মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী
২৪ ডিসেম্বর শনিবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে জেলা, উপজেলা এবং তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই জেলা সম্মেলনগুলোতে অংশ নিচ্ছেন। বর্তমান রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন।
সম্মেলনগুলোতে দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে উপস্থিত হচ্ছেন। সব জেলা, উপজেলাতেই কমিটি গঠিত হচ্ছে। রাজনৈতিক আলোচনা, পর্যালোচনা এবং নেতৃত্ব গঠনে উল্লেখ করার মতো কোনো পরিবর্তন-চিন্তা পরিলক্ষিত হয়নি। তবে সম্মেলনগুলো বেশ জাঁকজমকপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, নেতৃত্ব নির্বাচনে প্রত্যাশা, অপ্রত্যাশার দোলাচলে অনেক জায়গায়ই দোল খেতে দেখা যাচ্ছে। তারপরও জাতীয় সম্মেলনে জেলা-উপজেলা থেকে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেবেন। দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ও নতুন নেতৃত্বের প্রত্যাশা নিয়েই যাঁরা আসবেন, তাঁদের সব প্রত্যাশা পূরণ হবে—এমনটি নয়। কিন্তু গৃহীত সিদ্ধান্ত ও নতুন নেতৃত্ব সময়ের চ্যালেঞ্জ গ্রহণে কর্মী, সমর্থক এবং জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কতটা সক্ষম হবেন, সেটিই হবে সম্মেলনে দেখার বিষয়।
সময়টি এখন বৈশ্বিক এবং অভ্যন্তরীণ আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক বিবেচনা থেকে বেশ জটিল এবং কঠিনও। এক বছর পর দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। রাজনীতির মাঠে আওয়ামী লীগের বিরোধী সব সামাজিক, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক প্রতিপক্ষ সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। ডিসেম্বর মাসটি আমাদের বিজয়ের মাস। সেই মাসেই একদিকে প্রতিপক্ষ সব শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে সংগঠিত হচ্ছে, অন্যদিকে আওয়ামী লীগ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিজেদের কর্মসূচি এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব পুনর্গঠন করার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ ১৪ বছর একটানা ক্ষমতায় থেকে দেশ শাসন করছে। এই সময়ে দেশের আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে নানা পরিবর্তন সংঘটিত হয়েছে; বিশেষ করে সামাজিক শক্তির মধ্যে নানা রূপান্তর ঘটেছে। কিন্তু রূপান্তরকে ত্বরান্বিত এবং সংহত করার যে রাজনৈতিক সচেতনতাবোধের প্রক্রিয়া গড়ে তোলা অপরিহার্য ছিল, সে ক্ষেত্রে প্রত্যাশা পূরণের মতো অবস্থা কতটা তৈরি হয়েছে—তা নিয়ে নিশ্চিত করে বলা যাবে না।
সরকার আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে যেসব পরিবর্তন ঘটাতে পেরেছে, তা অনেকটা দৃশ্যমান হলেও রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে সাংগঠনিক কাঠামো, কার্যক্রম এবং জনসম্পৃক্ততা তৃণমূল থেকে সেভাবে তুলে আনা সম্ভব হয়নি। কারণ আমাদের মতো দেশগুলোতেই শুধু নয়, পৃথিবীজুড়েই রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে মানের ভাঙাগড়া এবং অবনমনের নানা ইচ্ছা-নিরপেক্ষ ঘটনাপ্রবাহ ঘটেই চলেছে। ফলে অসংখ্য ঐতিহ্যবাহী সংগঠন কালের বিবর্তনের সঙ্গে পরিবর্তনকে জুতসইভাবে মেলাতে না পারায় দেখা দিয়েছে নতুন-পুরোনোর দ্বন্দ্ব, ভাঙাগড়ার প্রক্রিয়া। ফলে রাজনীতি এবং সংগঠন কয়েক দশকে দ্রুত পরিবর্তনশীলতার ভেতর দিয়ে চলছে। নতুন নতুন রাজনৈতিক দল ও প্রপঞ্চ আবির্ভূত হচ্ছে, যার সঙ্গে স্বার্থসংশ্লিষ্টতার তাগিদ থেকে সামাজিক শক্তি যুক্ত হচ্ছে।
বিশেষভাবে মনে রাখার বিষয়, ঔপনিবেশিকতাবিরোধী কিংবা স্বাধীনতাকামী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যেসব সামাজিক শক্তি রাজনীতিতে আবির্ভূত হয়েছিল, তাদের কর্মসূচি ও প্রভাববলয় ছিল মূলতই স্বাধীনতার অর্জন ঘরে তোলা। রাজনৈতিক নেতৃত্বও ছিল অনেক বেশি জনগণমুখী এবং দেশের স্বাধীনতা অর্জনে আত্মনিবেদিত। কিন্তু স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই স্বাধীনতাপ্রাপ্ত সব দেশের সামাজিক শক্তি, রাজনৈতিক সংগঠন, নেতৃত্ব ইত্যাদি এমন সব আকাঙ্ক্ষা ও বাস্তবতার মুখোমুখি হতে থাকে, যা রাজনীতির ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, আদর্শ, উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্যসহ সামগ্রিকতার মধ্যেই ব্যাপক ওলট-পালট সৃষ্টি করে দেয়।
এ অবস্থায় অনেক রাষ্ট্রই রাজনীতির কাঙ্ক্ষিত মান, আদর্শ, ম্যানিফেস্টো ধরে রাখতে পারেনি। বাংলাদেশে যেমন স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছরের মধ্যেই জাতির জনকসহ স্বাধীনতাসংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক শক্তি প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক ধারা-উপধারা সৃষ্টির মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল ও স্বাধীনতাকে বেহাত করার নীলনকশা বাস্তবায়ন করেছে। রাজনীতি এক ভিন্ন ধারায় পরিবর্তিত হয়েছে, যেখানে আদর্শিক অবস্থা, মূল্যবোধ ইত্যাদির মধ্যে যোজন যোজন পার্থক্য তৈরি হয়ে যায়। এই অভিজ্ঞতা শুধু আমাদের একারই নয়, বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারতেও বড় ধরনের কোনো অভ্যুত্থান না ঘটিয়েও সামাজিক সব শক্তি রাজনীতিকে নিজেদের মতো করে পুনর্গঠন করেছে। যেখানে ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, মূল্যবোধ এবং অসাম্প্রদায়িকতা অনেকটাই বিভাজিত এবং বিভ্রান্তির চোরাগলিতে আটকা পড়ে গেছে। পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাও এর থেকে মুক্তি পায়নি। সুতরাং বাংলাদেশের রাজনীতিতে ৫০ বছরে সামাজিক শক্তিগুলোর নানামাত্রিক উল্লম্ফন ঘটলেও রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক আদর্শ, অসাম্প্রদায়িকতা ইত্যাদি আদর্শের ধারণা ও চেতনা বিকৃত ও বিভাজিত হয়ে গেছে। ফলে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, অসাম্প্রদায়িকতা এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রচরিত্র নির্মাণের দায়বদ্ধতা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেই ক্রম অবনমনশীল অবস্থায় চলে গেছে।
এর অন্যতম কারণ, সামাজিক সব শক্তি বিকাশের ক্ষেত্রে জ্ঞানবিজ্ঞান, মানবিক মূল্যবোধ, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, বিশ্ব বাস্তবতা এবং নিজেদের জাতি গঠন ও উন্নয়নে মেধা, মনন, দক্ষতা ও যে ধরনের শিক্ষাব্যবস্থায় রাষ্ট্রকে পরিচালিত করার নীতি ও কৌশল অবলম্বন করার আবশ্যকতা ছিল, সেটিকে গুরুত্ব দিতে চায়নি। কারণ স্বাধীনতা-উত্তর যে নেতৃত্ব রাষ্ট্র ও রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে ক্ষমতাসীন হয়েছিল, রাষ্ট্রের নেতৃত্ব দিয়েছে, তারা স্বাধীনতাপ্রাপ্ত রাষ্ট্র গঠনের শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতির অবিমিশ্রিত ফসল তৈরিতে কোনো উদ্যোগী ভূমিকা পালন করেনি। রাষ্ট্র তাই স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা সামাজিক শক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছায় পরিচালিত হয়েছে।
কিন্তু রাজনৈতিকভাবে, প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুর্বল থেকে গেছে। এই অপূর্ণতাগুলো এখন পৃথিবীর সর্বত্রই দৃশ্যমান হচ্ছে। অনেক দেশেই অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নতি ঘটলেও মানুষের রাজনৈতিক মান বৃদ্ধির অবস্থানটি তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে পড়েছে। সে কারণে কোথাও বর্ণবাদ, কোথাও সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, জাতিগত বিরোধ ইত্যাদি মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। ফলে রাজনীতি ক্রমাগত বিভাজিত জনগোষ্ঠী তৈরিতে ভূমিকা রাখছে, যা মোটেও কাম্য ছিল না। আমাদের দেশেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি।
স্বাধীনতার অব্যবহিত পর রাষ্ট্র বিনির্মাণে যেসব নীতিকৌশল, আইন, অবকাঠামো এবং জাতি গঠনে শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তার সবকিছুই সাড়ে তিন বছরের মাথায় ছুড়ে ফেলে দেওয়া হলো। রাষ্ট্রের রাজনীতিতে পুরোনো ধ্যানধারণা এবং পশ্চাৎপদ দৃষ্টিভঙ্গি সামাজিক সব শক্তিকে রাজনীতির নেতৃত্বে আসীন করা হয়েছে। ফলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনে বাংলাদেশকে ভয়ানকভাবে উল্টো পথে পরিচালিত করতে থাকে। সেটি ক্রমেই গ্রাস করে নেয় দেশের রাজনীতিকে।
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যন্তরের সামাজিক শক্তি দ্বারা পরিকল্পিত রাজনৈতিক শাসন, সমাজমানস এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের চরিত্রকে বদলিয়ে ফেলার বিষয়গুলো বুঝতে যত দেরি করেছে, তত বেশি পঁচাত্তর-পরবর্তী ভাবাদর্শের রাজনীতি বাংলাদেশ রাষ্ট্রব্যবস্থাকে তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। বাংলাদেশ এই সময়ে স্বাধীনতাবিরোধী, সাম্প্রদায়িক, জঙ্গিবাদী, লুম্পেন ব্যবসার পুঁজিপতি, আমলা, বিভিন্ন পেশাজীবী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীতে এতটাই ভরে উঠেছে যে এখানে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চিন্তাই বেশ দূরে সরে গেছে। এই পরিবর্তনগুলো বর্তমান বৈশ্বিক, রাজনৈতিক, সামরিক, কর্তৃত্বশীল রাষ্ট্রগুলোর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদে আরও বেশি জটিল এবং শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার প্রথমে ১৯৯৬-২০০১ সালে একটি কল্যাণবাদী রাষ্ট্রচিন্তার ধারণার মধ্যেই সামাজিক শক্তির বিকাশকে রাজনীতিতে অংশগ্রহণমূলক করতে চেয়েছিল। কিন্তু সেটি আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় নানা অপশক্তির আশ্রয় ও প্রশ্রয়ে দানা বাঁধতে পারেনি। এরপর ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বাংলাদেশে এক বীভৎস রাজনীতির সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রকাশ ঘটতে দেখা যায়।
অসাম্প্রদায়িক শক্তির বিনাশ এবং রাজনীতিকে উচ্ছেদ করার ধারাবাহিক আক্রমণ, হত্যা, নির্যাতন চলতে থাকে। এরপর ২০০৯ সালের পর থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকার দেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে দিনবদলের সনদ বাস্তবায়নে যেসব পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং সমাজ বিনির্মাণে অগ্রসর হয়েছিল, তাতে সামাজিক শক্তির মধ্যে ব্যাপক অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটতে থাকে।
আওয়ামী লীগ উদীয়মান এসব শক্তিকে রাজনীতি ও দলে আশ্রয় দেওয়ার দ্বার উন্মুক্ত করে দেয়। এরা আওয়ামী লীগে ভর করলেও রাজনৈতিক আদর্শ ধারণে তাদের বেশির ভাগেরই তেমন কোনো দায়বদ্ধতা পরিলক্ষিত হয়নি। ফলে আওয়ামী লীগ দল হিসেবে বিকশিত হলেও আদর্শিকভাবে নতুন বাস্তবতায় দলকে সুসজ্জিত করার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ নেয়নি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের রাষ্ট্র পরিচালনার মিশনারি-ভিশনারি নেতৃত্বকে দলের বাইরের অপশক্তির ভয়ানক এক বিপদের মুখে পড়তে হয়েছিল; বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ নির্মাণের উদ্যোগ, শিক্ষানীতি, নারীনীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বড় ধরনের বাধা বা আঘাত মোকাবিলা করতে হয়। একটি পর্যায়ে এসে আওয়ামী লীগকে ধর্মান্ধ নানা গোষ্ঠীর সঙ্গে সমঝোতা ও আপস করতে হয়। এ নিয়ে নানা সমালোচনা আছে, কিন্তু বিকল্পটি আওয়ামী লীগের কাছে তখন খোলা ছিল না। সমাজ বাস্তবতায় এমন আপস অবস্থানে আওয়ামী রাজনীতিকে নামতে হয়েছে।
এ বাস্তবতায় এবার বৈশ্বিক নানা সংকটকে মাথায় নিয়ে আওয়ামী লীগ যে সম্মেলন করতে যাচ্ছে, তার কর্মসূচি এবং নেতৃত্বের বলয় সৃষ্টিতে যদি আদর্শের পুনরুজ্জীবনকে অবলম্বন না করা হয়, তাহলে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ প্রতিপক্ষ-অপশক্তি গ্রাস করে নেবেই। কিন্তু শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগকে সময়ের সাহসী, সৃজনশীল, প্রাজ্ঞ এবং লক্ষ্যাভিমুখী নেতৃত্বের পুনর্বিন্যাসে দলকে গড়ে তুলতেই হবে, হাতে থাকতে হবে ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ গড়ার কর্মসূচি।
লেখক: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট
২৪ ডিসেম্বর শনিবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে জেলা, উপজেলা এবং তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই জেলা সম্মেলনগুলোতে অংশ নিচ্ছেন। বর্তমান রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন।
সম্মেলনগুলোতে দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে উপস্থিত হচ্ছেন। সব জেলা, উপজেলাতেই কমিটি গঠিত হচ্ছে। রাজনৈতিক আলোচনা, পর্যালোচনা এবং নেতৃত্ব গঠনে উল্লেখ করার মতো কোনো পরিবর্তন-চিন্তা পরিলক্ষিত হয়নি। তবে সম্মেলনগুলো বেশ জাঁকজমকপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, নেতৃত্ব নির্বাচনে প্রত্যাশা, অপ্রত্যাশার দোলাচলে অনেক জায়গায়ই দোল খেতে দেখা যাচ্ছে। তারপরও জাতীয় সম্মেলনে জেলা-উপজেলা থেকে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেবেন। দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ও নতুন নেতৃত্বের প্রত্যাশা নিয়েই যাঁরা আসবেন, তাঁদের সব প্রত্যাশা পূরণ হবে—এমনটি নয়। কিন্তু গৃহীত সিদ্ধান্ত ও নতুন নেতৃত্ব সময়ের চ্যালেঞ্জ গ্রহণে কর্মী, সমর্থক এবং জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কতটা সক্ষম হবেন, সেটিই হবে সম্মেলনে দেখার বিষয়।
সময়টি এখন বৈশ্বিক এবং অভ্যন্তরীণ আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক বিবেচনা থেকে বেশ জটিল এবং কঠিনও। এক বছর পর দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। রাজনীতির মাঠে আওয়ামী লীগের বিরোধী সব সামাজিক, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক প্রতিপক্ষ সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। ডিসেম্বর মাসটি আমাদের বিজয়ের মাস। সেই মাসেই একদিকে প্রতিপক্ষ সব শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে সংগঠিত হচ্ছে, অন্যদিকে আওয়ামী লীগ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিজেদের কর্মসূচি এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব পুনর্গঠন করার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ ১৪ বছর একটানা ক্ষমতায় থেকে দেশ শাসন করছে। এই সময়ে দেশের আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে নানা পরিবর্তন সংঘটিত হয়েছে; বিশেষ করে সামাজিক শক্তির মধ্যে নানা রূপান্তর ঘটেছে। কিন্তু রূপান্তরকে ত্বরান্বিত এবং সংহত করার যে রাজনৈতিক সচেতনতাবোধের প্রক্রিয়া গড়ে তোলা অপরিহার্য ছিল, সে ক্ষেত্রে প্রত্যাশা পূরণের মতো অবস্থা কতটা তৈরি হয়েছে—তা নিয়ে নিশ্চিত করে বলা যাবে না।
সরকার আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে যেসব পরিবর্তন ঘটাতে পেরেছে, তা অনেকটা দৃশ্যমান হলেও রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে সাংগঠনিক কাঠামো, কার্যক্রম এবং জনসম্পৃক্ততা তৃণমূল থেকে সেভাবে তুলে আনা সম্ভব হয়নি। কারণ আমাদের মতো দেশগুলোতেই শুধু নয়, পৃথিবীজুড়েই রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে মানের ভাঙাগড়া এবং অবনমনের নানা ইচ্ছা-নিরপেক্ষ ঘটনাপ্রবাহ ঘটেই চলেছে। ফলে অসংখ্য ঐতিহ্যবাহী সংগঠন কালের বিবর্তনের সঙ্গে পরিবর্তনকে জুতসইভাবে মেলাতে না পারায় দেখা দিয়েছে নতুন-পুরোনোর দ্বন্দ্ব, ভাঙাগড়ার প্রক্রিয়া। ফলে রাজনীতি এবং সংগঠন কয়েক দশকে দ্রুত পরিবর্তনশীলতার ভেতর দিয়ে চলছে। নতুন নতুন রাজনৈতিক দল ও প্রপঞ্চ আবির্ভূত হচ্ছে, যার সঙ্গে স্বার্থসংশ্লিষ্টতার তাগিদ থেকে সামাজিক শক্তি যুক্ত হচ্ছে।
বিশেষভাবে মনে রাখার বিষয়, ঔপনিবেশিকতাবিরোধী কিংবা স্বাধীনতাকামী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যেসব সামাজিক শক্তি রাজনীতিতে আবির্ভূত হয়েছিল, তাদের কর্মসূচি ও প্রভাববলয় ছিল মূলতই স্বাধীনতার অর্জন ঘরে তোলা। রাজনৈতিক নেতৃত্বও ছিল অনেক বেশি জনগণমুখী এবং দেশের স্বাধীনতা অর্জনে আত্মনিবেদিত। কিন্তু স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই স্বাধীনতাপ্রাপ্ত সব দেশের সামাজিক শক্তি, রাজনৈতিক সংগঠন, নেতৃত্ব ইত্যাদি এমন সব আকাঙ্ক্ষা ও বাস্তবতার মুখোমুখি হতে থাকে, যা রাজনীতির ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, আদর্শ, উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্যসহ সামগ্রিকতার মধ্যেই ব্যাপক ওলট-পালট সৃষ্টি করে দেয়।
এ অবস্থায় অনেক রাষ্ট্রই রাজনীতির কাঙ্ক্ষিত মান, আদর্শ, ম্যানিফেস্টো ধরে রাখতে পারেনি। বাংলাদেশে যেমন স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছরের মধ্যেই জাতির জনকসহ স্বাধীনতাসংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক শক্তি প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক ধারা-উপধারা সৃষ্টির মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল ও স্বাধীনতাকে বেহাত করার নীলনকশা বাস্তবায়ন করেছে। রাজনীতি এক ভিন্ন ধারায় পরিবর্তিত হয়েছে, যেখানে আদর্শিক অবস্থা, মূল্যবোধ ইত্যাদির মধ্যে যোজন যোজন পার্থক্য তৈরি হয়ে যায়। এই অভিজ্ঞতা শুধু আমাদের একারই নয়, বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারতেও বড় ধরনের কোনো অভ্যুত্থান না ঘটিয়েও সামাজিক সব শক্তি রাজনীতিকে নিজেদের মতো করে পুনর্গঠন করেছে। যেখানে ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, মূল্যবোধ এবং অসাম্প্রদায়িকতা অনেকটাই বিভাজিত এবং বিভ্রান্তির চোরাগলিতে আটকা পড়ে গেছে। পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাও এর থেকে মুক্তি পায়নি। সুতরাং বাংলাদেশের রাজনীতিতে ৫০ বছরে সামাজিক শক্তিগুলোর নানামাত্রিক উল্লম্ফন ঘটলেও রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক আদর্শ, অসাম্প্রদায়িকতা ইত্যাদি আদর্শের ধারণা ও চেতনা বিকৃত ও বিভাজিত হয়ে গেছে। ফলে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, অসাম্প্রদায়িকতা এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রচরিত্র নির্মাণের দায়বদ্ধতা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেই ক্রম অবনমনশীল অবস্থায় চলে গেছে।
এর অন্যতম কারণ, সামাজিক সব শক্তি বিকাশের ক্ষেত্রে জ্ঞানবিজ্ঞান, মানবিক মূল্যবোধ, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, বিশ্ব বাস্তবতা এবং নিজেদের জাতি গঠন ও উন্নয়নে মেধা, মনন, দক্ষতা ও যে ধরনের শিক্ষাব্যবস্থায় রাষ্ট্রকে পরিচালিত করার নীতি ও কৌশল অবলম্বন করার আবশ্যকতা ছিল, সেটিকে গুরুত্ব দিতে চায়নি। কারণ স্বাধীনতা-উত্তর যে নেতৃত্ব রাষ্ট্র ও রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে ক্ষমতাসীন হয়েছিল, রাষ্ট্রের নেতৃত্ব দিয়েছে, তারা স্বাধীনতাপ্রাপ্ত রাষ্ট্র গঠনের শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতির অবিমিশ্রিত ফসল তৈরিতে কোনো উদ্যোগী ভূমিকা পালন করেনি। রাষ্ট্র তাই স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা সামাজিক শক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছায় পরিচালিত হয়েছে।
কিন্তু রাজনৈতিকভাবে, প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুর্বল থেকে গেছে। এই অপূর্ণতাগুলো এখন পৃথিবীর সর্বত্রই দৃশ্যমান হচ্ছে। অনেক দেশেই অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নতি ঘটলেও মানুষের রাজনৈতিক মান বৃদ্ধির অবস্থানটি তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে পড়েছে। সে কারণে কোথাও বর্ণবাদ, কোথাও সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, জাতিগত বিরোধ ইত্যাদি মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। ফলে রাজনীতি ক্রমাগত বিভাজিত জনগোষ্ঠী তৈরিতে ভূমিকা রাখছে, যা মোটেও কাম্য ছিল না। আমাদের দেশেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি।
স্বাধীনতার অব্যবহিত পর রাষ্ট্র বিনির্মাণে যেসব নীতিকৌশল, আইন, অবকাঠামো এবং জাতি গঠনে শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তার সবকিছুই সাড়ে তিন বছরের মাথায় ছুড়ে ফেলে দেওয়া হলো। রাষ্ট্রের রাজনীতিতে পুরোনো ধ্যানধারণা এবং পশ্চাৎপদ দৃষ্টিভঙ্গি সামাজিক সব শক্তিকে রাজনীতির নেতৃত্বে আসীন করা হয়েছে। ফলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনে বাংলাদেশকে ভয়ানকভাবে উল্টো পথে পরিচালিত করতে থাকে। সেটি ক্রমেই গ্রাস করে নেয় দেশের রাজনীতিকে।
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যন্তরের সামাজিক শক্তি দ্বারা পরিকল্পিত রাজনৈতিক শাসন, সমাজমানস এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের চরিত্রকে বদলিয়ে ফেলার বিষয়গুলো বুঝতে যত দেরি করেছে, তত বেশি পঁচাত্তর-পরবর্তী ভাবাদর্শের রাজনীতি বাংলাদেশ রাষ্ট্রব্যবস্থাকে তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। বাংলাদেশ এই সময়ে স্বাধীনতাবিরোধী, সাম্প্রদায়িক, জঙ্গিবাদী, লুম্পেন ব্যবসার পুঁজিপতি, আমলা, বিভিন্ন পেশাজীবী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীতে এতটাই ভরে উঠেছে যে এখানে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চিন্তাই বেশ দূরে সরে গেছে। এই পরিবর্তনগুলো বর্তমান বৈশ্বিক, রাজনৈতিক, সামরিক, কর্তৃত্বশীল রাষ্ট্রগুলোর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদে আরও বেশি জটিল এবং শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার প্রথমে ১৯৯৬-২০০১ সালে একটি কল্যাণবাদী রাষ্ট্রচিন্তার ধারণার মধ্যেই সামাজিক শক্তির বিকাশকে রাজনীতিতে অংশগ্রহণমূলক করতে চেয়েছিল। কিন্তু সেটি আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় নানা অপশক্তির আশ্রয় ও প্রশ্রয়ে দানা বাঁধতে পারেনি। এরপর ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বাংলাদেশে এক বীভৎস রাজনীতির সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রকাশ ঘটতে দেখা যায়।
অসাম্প্রদায়িক শক্তির বিনাশ এবং রাজনীতিকে উচ্ছেদ করার ধারাবাহিক আক্রমণ, হত্যা, নির্যাতন চলতে থাকে। এরপর ২০০৯ সালের পর থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকার দেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে দিনবদলের সনদ বাস্তবায়নে যেসব পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং সমাজ বিনির্মাণে অগ্রসর হয়েছিল, তাতে সামাজিক শক্তির মধ্যে ব্যাপক অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটতে থাকে।
আওয়ামী লীগ উদীয়মান এসব শক্তিকে রাজনীতি ও দলে আশ্রয় দেওয়ার দ্বার উন্মুক্ত করে দেয়। এরা আওয়ামী লীগে ভর করলেও রাজনৈতিক আদর্শ ধারণে তাদের বেশির ভাগেরই তেমন কোনো দায়বদ্ধতা পরিলক্ষিত হয়নি। ফলে আওয়ামী লীগ দল হিসেবে বিকশিত হলেও আদর্শিকভাবে নতুন বাস্তবতায় দলকে সুসজ্জিত করার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ নেয়নি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের রাষ্ট্র পরিচালনার মিশনারি-ভিশনারি নেতৃত্বকে দলের বাইরের অপশক্তির ভয়ানক এক বিপদের মুখে পড়তে হয়েছিল; বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ নির্মাণের উদ্যোগ, শিক্ষানীতি, নারীনীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বড় ধরনের বাধা বা আঘাত মোকাবিলা করতে হয়। একটি পর্যায়ে এসে আওয়ামী লীগকে ধর্মান্ধ নানা গোষ্ঠীর সঙ্গে সমঝোতা ও আপস করতে হয়। এ নিয়ে নানা সমালোচনা আছে, কিন্তু বিকল্পটি আওয়ামী লীগের কাছে তখন খোলা ছিল না। সমাজ বাস্তবতায় এমন আপস অবস্থানে আওয়ামী রাজনীতিকে নামতে হয়েছে।
এ বাস্তবতায় এবার বৈশ্বিক নানা সংকটকে মাথায় নিয়ে আওয়ামী লীগ যে সম্মেলন করতে যাচ্ছে, তার কর্মসূচি এবং নেতৃত্বের বলয় সৃষ্টিতে যদি আদর্শের পুনরুজ্জীবনকে অবলম্বন না করা হয়, তাহলে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ প্রতিপক্ষ-অপশক্তি গ্রাস করে নেবেই। কিন্তু শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগকে সময়ের সাহসী, সৃজনশীল, প্রাজ্ঞ এবং লক্ষ্যাভিমুখী নেতৃত্বের পুনর্বিন্যাসে দলকে গড়ে তুলতেই হবে, হাতে থাকতে হবে ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ গড়ার কর্মসূচি।
লেখক: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট
পর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে‘বঙ্গবন্ধু’ পদবি বিলীন হবে না। হতে পারে না। যেমনটি ‘দেশবন্ধু’ চিত্তরঞ্জন দাশের পদবি বিলীন হয়নি। ইতিহাসে এসব পদবি অম্লান ও অক্ষয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ছিল অনন্যসাধারণ। আপনজনকে তো অবশ্যই, শত্রুপক্ষের লোকেরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদের
২ দিন আগে