মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপের স্বপ্ন দেখিয়ে কোটিপতি কালাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২২, ১৫: ৪৩
Thumbnail image

স্বপ্ন ছিল ইউরোপের দেশ রোমানিয়ায় গিয়ে পরিবারের দুঃখ ঘোচাবেন মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীর মো. সায়হান দেওয়ান। সে আশায় দেড় লক্ষ টাকাও জমা দেন আবুল কালামের কাছে। কিন্তু কয়েক মাস কেটে যাওয়ার পরও ভিসার দেখা মেলেনি।

রোমানিয়াতে ফ্যাক্টরিতে কাজ দেওয়ার কথা বলে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা নেওয়া হয় মুন্সিগঞ্জের রামপাল ইউনিয়নের আরেক বাসিন্দা আমিনুল ইসলামের কাছ থেকেও। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কালামের এজেন্ট শাহ আলমকে এ টাকা দেন আমিনুল। কিন্তু এরপর আর শাহ আলমের দেখা পাননি তিনি।

এভাবে প্রায় অর্ধশত লোককে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথা বলে তাঁদের কাছ থেকে গত পাঁচ বছরে প্রায় তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নেন আদম ব্যবসায়ী ও মানব পাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা মো. আবুল কালাম। তাঁর ভুয়া ভিসা, বিএমইটি কার্ড নিয়ে এয়ারপোর্টে গিয়ে ফিরে এসেছেন অনেকেই। ফিরে এসে কালামের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে আর পাওয়া যেত না তাঁকে।

গতকাল সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‍্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। কালামের এজেন্ট শাহ আলমের সহযোগিতায় ঢাকার পল্টন থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-৩।

আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, পল্টন এলাকার একটি মানব পাচার ও প্রতারক চক্র মধ্যপ্রাচ্য হয়ে ইউরোপে প্রেরণের প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশ যেতে ইচ্ছুক মানুষের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাঁদের সর্বস্বান্ত করছে এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার রাতে পল্টন থেকে আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় আবুল কালামের কাছ থেকে ১৪টি পাসপোর্ট, ৬টি নকল বিএমইটি কার্ড, আর্থিক লেনদেনের বিভিন্ন লেজার, রেজিস্টার এবং ডায়েরি উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রাথমিক অনুসন্ধান ও আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কালামের জনশক্তি রপ্তানির কোনো লাইসেন্স নেই। কিন্তু তিনি দীর্ঘদিন ধরে জনশক্তি রপ্তানির নামে অবৈধভাবে ভ্রমণ ভিসার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে লোক প্রেরণ করে আসছে। প্রলোভন দেখিয়ে ধাপে ধাপে জনপ্রতি ৫-৭ লক্ষ টাকা করে হাতিয়ে প্রায় তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

র‍্যাবের কর্মকর্তা আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, কালাম চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। ২০০৪ সালে ফ্রি ভিসায় দুবাই যান তিনি। ২০১১ সালে দেশে ফিরেন। ২০১৭ সাল থেকে অবৈধভাবে জনশক্তি বিদেশে প্রেরণ ও প্রতারণা শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত