মঞ্চে ‘নায়ক ও খলনায়ক’

রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২২, ০৭: ১৫
আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২২, ১৩: ৩০

‘নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার প্রধান সেনাপতি ছিল মীর জাফর, খন্দকার মোশতাক ছিল বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিপরিষদ সদস্য। যুগে যুগে এই ঘরশত্রু বিভীষণেরা বেইমানি করেছে, কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র কখনোই সফল হয়নি। যারা দেশ ও মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করে বিভেদ সৃষ্টি করার চেষ্টা করে, তারা যে দল বা যে ব্যবস্থারই প্রতিনিধি হোক না কেন, তাদের পরিচয় একটাই, তারা হলো খলনায়ক। মনে রাখবেন, অন্ধকার কখনো সত্যর আলোকে নিভিয়ে দিতে পারে না। খলনায়কেরা কখনোই প্রকৃত নায়কদের দাবায়ে রাখতে পারবে না।’

এই কথাগুলো ‘নায়ক ও খলনায়ক’ নাটকের শেষ সংলাপ। এই সংলাপ থেকেই নাটকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে একটা ইঙ্গিত মেলে। নাটকটি রচনা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাট্যজন মলয় ভৌমিক। তাঁর নির্দেশনায় গত শনিবার রাতে রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে নাটকটি মঞ্চস্থ করে অনুশীলন নাট্যদল।

‘হাতের মুঠোয় হাজার বছর, আমরা চলেছি সামনে’ স্লোগানে রাজশাহী থিয়েটার আয়োজিত ষষ্ঠ অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় নাট্যোৎসবের চতুর্থ দিন নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। অনুশীলন নাট্যদলের এটি ৬৪তম প্রযোজনা। করোনা পরিস্থিতির কারণে টানা দুই বছর পরে অনুশীলনের এই নাটকের প্রথম মঞ্চায়ন হলো অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় নাট্যোৎসবে।

নাটকের সংগীত পরিচালনা করেছেন শৌভিক রায়। নৃত্য পরিচালনা করেছেন ল্যাডলী মোহন মৈত্র। মঞ্চসজ্জা করেন মনির উদ্দিন আহাম্মেদ ও কনক কুমার পাঠক। এক ঘণ্টা ২০ মিনিটের এ নাটকটিতে অভিনয় করেন রাকিবুল আলম, স্বাধীন খান, রিমন বিশ্বাস, হৃদয় সাহা, তানজিনা মাহাজাবীন, রেজুয়ানুল হক, মোশাররফ হোসেন, কঙ্গনা সরকার, সুব্রত হালদার, আরিফুল ইসলাম মেহেদী হাসান ও হৃদয় তালুকদার।

নাটকটিতে ঐতিহ্যবাহী বাংলা নাট্যের আঙ্গিকের সঙ্গে সর্বাধুনিক আঙ্গিকের মিশেলকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নাটকটি ইতিহাসের পাঠ নয়। তবে অবাস্তবানুগ রীতিতে নির্মিত কল্পিত এই নাটকটি দর্শককে ইতিহাসের কথাই স্মরণ করিয়ে দেবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার ও বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের মহাসচিব কামাল বায়োজিদ পুরো নাটকটিই উপভোগ করেন। শেষ সংলাপ শেষ হতেই দাঁড়িয়ে করতালি দিয়ে অভিনয়শিল্পীদের অভিবাদন জানান অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। পরে মঞ্চে গিয়ে তিনি নায়ক ও খলনায়কের নাট্যকার মলয় ভৌমিককে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

নাটক শেষ হলেও তখনো মিলনয়াতনভর্তি দর্শক। অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে উপাচার্য বললেন, ‘আমাদের নাটক দেখার লোক বাড়ছে। এটা খুব আশা জাগাচ্ছে।’ কামাল বায়োজিদ বললেন, ‘ঢাকা থেকে এসেছি শুধু এই নাটকটি দেখার জন্য। আসলেই আমাদের তাড়িয়ে দিতে হবে খলনায়কদের। নায়কের যেন স্থান হয় বাংলাদেশে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত