‘পেটের ভাত জোগাড় আসি বেটা লাশ হইল’

তারাগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ০৮: ৩১
আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ২৫

মা শেফালী রানী ও ছোট ভাই সুজন চন্দ্রকে নিয়ে ছিল ১৯ বছরের তরুণ সুমন চন্দ্রের সংসার। দিনমজুর বাবা শ্যামল চন্দ্র ছয় বছর আগে মারা যাওয়ার পর পরিবারের হাল ধরতে হয়েছিল তাঁকে। শুরু করেছিলেন অন্যের বাড়িতে কাজ। ছোট বলে সুমনকে মজুরি দেওয়া হতো কম। মা-ভাইকে নিয়ে দুই বেলা খাওয়ার জন্য সেই মজুরিতেই কাজ করতেন তিনি।

পরিবারের মুখে ভাত জোগাতে সেই সুমন আর কাজ করবেন না। কারণ এই কাজই তাঁকে না ফেরার দেশে পাঠিয়েছে। তিনি গতকাল বুধবার তারাগঞ্জের ব্রাদার্স অটো রাইস মিলে কাজ করতে এসে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে মারা গেছেন।

সুমনের বাড়ি নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর গ্রামে। তিনি চালকলে দৈনিক মজুরিতে শ্রমিকের কাজ করতেন।

সুমনের পরিবারের সদস্য ও চালকলের শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সুমন তিন মাস ধরে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের পাশে চালকলটিতে কাজ করছিলেন। তিনি প্রতিদিনের মতো গতকাল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কাজের জন্য বাড়ি থেকে বের হন এবং কাজেও যোগ দেন।

সুমন একপর্যায়ে চালকলের পশ্চিম পাশে স্তূপ করে রাখা ছাইয়ে পানি দেওয়ার জন্য যান। সেখানে মোটর চালু করতে গিয়ে সকাল ৯টার দিকে তিনি বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে পড়েন। তাঁকে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার সময় পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

সুমনের মা শেফালী রানী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘সোয়ামি নাই। এখন বেটাটাকও কাড়ি নেইল। হামার পেটের ভাত জোগাড় আসি বেটাটা লাশ হইল। এখন কেমন করি বাঁচিম। অ্যালা হামাক কায় কামাই করি খাওয়াইবে।’

তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক আহম্মদ বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু এ ঘটনায় কেউ এখনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত