মানিকগঞ্জের সাত উপজেলায় শীতকালীন সবজিসহ রবিশস্য আবাদে ব্যস্ত চাষিরা। দেড় সপ্তাহ আগে চাষাবাদ শুরু করায় এখন মাঠে উঁকি দিচ্ছে ফসলের চারা। এ বছরে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও ইউরিয়া সারসহ কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় রবিশস্যে তেমন লাভ হবে না বলে মনে করছেন চাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে মানিকগঞ্জে প্রায় এক লাখ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজিসহ রবিশস্য আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ইতিমধ্যে ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে সবজিসহ রবিশস্য আবাদ হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রবিশস্য আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা হবে। রাসায়নিক সারের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

সদর উপজেলার উচটিয়া গ্রামের কৃষক কাদের মিয়া বলেন, গত বছর ৫০ কেজির ইউরিয়া সার প্রতি বস্তা ছিল ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। এ বছর সেই সার প্রতি বস্তা কিনতে হচ্ছে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। এ ছাড়া পটাশ এবং টিএসপি সারের দাম প্রতি বস্তায় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে।

একই অভিজ্ঞতার কথা জানান সাটুরিয়ার ধানকোড়া ইউনিয়নের নাহার গার্ডেন এলাকার সবজিচাষি মো. সেলিম মিয়া।

জেলার সাতটি উপজেলায় কম-বেশি শীতকালীন সবজির আবাদ হয়ে থাকে। সবচেয়ে বেশি সবজির আবাদ হয় মানিকগঞ্জ সদর, সাটুরিয়া ও সিঙ্গাইর উপজেলায়। এখানে উৎপাদিত সবজি জেলার চাহিদা পূরণ করে ঢাকার কারওয়ান বাজার-যাত্রাবাড়ীসহ সাভার, হেমায়েতপুর, আশুলিয়া, বাইপাইল, টঙ্গী ও গাজীপুর জেলায় বিক্রির জন্য পাঠানো হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জে চলতি বছরে ৯ হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি সরিষা আবাদের জন্য ৪৩ হাজার হেক্টর জমি, গম ৩১০ হেক্টর, ভুট্টা ১৬ হাজার হেক্টর, আলু ১ হাজার ৮৮৩ হেক্টর, মিষ্টি আলু ১০৯ হেক্টর, পদ্মা ও যমুনা নদীর ওপারে চরে চিনাবাদাম ৪ হাজার হেক্টর, আখ ৫৯৫ হেক্টর, মরিচ ৩ হাজার ২৯১ হেক্টর, পেঁয়াজ সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর, রসুন ৬১৮ হেক্টর, ধনে ৮৩ হেক্টর, মসুর ডাল ২৭৩ হেক্টর, খেসারি ডাল ২ হাজার ৭৩৬ হেক্টর, মাষকলাই ৭ হাজার ৪৫ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবু মো. এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘শীতকালীন সবজি আবাদে চাষিদের রাসায়নিকের পরিবর্তে খেতে জৈব সার ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বাজারে সারের দাম কিছুটা বাড়ায় সারের ওপর প্রান্তিক চাষিদের ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে।’