কুয়েট ছাত্রলীগ নেতাসহ নয় শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

খুলনা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ৩২
Thumbnail image

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হওয়ায় ছাত্রলীগ নেতাসহ নয় শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও তথ্য শাখা থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন গত মঙ্গলবার দুপুরে মারা যান। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁকে লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ তোলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে তাঁদের দুদিনের বিক্ষোভের পর গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়। হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের।

গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখার বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অধ্যাপক সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার বিষয়টি ২ ও ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৭৬তম (জরুরি) সভায় উত্থাপন করা হয়। সেখানে সিসিটিভির ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্যাদি পর্যালোচনা করে বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা প্রতীয়মান হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশৃঙ্খলা ও আচরণবিধির আলোকে অসদাচরণের আওতায় সিন্ডিকেট নয় শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সাময়িক বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী সাদমান নাহিয়ান সেজান, সিই বিভাগের শিক্ষার্থী মো. তাহামিদুল হক ইশরাক, এলই বিভাগের মো. সাদমান সাকিব, এলই বিভাগের আ. স. ম. রাগিব আহসান মুন্না, সিই বিভাগের মাহমুদুল হাসান, এমই বিভাগের মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান, সিএসই বিভাগের মো. রিয়াজ খান নিলয়, এমই বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ রিফাত ও এমএসই বিভাগের শিক্ষার্থী মো. নাইমুর রহমান অন্তু।

এ ছাড়া ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িত অপরাধীদের শনাক্ত করাসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে নতুন করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

অধ্যাপক সেলিম হোসেনের মৃত্যুতে যদি অস্বাভাবিকতা পাওয়া যায়, তাহলে দায়ীদের বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা

নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এ কথা জানান তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, তাঁর মৃত্যু অস্বাভাবিক কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অস্বাভাবিক হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিচারের দাবিতে কুমারখালীতে মানববন্ধন শিক্ষক সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত ও বিচারের দাবিতে গতকাল দুপুরে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রাম ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছেন তাঁর স্বজন, বাল্যবন্ধু ও এলাকাবাসী।

এ সময় সেলিম হোসেনের বাবা শুকুর আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি অসহায় ও গরিব মানুষ। অনেক কষ্ট করে সহায়সম্বল বিক্রি করে ছেলে মানুষ করেছিলাম। আমার সব শেষ। আমি এখন নিঃস্ব। এত বড় ঘটনা ঘটে গেল; কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজখবর নেয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত