কলেজে শিক্ষার্থীদের ভাঙচুর

মোহনগঞ্জ (নেত্রেকানা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২১, ০৬: ৫৯
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২১, ১৯: ৪৯

মোহনগঞ্জ সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীরা হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় তারা কলেজের একাধিক শ্রেণীকক্ষ দা দিয়ে কুপিয়েছে বলে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়।

এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের বিদায়ের দিনে র‍্যাগ ডে পালনে কলেজ কর্তৃপক্ষ বাধা দেওয়ায় কিছু শিক্ষার্থী গত শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, সরকারিভাবে নিষেধ থাকায় র‍্যাগ ডে পালনে তারা শিক্ষার্থীদের বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয় কিছু শিক্ষার্থী। তারা কলেজের একাধিক শ্রেণিকক্ষে হামলা চালায়। কুপিয়ে কয়েকটি শ্রেণিকক্ষের দরজা-জানালা, টেবিল, হোয়াইটবোর্ড, সিলিং ফ্যান ও সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার সময় হামলাকারী শিক্ষার্থীরা অশালীন ভাষায় শিক্ষকদের গালাগাল করে বলে জানা গেছে।

খবর পেয়ে কলেজে ছুটে যায় মোহনগঞ্জ থানা-পুলিশ। তবে পুলিশ যাওয়ার আগেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করে হামলাকারী শিক্ষার্থীরা।

ঘটনার দিন কলেজে উপস্থিত ছিলেন না অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল হোসেন চৌধুরী। ঘটনার সময় উপস্থিত শিক্ষক ও কর্মচারীরা ভয়ে কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে নিজেদের তালাবদ্ধ করে রাখেন।

গতকাল রোববার দুপুরে সরেজমিন কলেজ পরিদর্শনে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে কলেজের প্রভাষক বিজয় কুমার রায় বলেন, এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের বিদায়ী শিক্ষার্থীরা র‍্যাগ ডে পালন করতে চায়। সরকারিভাবে র‍্যাগ ডে নিষেধ থাকায় কলেজ কর্তৃপক্ষ এতে বাধা দেয়। বিদায় বেলায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটু স্মৃতিচারণ হোক এটা হলে ভালো। তবে বর্তমানে র‍্যাগ ডের নামে যেসব হয়, পত্রপত্রিকায় আমরা যা দেখি, এসব উদ্বেগের। অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা যেন না হয় সেকারণেই মূলত র‍্যাগ ডে পালনে নিষেধ করা হয়েছে।

পরে হয়তো পৌর পাবলিক হলে শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠান করেছে বলে শুনেছি। তিনি বলেন, শনিবার সকালে এ বিষয়ে কলেজ কার্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীরা র‍্যাগ ডে পালন নিয়ে আলোচনা করে। শিক্ষকেরা এতে রাজি না হলে তারা চলে যায়। কিছুক্ষণ পরে বেশ কয়েকজন দল বেঁধে রামদা নিয়ে এসে এসে হামলা চালায়। আমরা আমাদের মোটরসাইকেল কার্যালয়ের বারান্দায় তুলে গ্রিলে তালা লাগিয়ে কক্ষে বসে থাকি। তারা দরজা-জানালাসহ বিভিন্ন কক্ষে কুপিয়ে চলে যায়। সোমবার অধ্যক্ষ স্যার আসলে এ নিয়ে আলোচনা করে এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করা হবে। তবে হামলায় যোগ দেওয়া কোনো শিক্ষার্থীর নাম নির্দিষ্ট করে বলতে তিনি রাজি হননি।

কলেজের বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা কর্মচারীরা ঘটনার সময় উপস্থিত থাকলেও হামলায় যোগ দেওয়া কোনো শিক্ষার্থীর নাম তারা বলতে চাননি। তাদের বক্তব্য-এরা শিক্ষার্থী হলেও কোনো না কোনো রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকে। এদের নাম বললে আমরা বিপদে পড়ব।

এ বিষয়ে প্রভাষক ইমাম হাসান বলেন, হামলা হয়েছে শুনেছি। এ সময় কলেজে ছিলাম না। প্রভাষক জহিরুল ইসলাম (রনি) বলেন, র‍্যাগ ডে নিয়ে হামলার বিষয়ে শুনেছি। তবে এ বিষয়ে আর বেশি কিছু বলতে তিনি রাজি হননি।

এ বিষয়ে মোহনগঞ্জ থানার পরিদর্শক রাশেদুল ইসলাম বলেন, হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। গিয়ে কাউকে পাইনি। ভাঙচুরের বিষয়টি দেখেছি। এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত