বিএনপি-জাপা সিদ্ধান্তহীনতায় আ.লীগে একাধিক প্রার্থী

ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ
Thumbnail image

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আমেজ শেষ হতে না হতেই তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) নির্বাচনের। আগামী ৯ মার্চ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) হবে এই ভোট। বিএনপি ও জাতীয় পার্টি (জাপা) সিটি নির্বাচনে অংশ নিতে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগলেও আলোচনায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য পাঁচ মেয়র প্রার্থী। কৌশলে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন দলের কাউন্সিলর প্রার্থীরাও।

২০১৯ সালের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইকরামুল হক টিটু মেয়র নির্বাচিত হন। ভোট হয় কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে। এবার মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিটি মেয়র টিটুসহ আওয়ামী লীগ থেকে সম্ভাব্য পাঁচ মেয়র প্রার্থী কেন্দ্রীয় নেতাদের সমর্থন প্রত্যাশা করছেন।

সম্ভাব্য অন্য চার প্রার্থী হলেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এহতেশামূল আলম, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাদেক খান মিল্কি টজু, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যাপক গোলাম ফেরদৌস জিল্লু ও নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য অ্যাডভোকেট ফারমার্জ আল নূর রাজীব।

সিটি মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, ‘আমি সার্বক্ষণিক নগরবাসীর প্রত্যাশা পূরণে কাজ করেছি। এ ছাড়া একজন জনপ্রতিনিধির বড় দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকা।  আমি নগরবাসীর পাশে থেকে তাদের প্রত্যাশা পূরণ করার চেষ্টা করেছি। সেই দাবি নিয়েই আবারও প্রার্থী হচ্ছি।’ নিশ্চয়ই দীর্ঘদিনের কর্মের মূল্যায়ন নগরবাসী করবেন এবং আগামী দিনে তাঁকে আবারও সেবা করার সুযোগ দেবেন বলে আশা করছেন টিটু। 

আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী গোলাম ফেরদৌস জিল্লু বলেন, ‘প্রার্থিতা উন্মুক্ত থাকার কারণেই আমি প্রার্থী হচ্ছি এবং আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। কারণ, নগরীতে নানান নাগরিক সমস্যা বিদ্যমান। আমি ছোটবেলা থেকেই রাজনীতি করি। সে জন্য জনসম্পৃক্ততাও যথেষ্ট রয়েছে। সংসদ নির্বাচনে আমি যেহেতু নৌকার পক্ষে কাজ করেছি, সে জন্য নেতা-কর্মীসহ জনগণ আমাকেই বেছে নেবেন বলে আমার প্রত্যাশা।’

তবে নির্বাচনে অংশ নিতে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতারা। মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এম এ হান্নান খান বলেন, ‘নির্বাচন বর্জনের আন্দোলনের পাশাপাশি মাঠে আমার একটা অবস্থান আছে। যদি কেন্দ্র থেকে নির্বাচন করার নির্দেশনা আসে, তাহলে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। এর আগে দুটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেও দলীয় স্বার্থে ছাড় দিয়েছি। এ ছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ড পর্যায়ে বিএনপিমনা কাউন্সিলররা হয়তো কিছুটা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে আমরা কেন্দ্রীয় নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছি।’

মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু মো. মূসা সরকার বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে আমি ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনে অংশ নিয়েছিলাম। তবে ভোটের পরিবেশ আমার কাছে ভালো মনে হয়নি। সিটি নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার খুব ইচ্ছা ছিল; কিন্তু সুষ্ঠু ভোট না হওয়ার শঙ্কায় অংশগ্রহণ করব না। এ ছাড়া এবার দলও চাচ্ছে না কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। তাই এখন পর্যন্ত অনেকটাই নিশ্চিত করে বলা যায়, জাতীয় পার্টি থেকে সিটি নির্বাচনে কেউ অংশগ্রহণ করছেন না। কাউন্সিলর পদে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।’

১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান হবি বলেন, ‘আমি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে কোনো পদ-পদবি আমার নেই। বিগত নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হয়েছি। সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে চেষ্টা করেছি। এবারও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে বিএনপির নীতিনির্ধারণী থেকে নির্বাচন করা না-করা নিয়ে কোনো নির্দেশনা আসেনি।’

২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির হোসেন বিল্লাল। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে কে অংশগ্রহণ করল, না করল তা নিয়ে আমি ভাবছি না। তবে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য পাঁচ বছর ধরে এলাকায় কাজ করে যাচ্ছি। এলাকায় আমার বেশ সাড়াও রয়েছে। আশা করছি, জনগণের রায় এবার আমার পক্ষে আসবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত