মেয়র অনুসারীদের হামলা প্রতিমন্ত্রীর সমর্থকের কার্যালয়ে

বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২২, ০৭: ০২
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২২, ০৯: ৫৩

বরিশাল নগরের রুপাতলী বাস টার্মিনাল দখল নিয়ে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামিম সমর্থিত শ্রমিক নেতা সুলতান আহমেদের কার্যালয় ভাঙচুর করেছেন সিটি মেয়র অনুসারীরা। গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে একযোগে দুই শতাধিক ছাত্রলীগ-যুবলীগ, শ্রমিক লীগের নেতা-কর্মী সুলতানকে হটাতে তাঁর অফিসে হামলা করে তছনছ করে। এ সময় সুলতানসহ ৫ জনকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। হামলার সময় পুলিশ অদূরে দাঁড়িয়ে থাকলেও প্রতিরোধে এগিয়ে আসেনি, এমন অভিযোগও শোনা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নগরীর রুপাতলী এলাকার মোল্লা মার্কেটের ওপরে হুমাহুম রেস্তোরাঁর পাশে শ্রমিক নেতা সুলতানের ব্যক্তিগত অফিস আছে। গত শনিবার তাঁর এক কর্মীকে মারধরের জেরে সকালে ওই অফিসে অবস্থান করছিলেন সুলতান। বেলা ১২টার দিকে মোটরসাইকেল বহর নিয়ে কয়েক শ বহিরাগত রুপাতলী বাস টার্মিনালে জড়ো হন। এর পরপরই তাঁরা একযোগে সুলতানের কার্যালয়ে হামলা করে।

শ্রমিক নেতা সুলতানের ভাতিজা সোহাগ রানা বলেন, শ্রমিকদের জন্য ইফতারির আয়োজন করতে তাঁর চাচা অফিসে আলোচনা করছিলেন। হঠাৎ দুপুর ১২টার দিকে ছাত্রলীগের রইছ আহমেদ মান্না, রাজীব হোসেন, সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত, মুনিমের নেতৃত্বে ২-৩ শ নেতা-কর্মী অফিসে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায়। অফিসের মালামাল, আসবাবপত্র চেয়ার-টেবিল ও টিভি ভাঙচুর করে তারা। এ সময় তাঁর চাচা সুলতানসহ সেখানে থাকা মানিক হাওলাদার, বিপ্লব, নাসির, শামিম হাওলাদারকে মারধর করে বহিরাগতরা। তিনি দাবি করেন হামলাকারীরা সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী।

হামলা চলাকালে শ্রমিক নেতা শাহরিয়ার বাবু, পরিমল, কাউন্সিলর জাকির মোল্লা, তাঁর ভাই মনির মোল্লা, রনিসহ অনেকেই গেটের সামনে দাঁড়িয়েছিল। তিনি বলেন, ২০-২৫ মিনিটের এ তাণ্ডবের সময় পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছে। পরে হামলাকারীরা মোটরসাইকেলে এসে চলে যায়।

তবে মেয়র অনুসারী শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি পরিমল চন্দ্র দাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘চাঁদাবাজিবিরোধী মিছিল বের করলে সুলতান মাহামুদের লোকেরা আমাদের মিছিলে হামলা করে। এ সময় আমাদের লোকজনকে মারধর করেন তারা। এতে শ্রমিক ইউনিয়নের অফিস ক্লার্ক বিপু সিকদার ও মালিক সমিতির কাউন্টার কলম্যান কালাম আহত হয়েছে।’

রুপাতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় হামলার খবর শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এনামুল হক। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। ফলে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। হামলার ঘটনায় তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিমুল করিম বলেন, রুপাতলী বাস টার্মিনালে দুই পক্ষ অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছিল। সেখানে হামলার কোনো অভিযোগ তাঁরা পাননি। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

উল্লেখ্য, বরিশাল নগরের রুপাতলী বাস টার্মিনাল কেন্দ্রিক চাঁদাবাজির লাখ লাখ টাকার কর্তৃত্ব নিয়ে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামিম এবং সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ অনুসারীরা গত ১৫ দিন ধরে মুখোমুখি অবস্থান করছে। রুপাতলী বাস টার্মিনালের দীর্ঘদিনের শ্রমিকনেতা সুলতানকে হটাতে লঞ্চ, থ্রি হুইলার শ্রমিক নিয়ে পাল্টা কমিটিও করেছেন মেয়র অনুসারীরা। শনিবারও সেখানে হামলায় উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত