চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রফিকের তৈরি করা যন্ত্র বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি থেকে রক্ষা করেছে। সেন্সরের মাধ্যমে কাজ করা এই যন্ত্র ট্রান্সফরমার চুরি ঠেকাবে বলে তিনি মনে করেন।

রফিকের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার সাগুনী গ্রামে। তিনি চুয়েটে প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করছেন।

গত বছরের নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সাগুনী গ্রামের বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে তিনটি ১০ কেভি ট্রান্সফরমার চুরি হয়। এতে বন্ধ হয়ে যায় জমির সেচ। স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রায় দুই লাখ টাকা জমা দিলে সংযোগটি পুনরায় চালু করা যাবে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েন রফিকের কৃষক বাবা নাজমুল। বাবার এই হতাশামুক্তির উপায় খুঁজতে থাকেন তিনি। একপর্যায়ে তাঁর মাথায় যন্ত্র তৈরির খেয়াল আসে। যেই চিন্তা সেই কাজ। বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে যন্ত্র তৈরির কাজে লেগে যান রফিক। এটি তৈরি করে ফেলেন তিনি।

রফিক বলেন, ‘যন্ত্রটি তৈরিতে খরচ মাত্র ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। এতে ৬০ ডেসিবেল মাত্রার কম্পনের সৃষ্টি হলে কোনো ধরনের সংকেত তৈরি ছাড়াই এটি থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারিত নম্বরে কল যাবে। এমনকি এই যন্ত্রের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফোন যাবে নির্ধারিত নম্বরে। এটি মোবাইল সিমকার্ড ও সেন্সরের মাধ্যমে কাজ করে। এ ছাড়া যন্ত্রটি সোলার প্যানেলে চলার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন বা বিদ্যুৎ না থাকলেও ডিভাইসটি কার্যকর থাকবে।’

রফিকের বাবা নাজমুল হক জানান, ১৯ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে একদল চোর রফিকের তৈরি করা যন্ত্রযুক্ত ট্রান্সফরমার চুরির চেষ্টা করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফোনে রিং বেজে ওঠে। এ সময় নাজমুলসহ স্থানীয়রা সেখানে গেলে চুরি করার যন্ত্রপাতি রেখে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পীরগঞ্জ কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী খায়রুল আলম জানান, এই যন্ত্রের কারণে নিশ্চিত চুরির হাত থেকে ট্রান্সফরমারগুলো রক্ষা পেল। পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি ট্রান্সফরমারে এই যন্ত্র লাগানো হয়েছে।