ভাঙনে দিশেহারা মানুষ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
Thumbnail image

ফরিদপুরে পদ্মা ও মধুমতী নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। কয়েক সপ্তাহের ভাঙনে ফসলি জমি, বসতভিটাসহ বিলীন হয়ে গেছে রাস্তা। অব্যাহত ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে মধুমতীর ভাঙন শুরু হয়েছে ১৫ দিন ধরে। অব্যাহত ভাঙনের কারণে এখন হুমকির মুখে জেলার সব থেকে বড় আশ্রয়ণ প্রকল্প। এখানকার বাসিন্দারা বলছেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যার উদ্যোগে আমরা যাঁরা গৃহহীন ছিলাম তাঁরা সবাই বাসস্থান পেয়েছি; কিন্তু আগ্রাসী মধুমতী নদীর ভাঙনে না জানি কবে সরকারের দেওয়া এ আশ্রয়টুকু হারাতে হয়।

এই উপজেলার চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদ হাসান বলেন, মধুমতীর ভাঙন এ উপজেলায় দীর্ঘদিনের। বিষয়টি নিয়ে বহুবার উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করেছি, আশ্বাসও পেয়েছি; কিন্তু স্থায়ী কোনো প্রকল্প নেওয়া হয়নি। এখন সরকারের স্বপ্ন নগর আশ্রয়ণ প্রকল্পটি হুমকির মুখে রয়েছে।

এই উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইনামুল হাসান বলেন, চলতি মাসেই ফসলি জমি, সরকারি রাস্তা ও কয়েকটি বসতবাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। আমরা এই ভাঙন রোধে স্থায়ী সরকারি উদ্যোগ দেখতে চাই।

এদিকে ফরিদপুর সদরের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে ইউসুফ মাতুব্বরের ডাঙ্গিগ্রাম এলাকায় পদ্মা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এক সপ্তাহে পদ্মা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে বসতভিটা, ফসলি জমি, রাস্তা। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে বেশ কিছু স্থাপনা।

ওই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাত দিনে ওই এলাকার ৪০টি পরিবার হারিয়েছে বসতভিটা। বিলীন হয়ে গেছে কয়েক একর ফসলি জমি। ভেঙে গেছে রাস্তার এক কিলোমিটার অংশ।

ওই এলাকার বাসিন্দা কৃষক আবজাল হোসেন বলেন, নদীগর্ভে তাঁর বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। ওই ভিটায় মোট চারটি ঘর ছিল।

সাবিনা পারভিন নামের এক গৃহবধূ বলেন, তাঁর তিনটি বসতঘরের ভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

এলাকার বাসিন্দা শাহেদা বেগম বলেন, ভাঙনের কবলে পড়ে তাঁর বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। সেখানে তিনটি ঘর ছিল। তাঁরা ঘরবাড়ি ভেঙে দূরে অন্যের জায়গায় এসে আপাতত মাথা গুঁজে আছেন।

নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাকুজ্জামান বলেন, ভাঙনের বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিপুল চন্দ্র দাস ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটন ঢালী গত রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ভাঙনের শিকার পরিবারের একটি তালিকা করে সদর উপজেলায় জমা দেওয়া হয়েছে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বলেন, তিনি সরেজমিনে ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ভাঙনরোধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, এ জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম সাহা বলেন, এই ভাঙন চলছে ফরিদপুর শহর রক্ষা বাঁধের বাইরের অংশে। ভাঙনের বিষয়টি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। স্কুল-মাদ্রাসা ও কমিউনিটি ক্লিনিক যাতে না ভাঙে সে ব্যাপারে আমরা তৎপর। প্রয়োজন হলে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত