রহমান মৃধা
আমরা অনেকেই অনেক সময় বিশ্বের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে আমেরিকার এত বাহাদুরি কেন—এ বিষয়ে আর কিছু না হোক আলোচনা করি। আলোচনা করি তাদের জীবন ধারণের ওপর, বিশ্বের সর্বত্র তাদের নাক গলানোর ওপর। নিন্দা করি তাদের প্রভাব বিস্তারের ওপর। এমনকি নানা দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারণের ওপর।
আমরা পরনিন্দা বা পরচর্চার কাজে বেশ পাকা। আমরা কথায়ও পাকা। যেমন ২০৪১ সালে কী করব বা কী না করব, সরকার মহলে বলছি। ২০৪১ সালের সেই স্বপ্নিল পরিকাঠামো কী, যদি একটু ঘেঁটে দেখি—কী এমন নতুনত্ব দেখা যাবে সেখানে?
তবে চলুন, একটু বুঝে নিই আমেরিকার সংবিধানকে। দেখুন, প্রায় সাড়ে তিন শ বছরের ইতিহাস, সেই জর্জ ওয়াশিংটনের সময় থেকে গণতন্ত্রের যে মন্ত্রতন্ত্র প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, সেটার রদবদল এক থেকে দুইবারের বেশি হয়নি।
জর্জ ওয়াশিংটন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট। তাঁকে দেশটি গঠনের প্রধান বলে উল্লেখ করা হয় এবং তিনি তাঁর জীবদ্দশায় এবং এখনো যুক্তরাষ্ট্রের জাতির জনক হিসেবে পরিচিত।
তিনি দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্টের পদ ধরে রাখেননি, যদিও তাঁকে দেশবাসী অনুরোধ করেছিল। উত্তরে তিনি মোটামুটি এভাবে বলেছেন, ‘আমি আট বছরে যা করতে পারিনি তা পরবর্তী সময়ে আমিই যে ভালো পারব তার নিশ্চয়তা কী? বরং অন্যদের সেই সুযোগ দেওয়া হোক।’
সেই থেকে এখনো এক ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্টের পদ ধরে রাখতে পারেননি। ব্যতিক্রম হয়েছে প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের সময় এবং সেটা ছিল যুদ্ধের কারণে। তারপর থেকে আমেরিকার মজবুত সংবিধান বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে সগৌরবে।
আরেকটি ঘটনা যেটা গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়েছে গত কয়েক বছর আগে, যখন আমেরিকার সশস্ত্র প্রশাসন প্রকাশ্যে জানিয়ে দিয়েছিল যে তারা শুধু দেশের সংবিধানের কথায় চলে, কোনো ব্যক্তির নির্দেশনায় না। এটা সম্ভব তখনই, যখন একটি দেশের অবকাঠামো মজবুত থাকে।
কথাগুলো তুলে ধরার যে কারণ সেটা হলো, আমরা কেন এমন একটি ভাবনা নিয়ে আলোচনা করি না যেখানে যে সরকার আসুক, যে-ই ক্ষমতায় আসুক না কেন, সেটা যেন মজবুত একটি রীতিনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে? যাকে বলে, হাকিম নড়বে কিন্তু হুকুমের পরিবর্তন হবে না। হচ্ছে কি সেটা বাংলাদেশে? সরকারের পরিবর্তন হওয়া মানে দেশের মানুষ থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটের পরিবর্তন। আমাদের দেশে কি সংবিধান বা ইনস্টিটিউশনের নিয়মকানুন মেনে চলা হয়? দেশের পরিকাঠামোতে কিন্তু কোনো রকম স্থিতিশীলতা আসেনি। আসবে না যদি সঠিক গণতন্ত্রের পুরোপুরি চর্চা না করা হয়।
এসব বিষয় ভাবতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের কাছে গণতন্ত্রের চাবি ফিরিয়ে দিতে হবে। প্রত্যেক নাগরিককে সম্মানের সঙ্গে তাঁদের সামাজিক মৌলিক অধিকার এবং তাঁরাই যে ‘মাস্টার অব দ্য আর্ট’, তা প্রমাণ করে দেখাতে হবে।
এখন প্রশ্ন, আমরা কি প্রস্তুত এমন একটি চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে? ধর্ষণ, দুর্নীতি, মানুষে মানুষ খুন, নীতিতে অনীতি ঢোকানো, খাবারে ভেজাল মেশানো—এসব হচ্ছে বর্তমানে দেশের বেশির ভাগ জনগণের কাজ। জনগণকে তার ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হবে এবং প্রশাসনকে জনগণের পাশাপাশি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেশের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে। সেটা পেতে হলে প্রথম যে কাজটি করতে হবে তা হলো, সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা এবং নোংরা রাজনীতি ছেড়ে মজবুত পরিকাঠামো তৈরি করা। আর এর জন্য প্রথম উদ্যোগ নিতে হবে তো রাজনীতিকদেরই।
লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
আমরা অনেকেই অনেক সময় বিশ্বের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে আমেরিকার এত বাহাদুরি কেন—এ বিষয়ে আর কিছু না হোক আলোচনা করি। আলোচনা করি তাদের জীবন ধারণের ওপর, বিশ্বের সর্বত্র তাদের নাক গলানোর ওপর। নিন্দা করি তাদের প্রভাব বিস্তারের ওপর। এমনকি নানা দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারণের ওপর।
আমরা পরনিন্দা বা পরচর্চার কাজে বেশ পাকা। আমরা কথায়ও পাকা। যেমন ২০৪১ সালে কী করব বা কী না করব, সরকার মহলে বলছি। ২০৪১ সালের সেই স্বপ্নিল পরিকাঠামো কী, যদি একটু ঘেঁটে দেখি—কী এমন নতুনত্ব দেখা যাবে সেখানে?
তবে চলুন, একটু বুঝে নিই আমেরিকার সংবিধানকে। দেখুন, প্রায় সাড়ে তিন শ বছরের ইতিহাস, সেই জর্জ ওয়াশিংটনের সময় থেকে গণতন্ত্রের যে মন্ত্রতন্ত্র প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, সেটার রদবদল এক থেকে দুইবারের বেশি হয়নি।
জর্জ ওয়াশিংটন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট। তাঁকে দেশটি গঠনের প্রধান বলে উল্লেখ করা হয় এবং তিনি তাঁর জীবদ্দশায় এবং এখনো যুক্তরাষ্ট্রের জাতির জনক হিসেবে পরিচিত।
তিনি দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্টের পদ ধরে রাখেননি, যদিও তাঁকে দেশবাসী অনুরোধ করেছিল। উত্তরে তিনি মোটামুটি এভাবে বলেছেন, ‘আমি আট বছরে যা করতে পারিনি তা পরবর্তী সময়ে আমিই যে ভালো পারব তার নিশ্চয়তা কী? বরং অন্যদের সেই সুযোগ দেওয়া হোক।’
সেই থেকে এখনো এক ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্টের পদ ধরে রাখতে পারেননি। ব্যতিক্রম হয়েছে প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের সময় এবং সেটা ছিল যুদ্ধের কারণে। তারপর থেকে আমেরিকার মজবুত সংবিধান বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে সগৌরবে।
আরেকটি ঘটনা যেটা গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়েছে গত কয়েক বছর আগে, যখন আমেরিকার সশস্ত্র প্রশাসন প্রকাশ্যে জানিয়ে দিয়েছিল যে তারা শুধু দেশের সংবিধানের কথায় চলে, কোনো ব্যক্তির নির্দেশনায় না। এটা সম্ভব তখনই, যখন একটি দেশের অবকাঠামো মজবুত থাকে।
কথাগুলো তুলে ধরার যে কারণ সেটা হলো, আমরা কেন এমন একটি ভাবনা নিয়ে আলোচনা করি না যেখানে যে সরকার আসুক, যে-ই ক্ষমতায় আসুক না কেন, সেটা যেন মজবুত একটি রীতিনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে? যাকে বলে, হাকিম নড়বে কিন্তু হুকুমের পরিবর্তন হবে না। হচ্ছে কি সেটা বাংলাদেশে? সরকারের পরিবর্তন হওয়া মানে দেশের মানুষ থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটের পরিবর্তন। আমাদের দেশে কি সংবিধান বা ইনস্টিটিউশনের নিয়মকানুন মেনে চলা হয়? দেশের পরিকাঠামোতে কিন্তু কোনো রকম স্থিতিশীলতা আসেনি। আসবে না যদি সঠিক গণতন্ত্রের পুরোপুরি চর্চা না করা হয়।
এসব বিষয় ভাবতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের কাছে গণতন্ত্রের চাবি ফিরিয়ে দিতে হবে। প্রত্যেক নাগরিককে সম্মানের সঙ্গে তাঁদের সামাজিক মৌলিক অধিকার এবং তাঁরাই যে ‘মাস্টার অব দ্য আর্ট’, তা প্রমাণ করে দেখাতে হবে।
এখন প্রশ্ন, আমরা কি প্রস্তুত এমন একটি চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে? ধর্ষণ, দুর্নীতি, মানুষে মানুষ খুন, নীতিতে অনীতি ঢোকানো, খাবারে ভেজাল মেশানো—এসব হচ্ছে বর্তমানে দেশের বেশির ভাগ জনগণের কাজ। জনগণকে তার ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হবে এবং প্রশাসনকে জনগণের পাশাপাশি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেশের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে। সেটা পেতে হলে প্রথম যে কাজটি করতে হবে তা হলো, সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা এবং নোংরা রাজনীতি ছেড়ে মজবুত পরিকাঠামো তৈরি করা। আর এর জন্য প্রথম উদ্যোগ নিতে হবে তো রাজনীতিকদেরই।
লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে