বিশ্বকাপের আয়োজক হতে পারবে বাংলাদেশ?

রানা আব্বাস, দুবাই
প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২১, ১০: ৫৭
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২১, ১৩: ০৮

২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ প্রায় শেষ দিকে। টুর্নামেন্টটা হওয়ার কথা ছিল ভারতে। করোনাধাক্কায় বিশ্বকাপ ভারত থেকে চলে এল আরব আমিরাত ও ওমানে। সহযোগী দুই দেশেরই অভিজ্ঞতা হলো প্রথমবারের মতো একটি আইসিসির টুর্নামেন্ট আয়োজনের। আমিরাত-ওমানের আয়োজক হওয়াটা বিশ্ব ক্রিকেটের জন্য ইতিবাচক হলেও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) জন্য ‘নেতিবাচক’ই!

কেন? বিশ্বকাপ আয়োজনের আরেকটি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী যে দাঁড়িয়ে গেল মধ্যপ্রাচ্যের দেশ দুটি। ২০২৪ থেকে ২০৩১—আইসিসির পরবর্তী চক্রে আটটি ইভেন্টের স্বাগতিক হতে আগ্রহী দেশগুলো নিজেদের প্রস্তাবনা জমা দিয়েছিল গত সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে। আটটি ইভেন্টের ছয়টিতে স্বাগতিক হওয়ার প্রস্তাবনা জমা দিয়েছিল বিসিবি।

বিসিবি এককভাবে স্বাগতিক হতে চেয়েছে ২০২৫ ও ২০২৯ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজনের শর্ত হচ্ছে, অন্তত তিনটি আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম থাকতে হবে। বাংলাদেশের সেটি আছে। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য সাত থেকে আটটি ভেন্যু থাকতে হবে। ওয়ানডে বিশ্বকাপ আয়োজনে লাগবে ১০টি স্টেডিয়াম। উপমহাদেশে ভারত বাদে কারও এককভাবে এই মুহূর্তে এ রকম আয়োজনের সক্ষমতা নেই। বাংলাদেশ তাই শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজন করতে চেয়েছে দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আর তারা পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজন করতে চায় ২০২৭ ও ২০৩১ বিশ্বকাপ।

আবার বিশ্ব ক্রিকেটের প্রতাপশালী ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) মরিয়া আগামী আট বছরের চক্রে অন্তত দুটি আইসিসির ইভেন্ট আয়োজন করতে। গুঞ্জন আছে, তারা ২০৩১ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আয়োজক হতে চায়। এ সময়ে ভারতে দুটি টুর্নামেন্ট আয়োজন হওয়া মানে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাওয়া। ক্রিকেটের বিশ্বায়ন করতে আইসিসি টুর্নামেন্ট বরাদ্দ দিতে চায় অঞ্চলভেদে। সে হিসাবে একটা আইসিসির টুর্নামেন্ট ভারতে হলে পরেরটি চলে যাবে অন্য মহাদেশে।

দুবাইয়ে আইসিসির সদর দপ্তরে চলমান ক্রিকেট বোর্ডগুলোর প্রধান নির্বাহীদের বৈঠকে যোগ দিতে আসা বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী গতকাল আজকের পত্রিকাকে ফোনে বলছিলেন, ‘ইভেন্ট বরাদ্দে কতগুলো বিষয় আছে। বরাদ্দ হবে অঞ্চল ভিত্তিতে। এখন ভারত যদি কোনোটিতে আয়োজক হয়, সেবার আমাদের আর পাওয়ার সুযোগ নেই। আমরা কেন, এই অঞ্চলের কেউ পাবে না। আরও চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, এবার যুক্তরাষ্ট্রও যোগ হয়েছে। আইসিসির গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিতে যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেট ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করার বিষয় আছে। এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আরব আমিরাত-ওমানে হওয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বী আরও বেড়েছে। আমিরাত (আইসিসির ইভেন্টের) নতুন গন্তব্য হয়ে গেছে, যেটা আমাদের জন্য ইতিবাচক নয়।’

স্বাগতিক হতে আগ্রহী ক্রিকেট বোর্ডগুলো প্রস্তাবনার যাচাই-বাছাই শেষ দিকে। সবকিছু বিবেচনা করে বণ্টনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে মঙ্গলবার আইসিসির বোর্ড সভায়, যেটিতে যোগ দিতে আজ দুবাইয়ে আসার কথা বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের। ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আইসিসির আরেকটি টুর্নামেন্টের আয়োজক হওয়াটা বাংলাদেশের জন্য ভীষণ চ্যালেঞ্জিং হলেও বিসিবির প্রধান নির্বাহী অবশ্য আশাবাদীই থাকছেন, ‘যেহেতু প্রস্তাবনা জমা দিয়েছি, আশা তো আছেই।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত