। তাও একটি নয়, এর দুটি প্রজাতি দেশের বনাঞ্চলে দেখা যায়। আমার নিজেরও সরীসৃপকুলে সবচেয়ে পছন্দ অজগরই। তাই ১৬ জুলাই বিশ্ব সাপ দিবসে অজগর নিয়েই লেখা।
শুরুতে বরং গোটা বিশ্বের অজগর নিয়ে দু-চারটি তথ্য দিচ্ছি। এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ৪০ ধরনের বেশি অজগরের প্রজাতি আবিষ্কৃত হয়েছে। এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ায় অজগরদের দেখা মেলে। এরা সাধারণত উষ্ণ এবং আর্দ্র জলবায়ু অঞ্চলে থাকতে ভালোবাসে।
অজগর গর্ত, পাথরের নিচে, স্তন্যপায়ী প্রাণীর তৈরি করা পরিত্যক্ত গর্ত এবং গাছের শাখায় বাস করে। প্রজাতিভেদে থাকার জায়গায় পার্থক্য থাকে। তবে মানুষ একে একে অজগরের আবাসস্থল দখল করে নেওয়ায়, কোথাও কোথাও এরা শহরের আশপাশে এবং খামার এলাকায় থাকাও রপ্ত করে নিয়েছে। কখনো কখনো বাংলাদেশেও মুরগির খামারে খাবারের খোঁজে অজগরের হানা দেওয়ার ও ধরা পড়ার ঘটনা ঘটে।
আকারে বিশাল কিন্তু অজগর মোটেই বিষধর নয়। এদের দাঁত অত্যন্ত শক্তিশালী হলেও বিষদাঁত নেই। এরা ভালো সাঁতারুও বটে।বাংলাদেশে অজগরের দুটি প্রজাতি আছে। এর একটি বার্মিজ অজগর বা ময়াল সাপ এবং অন্যটি গোলবাহার বা রেটিকুলেটেড পাইথন।অবশ্য স্থানীয়ভাবে কোথাও কোথাও যেকোনো ধরনের অজগরকেই ময়াল হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
ভাওয়াল-মধুপুরের শাল বন এবং সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের চিরসবুজ ও মিশ্র চিরসবুজ বনে ময়াল বা বার্মিজ অজগরের দেখা মেলে। তেমনি পাওয়া যায় সুন্দরবনেও। অবশ্য এখনো দেশের কোনো কোনো গ্রামীণ বনেও টিকে আছে এরা। এ ধরনের অজগর ৫-৬ মিটার (১৬ থেকে ২০ ফুট) লম্বা হয়। শরীরটা অনেক মোটা ও লম্বা আঁশে মোড়া।
অন্যদিকে পৃথিবীর দীর্ঘতম সাপ হলো গোলবাহার বা রেটিকুলেটেড পাইথন। সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনে এখনো আছে গোলবাহাররা। লম্বায় ৯ মিটার বা ৩২ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। বার্মিজ পাইথন বা ময়ালদের মতো এদের শরীরে হলুদ বা বাদামি ছোপ থাকে। তবে এটা অনেকটা জালের আকার ধারণ করে।
এবার প্রচণ্ড সাহসী এক অজগরের গল্প বলব। ভারতের কোয়েল নদীর কাছে ঘটনাটি ঘটে। তা আজ থেকে শ দেড়েক বছর আগে তো হবেই। বর্ণনা পাওয়া যায় খনি প্রকৌশলী মারভিন স্মিথের এক বইয়ে। বুনো কুকুরদের তাড়া করা একটি শূকরকে বাগে পেয়ে শরীর দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে ২০ ফুট লম্বা বিশাল এক অজগর। একটু পরেই ঘটনাস্থলে হাজির হয় বুনো কুকুরের দল। বুনো কুকুরেরা খুব বেপরোয়া। বিখ্যাত শিকারি ও লেখক কেনেথ অ্যান্ডারসনের বইয়ে ভারতের জঙ্গলে বুনো কুকুরের দল বাঘকে মেরে খেয়ে ফেলার ঘটনারও বর্ণনা আছে।
কিন্তু কোয়েল নদীর ধারের ঘটনাটায় বুনো কুকুরদের পরাজয়ই মেনে নিতে হয়। আট সঙ্গীর মৃতদেহ ফেলে রেখে পালায় দলের বাকি সদস্যরা। অন্যদিকে বুনো কুকুরের কামড়-আঁচড়ে রক্তাক্ত হলেও অজগরটি বেঁচে যায়। বইটিতে বুনো কুকুরের দলের মোকাবিলা করার সময় অজগরটির একটি অদ্ভুত কৌশল ব্যবহারের কথা বলা হয়। এটি শক্তিশালী মাথা দিয়ে বুনো কুকুরের পাঁজরে আঘাত করে হাড় ভেঙে ফেলছিল।
অজগরের প্রজনন সময় শুরু ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে। মিলনের তিন-চার মাস পর এরা ডিম দেয়। স্ত্রী অজগর ডিমের চারদিকে কুণ্ডলী পাকিয়ে তা দেয়। ময়ালরা মার্চ থেকে জুনের মধ্যে ৫০-১০০টি ডিম দেয়। গোলবাহাররা বর্ষার গোড়ায় ১০ থেকে ১০০টি ডিম দেয়।
সাধারণত বন্য প্রাণী পানি খেতে আসে এমন জায়গায় লুকিয়ে মরার মতো পড়ে থাকে। শিকারকে প্রথমে কামড়ে ধরে, তারপর দেহের বিভিন্ন ভাঁজে একে পেঁচিয়ে দম বন্ধ করে মেরে ফেলে। এরপর ধীরে ধীরে খায়। একটি বড় প্রাণী খাওয়ার পর কয়েক দিন স্থির মরার মতো পড়ে থাকে অজগরেরা।
ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী থেকে শুরু করে হরিণ কিংবা শূকরও খায় এরা। কখনো কখনো হরিণ খেতে গিয়ে এদের মারা পড়ারও নজির আছে। অন্য সাপের মতো অজগরদের দাঁত পেছনে বাঁকা হওয়ায় খাবার মুখে ঢুকলে বের করতে পারে না। এতে হরিণ খাবার সময় শিং আটকে শিকারের সঙ্গে সঙ্গে অজগরের মৃত্যুর রেকর্ডও আছে।
পাকিস্তান আমলে গোটা পাকিস্তানের বন বিভাগের বড় কর্তা বা ইন্সপেক্টর জেনারেল অব ফরেস্ট ছিলেন ইউসুফ এস আহমদ। তিনি তাঁর উইথ দ্য ওয়াইল্ডস অ্যানিমেলস অব বেঙ্গল বইয়ে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে পড়া বক্সার রাজাভাতখাওয়া জঙ্গলে একটি বিশালকায় অজগরের বড়সড় একটি মায়া হরিণ খাওয়ার দৃশ্যের বর্ণনা করেছিলেন। তেমনি ভারতের কুচবিহারের জঙ্গলে একটি হরিণ খাওয়ার অপেক্ষায় থাকা পাঁচটি অজগরকে দেখেছিলেন একসঙ্গে। এতগুলো অজগর একত্রে থাকার ঘটনা খুব বিরল। এগুলোও অবশ্য অন্তত ৭০-৮০ বছর আগের ঘটনা।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অজগর পোষা প্রাণী হিসেবেও জনপ্রিয়; বিশেষ করে বল পাইথন ও কার্পেট পাইথন। মাঝখানে অস্ট্রেলিয়ার এক ব্যক্তি কার্পেট অজগরসহ সার্ফিং করায় স্থানীয় বন্য প্রাণী সংরক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা তাঁকে জরিমানা করেন। কেনেথ অ্যান্ডারসনও অজগর পুষতেন।
অজগর নিয়ে বাংলাদেশে চমৎকার গবেষণা করেছে শাহরিয়ার সিজার রহমান এবং তাঁর সংগঠন ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স। লাউয়াছড়ার বনে অজগরের শরীরে রেডিও ট্রান্সমিটার বসিয়ে প্রকৃতিতে ছেড়ে দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেন তাঁরা সরীসৃপটি সম্পর্কে।
অজগরের এমনিতে মানুষকে আক্রমণের খুব বেশি রেকর্ড নেই। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইন্দোনেশিয়ায় অল্প কয়েক দিনের ব্যবধানে অজগরের পেটে যান দুই নারী। অজগর দুটিকেও অবশ্য পরে মেরে ফেলা হয়। বাংলাদেশে ২০০৩ সালে রাঙামাটির সাজেক ইউনিয়নেও এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটে। বাসন্তী ত্রিপুরা নামের এক নারী স্বামীর সঙ্গে জুমে কাজ করছিলেন।
এ সময় একটি অজগর তাঁকে গিলে ফেলে। পরে স্বামী পাড়ার মানুষদের ডেকে সবাই মিলে সাপটিকে মেরে মৃত অবস্থায় ওই নারীকে বের করে আনেন। তবে এটি ব্যতিক্রম। এমন আর কোনো নজির দেশের বনাঞ্চলে নেই। আপাতদৃষ্টিতে মানুষের জন্য নিরীহ বলা চলে অজগরকে।
বর্তমানে বাংলাদেশে অজগরেরা আছে বড় বিপদে। খাবারের খোঁজে লোকালয়ে এসে এমনিতেই এরা মানুষের হাতে মারা পড়ছিল। এরপর আবার চন্দ্রবোড়ার সঙ্গে গায়ের রঙে কিছু মিল থাকায় ইদানীং প্রচুর হারে মারা পড়েছে নির্বিষ এ সাপটি।
বিশ্ব সাপ দিবসে একটাই চাওয়া, অজগরেরা নিজেদের মতো বিচরণ করুক বাংলাদেশের পাহাড়-অরণ্যে এবং গ্রামীণ বনে। খুব বিপদে না পড়লে আমরা অজগরসহ অন্য সাপদেরও না মারার চেষ্টা করি। কারণ প্রকৃতি থেকে সাপ হারিয়ে গেলে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে আমাদের ওপরও।
লেখক: সাংবাদিক ও প্রকৃতিপ্রেমী
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে