বাসব রায়
প্রতিবছর দুর্গাপূজা আসে, আবার বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবীর বিদায় হয়। আবহমানকালের এই ধর্মীয় সংস্কার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে পূজার সঙ্গে থাকে একটা প্রাণবন্ত উৎসবমুখরতা। শরৎকালের প্রারম্ভেই বা তারও আগে থেকে সব রকম প্রস্তুতি নিতে থাকে পূজাভাবনার লোকজন। হৃদয়ের পবিত্রতম উচ্ছ্বাস ও ভালোবাসা দিয়ে মানুষ জাগরিত হয় এবং দেবীর কাছে শুভশক্তির বিজয়ের নিশ্চয়তা প্রার্থনা করে। পুরাণ শাস্ত্র অনুযায়ী এসব পূজা-পার্বণের নানাবিধ কর্মকাণ্ড থাকতে পারে; চণ্ডীপাঠের একটি অনবদ্য রেওয়াজ, ১০৮টি নীলপদ্ম, কলাবউ, নবমীর বিশেষ ভোগসহ নানা আয়োজনে ভরপুর থাকে মা দেবীর আগমন এবং বিসর্জন পর্যন্ত যা কিছু। অসুরবিনাশের উদ্দেশ্য এবং কল্যাণকর জগতের কামনাই এই পূজার মূল প্রতিপাদ্য। সনাতনীরা গভীর শ্রদ্ধাভরে গুরুত্ববহ এই তিথিকে উদ্যাপন করে।
পৌরাণিক একটি প্রথা থেকে এর যাত্রা শুরু; আজ পর্যন্ত তা অবিরাম গতি নিয়ে চলমান। চেতনায় বিশ্বাসের জোর শক্ত না হলে এতটা পথ অতিক্রম করা দুঃসাধ্য। মনের ভক্তি ও আনন্দময় অভিব্যক্তির জাগ্রত প্রকাশ দুর্গাপূজা। দশভুজা মায়ের কাছে কতজনের কত রকমের প্রার্থনা! হয়তো কারও কারও প্রার্থনা অবশ্যই মঞ্জুর হয়। কারও কারও আগামীর জন্য পেইন্ডিং থেকে যায়। আমি অনেকবার অনেকভাবে অনেক কিছুই চেয়েছি এবং সেই সব নিঃসন্দেহে কায়মনোবাক্যে তো বটেই; তবে ফলাফল বরাবরই হতাশাব্যঞ্জক। সবার জন্য সবটা নয়। এখন গ্রাম বা শহরে একইভাবে পূজাগুলো হয়ে থাকে। বরং গ্রামের পূজার এখন যা দাপট ও প্রতিপত্তি, তা দেখে শহরেরগুলো চুপসে গেছে। কৃষ্টি-সভ্যতা এসব এখন সত্যিই সর্বজনীন। কয়েক দশক আগেও এমনটি ছিল না। পূজার বাজার করার ক্লান্তিহীন ঘর্মাক্ত দৌড়ঝাঁপ; অথচ একটি সুখ, নিরলস আনন্দ কাজ করে এর মধ্যে। কী আনন্দ, কী আনন্দ!
দেবী দুর্গা অসুরকে বধ করেছিলেন এবং দেবীর তেজের নিঃসারণে আকাশ-পাতাল-মর্ত্য কাঁপিয়ে দিয়ে, ঝাঁকিয়ে দিয়ে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয় বলে শাস্ত্রে উল্লেখ পাই। এরই ধারাবাহিকতায় আজও নানাভাবে নানা রকমের অসুরবধের প্রক্রিয়া চলমান। রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে যুদ্ধ, গোত্রে গোত্রে দ্বন্দ্ব, ধর্মে ধর্মে হানাহানি—সবখানেই অসুর আবার সবখানেই দেবী বা দেবতা। পূজার বাহারসহ খরচাদিতে কোটি কোটি টাকার প্রয়োজন হয়; কয়েক দিনের চেতনাকে ইঞ্চি পরিমাণ জাগিয়ে তুলতে হাজার কোটি ব্যয়! বলা বাহুল্য, এসব একধরনের ধর্মহীন চেতনার আবেগমাত্র। তারপর শেষ হলে সবকিছুই নীরব, আবার আগের মতোই চলমান।
অন্তরের খরচাদি বাড়ানো দরকার, ধর্মীয় মতবাদকে সর্বজনীনতা দান করতে করণীয় সবটাই করতে হবে। মানবিক গুণাবলির প্রয়োগ না হলে অমন ধর্মের বাজারদর বর্তমানে নেই এবং এসব ধর্মমতকে মানুষ আর গুরুত্ব দিতে চায় না। দেবী বা দেবতার সন্তুষ্টি তখনই সম্ভব, যদি মর্ত্যের দেবী ও দেবতারা খুশি হন। মানসিকতার উন্নয়ন এবং মানবিক বিকাশের যাবতীয় উপচার সহযোগে সামাজিক গোষ্ঠীগুলো এগিয়ে এলে পূজার সার্থকতা রক্ষা পায়, নইলে নয়। ঢাকের শব্দ আর কাশফুলের নরম স্পর্শ যেমন আমাদের মনকে শারদীয় করে তোলে, তেমনি পড়শিসহ সুজনদের হৃদয়েও যেন এর ঢেউ জেগে ওঠে, এটা প্রত্যাশা করা যায়।
ফেলানীর গায়েও একটা লাল জামা থাকুক; জামার গন্ধে শারদীয় উৎসব হোক মহিমান্বিত। ফুটপাতের টোকাই বা অনুরূপ কোনো কিশোর-কিশোরীর অন্তরেও স্থান পাক সর্বজনীন সুখ ও আনন্দ। ওদের বাবা-মায়ের মন যেন ভরে ওঠে হাসি আর খুশিতে। বারোয়ারি অনুষ্ঠানের তাৎপর্যকে জীবনদান করতে পারলে সবাই ধন্য হবে সন্দেহ নেই। ভেদাভেদ ভুলে কাছে টানুন নিকট-দূর সবাইকে। বাড়ির মাকে খুশিতে রাখুন, স্বজনদের সঙ্গে ভাগ করে নিন সব আনন্দসহ নানান পদের প্রসাদ। মনকে প্রসারিত করতে পারলেই দেবীপূজার সার্থকতা। শিউলির নীরব ঝরে পড়ার মাঝে একটা ব্যাকুলতা থাকে, যা হয়তো মায়ের চরণে ঠাঁই পাওয়ার ব্যাকুলতা। আমাদের অন্তরেও তেমনই ত্যাগের মহিমা জেগে উঠুক। জরাক্লিষ্ট ভাবনা দিয়ে আর যাই হোক, ‘পূজা’ হয় না। নিবেদনের সময় সময়োচিত শ্রদ্ধার বড় প্রয়োজন।
বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্ম পালনে নানা সময়ে নানা রকমের দুর্যোগ আসে, যা সত্যিই দুঃখজনক ও হতাশাব্যঞ্জক। এত সব প্রতিবন্ধকতা জয় করে নিজেদের ধর্মীয় প্রথা সমুন্নত রাখার এমন প্রয়াস অবশ্যই সনাতনীদের সুদৃঢ় মানসিকতার ফসল। ধর্ম করতেও দেশ লাগে! কী আশ্চর্য সব শিক্ষা-দীক্ষা! ভাবতেও বিস্ময় জাগে। মব জাস্টিসের যুগে শারদীয় দুর্গাপূজার সময়টুকু ভালো কাটুক—দেবীর কাছে কামনা রইল। প্রকৃত মুক্ত বাতাস ইতিপূর্বেও ছিল না, বর্তমানে সেটি ধরাছোঁয়ার বাইরে; তথাপি শৃঙ্খলাহীন সময়ে সুশৃঙ্খলা দিয়েই শেষ হোক অসুরবিনাশের তাৎপর্য।
প্রতিবছর দুর্গাপূজা আসে, আবার বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবীর বিদায় হয়। আবহমানকালের এই ধর্মীয় সংস্কার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে পূজার সঙ্গে থাকে একটা প্রাণবন্ত উৎসবমুখরতা। শরৎকালের প্রারম্ভেই বা তারও আগে থেকে সব রকম প্রস্তুতি নিতে থাকে পূজাভাবনার লোকজন। হৃদয়ের পবিত্রতম উচ্ছ্বাস ও ভালোবাসা দিয়ে মানুষ জাগরিত হয় এবং দেবীর কাছে শুভশক্তির বিজয়ের নিশ্চয়তা প্রার্থনা করে। পুরাণ শাস্ত্র অনুযায়ী এসব পূজা-পার্বণের নানাবিধ কর্মকাণ্ড থাকতে পারে; চণ্ডীপাঠের একটি অনবদ্য রেওয়াজ, ১০৮টি নীলপদ্ম, কলাবউ, নবমীর বিশেষ ভোগসহ নানা আয়োজনে ভরপুর থাকে মা দেবীর আগমন এবং বিসর্জন পর্যন্ত যা কিছু। অসুরবিনাশের উদ্দেশ্য এবং কল্যাণকর জগতের কামনাই এই পূজার মূল প্রতিপাদ্য। সনাতনীরা গভীর শ্রদ্ধাভরে গুরুত্ববহ এই তিথিকে উদ্যাপন করে।
পৌরাণিক একটি প্রথা থেকে এর যাত্রা শুরু; আজ পর্যন্ত তা অবিরাম গতি নিয়ে চলমান। চেতনায় বিশ্বাসের জোর শক্ত না হলে এতটা পথ অতিক্রম করা দুঃসাধ্য। মনের ভক্তি ও আনন্দময় অভিব্যক্তির জাগ্রত প্রকাশ দুর্গাপূজা। দশভুজা মায়ের কাছে কতজনের কত রকমের প্রার্থনা! হয়তো কারও কারও প্রার্থনা অবশ্যই মঞ্জুর হয়। কারও কারও আগামীর জন্য পেইন্ডিং থেকে যায়। আমি অনেকবার অনেকভাবে অনেক কিছুই চেয়েছি এবং সেই সব নিঃসন্দেহে কায়মনোবাক্যে তো বটেই; তবে ফলাফল বরাবরই হতাশাব্যঞ্জক। সবার জন্য সবটা নয়। এখন গ্রাম বা শহরে একইভাবে পূজাগুলো হয়ে থাকে। বরং গ্রামের পূজার এখন যা দাপট ও প্রতিপত্তি, তা দেখে শহরেরগুলো চুপসে গেছে। কৃষ্টি-সভ্যতা এসব এখন সত্যিই সর্বজনীন। কয়েক দশক আগেও এমনটি ছিল না। পূজার বাজার করার ক্লান্তিহীন ঘর্মাক্ত দৌড়ঝাঁপ; অথচ একটি সুখ, নিরলস আনন্দ কাজ করে এর মধ্যে। কী আনন্দ, কী আনন্দ!
দেবী দুর্গা অসুরকে বধ করেছিলেন এবং দেবীর তেজের নিঃসারণে আকাশ-পাতাল-মর্ত্য কাঁপিয়ে দিয়ে, ঝাঁকিয়ে দিয়ে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয় বলে শাস্ত্রে উল্লেখ পাই। এরই ধারাবাহিকতায় আজও নানাভাবে নানা রকমের অসুরবধের প্রক্রিয়া চলমান। রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে যুদ্ধ, গোত্রে গোত্রে দ্বন্দ্ব, ধর্মে ধর্মে হানাহানি—সবখানেই অসুর আবার সবখানেই দেবী বা দেবতা। পূজার বাহারসহ খরচাদিতে কোটি কোটি টাকার প্রয়োজন হয়; কয়েক দিনের চেতনাকে ইঞ্চি পরিমাণ জাগিয়ে তুলতে হাজার কোটি ব্যয়! বলা বাহুল্য, এসব একধরনের ধর্মহীন চেতনার আবেগমাত্র। তারপর শেষ হলে সবকিছুই নীরব, আবার আগের মতোই চলমান।
অন্তরের খরচাদি বাড়ানো দরকার, ধর্মীয় মতবাদকে সর্বজনীনতা দান করতে করণীয় সবটাই করতে হবে। মানবিক গুণাবলির প্রয়োগ না হলে অমন ধর্মের বাজারদর বর্তমানে নেই এবং এসব ধর্মমতকে মানুষ আর গুরুত্ব দিতে চায় না। দেবী বা দেবতার সন্তুষ্টি তখনই সম্ভব, যদি মর্ত্যের দেবী ও দেবতারা খুশি হন। মানসিকতার উন্নয়ন এবং মানবিক বিকাশের যাবতীয় উপচার সহযোগে সামাজিক গোষ্ঠীগুলো এগিয়ে এলে পূজার সার্থকতা রক্ষা পায়, নইলে নয়। ঢাকের শব্দ আর কাশফুলের নরম স্পর্শ যেমন আমাদের মনকে শারদীয় করে তোলে, তেমনি পড়শিসহ সুজনদের হৃদয়েও যেন এর ঢেউ জেগে ওঠে, এটা প্রত্যাশা করা যায়।
ফেলানীর গায়েও একটা লাল জামা থাকুক; জামার গন্ধে শারদীয় উৎসব হোক মহিমান্বিত। ফুটপাতের টোকাই বা অনুরূপ কোনো কিশোর-কিশোরীর অন্তরেও স্থান পাক সর্বজনীন সুখ ও আনন্দ। ওদের বাবা-মায়ের মন যেন ভরে ওঠে হাসি আর খুশিতে। বারোয়ারি অনুষ্ঠানের তাৎপর্যকে জীবনদান করতে পারলে সবাই ধন্য হবে সন্দেহ নেই। ভেদাভেদ ভুলে কাছে টানুন নিকট-দূর সবাইকে। বাড়ির মাকে খুশিতে রাখুন, স্বজনদের সঙ্গে ভাগ করে নিন সব আনন্দসহ নানান পদের প্রসাদ। মনকে প্রসারিত করতে পারলেই দেবীপূজার সার্থকতা। শিউলির নীরব ঝরে পড়ার মাঝে একটা ব্যাকুলতা থাকে, যা হয়তো মায়ের চরণে ঠাঁই পাওয়ার ব্যাকুলতা। আমাদের অন্তরেও তেমনই ত্যাগের মহিমা জেগে উঠুক। জরাক্লিষ্ট ভাবনা দিয়ে আর যাই হোক, ‘পূজা’ হয় না। নিবেদনের সময় সময়োচিত শ্রদ্ধার বড় প্রয়োজন।
বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্ম পালনে নানা সময়ে নানা রকমের দুর্যোগ আসে, যা সত্যিই দুঃখজনক ও হতাশাব্যঞ্জক। এত সব প্রতিবন্ধকতা জয় করে নিজেদের ধর্মীয় প্রথা সমুন্নত রাখার এমন প্রয়াস অবশ্যই সনাতনীদের সুদৃঢ় মানসিকতার ফসল। ধর্ম করতেও দেশ লাগে! কী আশ্চর্য সব শিক্ষা-দীক্ষা! ভাবতেও বিস্ময় জাগে। মব জাস্টিসের যুগে শারদীয় দুর্গাপূজার সময়টুকু ভালো কাটুক—দেবীর কাছে কামনা রইল। প্রকৃত মুক্ত বাতাস ইতিপূর্বেও ছিল না, বর্তমানে সেটি ধরাছোঁয়ার বাইরে; তথাপি শৃঙ্খলাহীন সময়ে সুশৃঙ্খলা দিয়েই শেষ হোক অসুরবিনাশের তাৎপর্য।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে