মুনাফার ফাঁদে ফেলে আড়াই কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা

শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২২, ১২: ০৬
Thumbnail image

বাগেরহাটের শরণখোলায় অল্প সময়ে বেশি মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে একটি মাল্টি পারপাস কোম্পানি শতাধিক পোশাককর্মীর কাছ থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কোম্পানিটির ৮ কর্মকর্তা টাকা হাতিয়ে নিয়ে এখন গা-ঢাকা দিয়েছে।

প্রতারণার শিকার ২১ জন পোশাক শ্রমিক নারী-পুরুষ গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে শরণখোলা প্রেসক্লাবে সাংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন। ভুক্তভোগী সবাই চট্টগ্রামে বিভিন্ন পোশাক কারখানার (গার্মেন্টস) শ্রমিক। তাঁদের বাড়ি শরণখোলা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।

এ সময় তাঁরা জানান, ২০১৮ সালে ৮ জনের একটি প্রতারক চক্র ‘রূপসা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি খোলেন। তাঁরা চট্টগ্রামের সিইপিজেড মোড়ের চৌধুরী মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় অফিস ভাড়া নিয়ে তাঁদের কার্যক্রম শুরু করেন। এরপর বিভিন্ন পোশাক কারখানায় কর্মরত সহজ সরল শ্রমিকদের লক্ষ্য করেই এই প্রতারণার ফাঁদ পাতেন। অধিক লাভের প্রলোভনে পড়ে কেউ দেড়-দুই লাখ থেকে শুরু করে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ওই কোম্পানিতে দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্প মেয়াদি ডিপিএসসহ বিভিন্ন প্যাকেজে তাঁদের কষ্টার্জিত টাকা জমা রাখেন।

কোম্পানির চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের মো. মুজিবুর রহমান। ইউনিট ম্যানেজার শরণখোলা উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের মো. নাঈম খান এবং তাঁর ভগ্নিপতি মঠবাড়িয়া উপজেলার তেঁতুলবাড়ি বাজারের হাকিম ব্যাপারীর ছেলে মো. আলমগীর ব্যাপারী হলেন কোম্পানির প্রধান উন্নয়ন কর্মকর্তা।

এই দুই শ্যালক-ভগ্নিপতি চট্টগ্রামের বিভিন্ন পোশাক কারখানায় কর্মরত শরণখোলার শ্রমিকদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করেন। প্রধান উন্নয়ন কর্মকর্তা আলমগীর ব্যাপারী প্রতারণার টাকা দিয়ে শরণখোলার উত্তর কদমতলা গ্রামে তাঁর স্ত্রী পারভিন আক্তারের নামে পাঁচ কাঠা জমি কিনে সেখানে দুইতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এ ছাড়া ইউনিট ম্যানেজার নাঈম খানও দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামে পাকা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। তারা উভয়ই এখন আত্মগোপনে রয়েছেন।

প্রতারণার শিকার শরণখোলার পোশাক শ্রমিক বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘আলমগীর ব্যাপারী এবং নাঈম খানের কথা মতো আমি তাঁদের কোম্পানিতে ১০ লাখ টাকা ডিপোজিট করি। কিন্তু এখন লাভ তো দূরের কথা আসল টাকাও পাচ্ছি না।’ অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য রূপসা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির ইউনিট ম্যানেজার মো. নাঈম খান মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি ওই প্রতিষ্ঠানটির একজন বেতনভুক্ত কর্মচারী ছিলাম। টাকা-পয়সা লেনদেনের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’

এ বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. মুজিবুর রহমান এবং প্রধান উন্নয়ন কর্মকর্তা আলমগীর ব্যাপারীর মোবাইল ফোনে কল করা হলে তাঁদের নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত