নেই পদচারী সেতু, ঝুঁকি নিয়ে পার

মিনহাজ তুহিন, চবি
প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২১, ০৮: ৩৯
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২১, ১১: ১৩

চট্টগ্রাম শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে হাটহাজারী উপজেলায় অবস্থিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে রয়েছে চট্টগ্রাম থেকে পার্বত্য জেলাগুলোতে যাওয়ার প্রধান পথ চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক। প্রতিদিন ব্যস্ততম এই মহাসড়ক দিয়ে ৩২টি রুটের যানবাহন চলাচল করে। এ সব যানবাহন বেপরোয়া গতিতে চলায় প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের (১ নম্বর গেট) সামনে কোনো পদচারী সেতু না থাকায় মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন হাজারো শিক্ষার্থীকে রাস্তা পার হতে হয়।

সর্বশেষ গত বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশে রাস্তার পাশে পিকআপে মালামাল তুলছিলেন কয়েকজন শ্রমিক। হঠাৎই নাজিরহাট থেকে চট্টগ্রামগামী একটি বাস বেপরোয়া গতিতে ছুটে এসে তিনজনকে ধাক্কা দেয়। আহত অবস্থায় স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ও হাসপাতালে নেওয়ার পর দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁরা হলেন নাসির উদ্দিন (৫২) ও রুবেল হোসেন (২৬)। আহত হন দিলীপ কুমার চৌধুরী (৪৪)।

দুর্ঘটনার বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব মনজুরুল আলম মনজু বলেন, এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন তিনটি জেলার ৬০টি সড়ক ও ৩২টি রুটের গাড়ি চলাচল করে। এখানে দুর্ঘটনা এড়াতে হলে পদচারী সেতু অথবা স্পিড ব্রেকার দেওয়া উচিত।

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, কিছু সময় পর পর হাত উঁচিয়ে গাড়ি থামিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও পথচারীরা রাস্তা পার হচ্ছেন। গাড়ি না থামলেও কাউকে কাউকে দৌড়ে রাস্তা পার হতেও দেখা যায়। শিক্ষার্থীরা বলছেন, ক্যাম্পাস থেকে শহরে যেতে রাস্তার অপর পাশে গিয়ে বাসে উঠতে হয়।

চবির ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল হোসেন আইমন বলেন, এই ১ নম্বর গেট দিয়ে প্রতিদিন হাজারো শিক্ষার্থী যাতায়াত করেন। বাস কিংবা অন্য যে কোনো যানবাহনে ওঠার জন্য রাস্তা পার হতে হয়। অথচ এখানে কোনো পদচারী সেতু নির্মাণ করা হয়নি। এখানে নামমাত্র একটি স্পিড ব্রেকার আছে, যেটি অটোরিকশা ছাড়া বড় যানবাহনের গতিরোধের ক্ষেত্রে কার্যকর নয়।

প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল হাসান বলেন, ‘কোনো প্রকার দুর্ঘটনা যেন না ঘটে—সেটিই আমাদের চাওয়া।’

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিদুল আলম বলেন, ‘প্রচুর পরিমাণ শিক্ষার্থীকে ওই জায়গা দিয়ে রাস্তা পার হওয়াসহ কয়েকটি কারণে এটি দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকায় পরিণত হয়েছে। দুর্ঘটনা শূন্যের কোটায় নিয়ে আসতে আমরা কাজ করছি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আজও (গতকাল) কথা বলেছি। এখানে কোনো স্পিড ব্রেকার দেওয়া যায় কিনা তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করলেও হাইওয়ে আইনের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। পদচারী সেতুর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাব।’

জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে সেখানে পদচারী সেতু করার চিন্তা-ভাবনা নেই। কেউ আগে দাবিও জানায়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি চায়, তাহলে আমরা এগিয়ে যাব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত