Ajker Patrika

অটোর দখলে সড়ক যানজটে নাকাল

মো. মাসুম, টঙ্গিবাড়ী (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ৩৯
অটোর দখলে সড়ক যানজটে নাকাল

মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীতে ব্যাটারিচালিত অটোমিশুকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যাটারিচালিত এসব অটোচালক উপজেলার প্রধান সড়কগুলোতে পার্ক করে সড়ক দখলে রাখেন। এতে যানজট ও ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়াই এ চালকেরা গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হয়ে যেখানে সেখানে যাত্রী ওঠানামা করেন। ফলে ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

গতকাল শনিবার সরেজমিনে উপজেলার আলদিবাজারে দেখা যায়, রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে অটো পার্ক করে সড়ক দখলে রেখেছে। এসব গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। অবাধে চলাচল করায় আলদিবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে প্রতিদিনই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া ইজিবাইক ও মিশুকচালকেরা রাস্তায় যেখানে সেখানে যাত্রী ওঠানামা করান। ব্যস্ততম রাস্তায় কোনো সিগন্যাল ছাড়া হঠাৎ গাড়ি ঘুরিয়ে ফেলেন। এতে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ব্যাটারিচালিত অটোমিশুক ছাড়াও দিনের বেলা মালবাহী ট্রাক চলাচলের কারণে অতিরিক্ত যানজট সৃষ্টি ও দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে দিনের বেলা ইট-বালুর ফিটনেসবিহীন ট্রাক অতিরিক্ত গতিতে চলাচলের কারণে অনেকের প্রাণ অকালেই ঝরে যাচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সিমন আহমেদ জানান, রাস্তার দুই পাশে অটো রাখায় এমন যানজট লেগে থাকে। এ ছাড়া পণ্য আনা-নেওয়ার মালবাহী ট্রাক ও ইটবাহী ট্রাকের কারণে এমন যানজট ও দুর্ঘটনা ঘটে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইটবাহী ট্রাকের ধাক্কায় টঙ্গিবাড়ী-বালিগাঁও সড়কে মা-মেয়ে দুজনের মৃত্যু হয়। তার পরের দিন টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আব্দুল্লাহপুরে সন্ধ্যায় ও মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার কাঠালতলা এলাকায় সকালে পৃথক দুটি ইটবাহী ট্রাকের ধাক্কায় দুজন স্কুলছাত্র প্রাণ হারায়। এসব ট্রাক দিনের বেলা অতিমাত্রায় গতিতে চলাচল করায় একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রশাসনের নজরদারিতে এনে এসব ট্রাক নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।

আলদিবাজারের ব্যবসায়ী রিপন বলেন, কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই যে যাঁর মতো যখন তখন ক্রয় করে নতুন ইজিবাইক ও মিশুক রাস্তায় নামাচ্ছেন। আগে ইজিবাইক ও মিশুক চীন থেকে আমদানি হতো। এখন বিভিন্ন এলাকার অটোগ্যারেজগুলোতে তৈরি হচ্ছে এসব বাহন।

আলদিবাজারে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতা নীরব হোসেন বলেন, এই অটোমিশুকের জন্য বাজারে ঢুকতে ও বের হতে প্রায় ১ ঘণ্টা লেগে যায়। সেতু থেকে শুরু করে হাওলাদার মার্কেট পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে অটো লাইন ধরে পার্ক করে রাখে, যেন দেখার কেউ নেই।

এদিকে একাধিক চালকের সঙ্গে কথা হলে তাঁরা জানান, তাঁদের গাড়ি রাখার কোনো স্ট্যান্ড না থাকায় রাস্তার পাশেই পার্ক করেন। এই গাড়ি চালাতে কোনো ট্রেনিং লাগে না। যিনি রিকশা চালাতে পারেন, তিনি ইজিবাইক সহজেই চালাতে পারেন। এ কারণে ইজিবাইকের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ ব্যাপারে টঙ্গিবাড়ী থানার ওসি মোল্লা সোহেব আলী বলেন, ‘আমরা পুলিশ পাঠিয়ে যতটুকু সম্ভব যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছি। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অটোমিশুকের তৎপরতা অতিমাত্রায় বেড়ে গেছে। পুলিশ গেলে গাড়ি সরিয়ে নেয়, পুলিশ চলে এলে আবার রাস্তার পাশে ভিড় জমায়। জনবল কম থাকায় সবসময় সেখানে পুলিশ রাখা সম্ভব হয় না। গত বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে মিটিং করেছি। যানজট নিরসনে লাইনম্যানের ব্যবস্থা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত