Ajker Patrika

যমুনার পানি কমলেও বাঁধে ভাঙন অব্যাহত

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ জুন ২০২২, ১৩: ৪২
যমুনার পানি কমলেও  বাঁধে ভাঙন অব্যাহত

সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি কমলেও নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে জেলার কাজীপুর, শাহজাদপুর ও চৌহালীতে নদীভাঙনের তীব্রতা বেশি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ভাঙন রোধে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। সর্বশেষ চলতি সপ্তাহে কাজীপুর উপজেলার মাইজবাড়ী ইউনিয়নের ঢেকুরিয়া হাটের পূর্বপাশের ইকোপার্ক এলাকায় যমুনা নদীর তীর প্রতিরক্ষা কাজের ৮০ মিটার এলাকায় ধস দেখা দেয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জের কাজীপুর পয়েন্টে যমুনার পানি বাড়তে শুরু করে। পানিতে তলিয়ে যায় নদীর বুকে জেগে ওঠা ছোট ছোট চরসমূহ। সেই সঙ্গে নদীর ডান তীরের সংরক্ষণ কাজের অংশে প্রচণ্ড ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়। পানি কমা শুরু হলে নদীর তীব্র স্রোতের কারণে ডান তীরে এসে আছড়ে পড়তে থাকে। পুরো নদীর মূল স্রোতোধারা এখন তীর সংরক্ষণ প্রকল্প এলাকার ১৫০ গজের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে বিভিন্ন পয়েন্টে দেখা দিয়েছে ধস।

তবে এই ধসের জন্য সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা নদী থেকে এলোপাতাড়িভাবে বালু উত্তোলনকে দায়ী করছেন। তাঁদের ভাষ্যমতে তীর সংরক্ষণ এলাকার ১০০ থেকে ৫০০ গজের মধ্য থেকে শুষ্ক মৌসুমে বালু উত্তোলনের কারণে নদীর মূল স্রোতোধারা এখন ডান তীরের দিকে আঘাত করছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী হায়দার আলী বলেন, ‘শুষ্ক মৌসুমে নদীতীর সংরক্ষণ প্রকল্পের ৫০০ গজের মধ্যে থেকে এলোপাতাড়িভাবে বালু উত্তোলন করা হয়েছে। আমাদের নিষেধ মানা হয়নি। সেই উত্তোলন করা বালু প্রকল্পের সি সি ব্লকের ওপর দিয়ে ট্রাকে বহন করে নেওয়া হয়েছে। এতে নদীর মূল স্রোত এখন ডান তীরে এসে সরাসরি আঘাত করায় ধস শুরু হয়েছে।

হায়দার আলী আরও বলেন, কাজীপুরে নদীর তীর প্রতিরক্ষা কাজের ধস নামায় বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। এখান থেকে ৫০০ মিটার দূরে কাজীপুর রক্ষাবাঁধ রয়েছে। প্রতিরক্ষা কাজে ধস ঠেকাতে প্রাথমিকভাবে ৮ হাজার বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। বর্তমানে যে অবস্থা রয়েছে তাতে প্রাথমিকভাবে সমস্যা নাই।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক হাসানুর রহমান বলেন, সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষাবাঁধ এলাকায় পানির বিপৎসীমা ধরা হয় ১৩ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত এই পয়েন্টে পানি রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৭৯ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ২৫৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

অপরদিকে কাজীপুরে ইকোপার্ক পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ধরা হয় ১৫ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। গতকাল সকাল ৬টায় এই পয়েন্টে পানি রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার। এ ছাড়া গত সোমবার ১২ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার পানি রেকর্ড করা হয়। গতকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত এই পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৬০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।

উপজেলা চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সিরাজী বলেন, ‘আমাদের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয় ধসের বিষয়টি জানেন। তিনি দেশের বাইরে আছেন। তবে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করছেন। পাউবো কাজ শুরু করেছে। ভাঙন ও ধস ঠেকাতে জিওব্যাগ ফেলা অব্যাহত থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত