কমলগঞ্জ উপজেলায় আগাম বোরো ধানের চারা রোপণের কাজ শুরু করেছেন কৃষকেরা। শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে বোরো চাষে মাঠে নেমেছেন তাঁরা। বীজতলা ও জমি তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে তেলের দাম বাড়ায় বোরো চাষে খরচ বাড়ায় অনেক কৃষক আগ্রহ হারাচ্ছেন।

কৃষকদের কাছ থেকে জানা যায়, প্রায় সপ্তাহখানেক আগে আমন ধান ঘরে তোলা সম্পন্ন করে আগাম বোরো ধানের চারা জমিতে রোপণ করছেন। চারা রোপণের পাশাপাশি বীজতলা ও জমি তৈরি করছেন তাঁরা। তেলের দাম বাড়ায় বেশির ভাগ কৃষক বিপাকে পড়েছেন। গত বছরের তুলনায় এবার পানি সেচ ও হাল চাষে প্রতি ৩০ শতকে ৮০০ থেকে ১০০০ হাজার টাকা খরচ বেড়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে উপজেলায় বোরো চাষে ৪ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারিভাবে উপজেলার প্রায় ৩ হাজার ৮০০ কৃষকদের হাইব্রিড, উফশী ও সার দিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায় মুন্সীবাজার, শমশেরনগর, আলীনগর ও পতনঊষার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র শীতের মধ্যে আগাম জাতের বোরো ধানের চারা রোপণ করছেন। অনেক কৃষক বোরো চাষের বীজতলায় পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। আবার অনেকেই জমিতে হাল চাষ করছেন। আগাম যাঁরা বীজতলা তৈরি করছিলেন, তাঁরা চারা জমিতে রোপণের কাজ করছেন।

তবে একরপ্রতি ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ বাড়ায় অস্বস্তিতে বেশির ভাগ কৃষক।

উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের কৃষক সুলতানা মিয়া বলেন, ‘প্রথমবারের মতো ৩ একর জমিতে বোরো আবাদ করেছি। দুই দিন ধরে জমিতে চারা রোপণ করছি। সবকিছুর দাম বাড়ায় ধান চাষে খরচ অনেক বেড়ে গেছে।’

উপজেলার শ্রীরামপুর এলাকার কৃষক আব্দুল করিমের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, দুই একর জমিতে বোরো ধান চাষ করবেন। চারা লাল হয়ে যাচ্ছে এ জন্য কীটনাশক ছিটিয়েছেন। তেলের দাম বাড়ায় সেচ ও হাল চাষে অনেক খরচ বেড়েছে কিন্তু ধানের দাম বাড়েনি। চারার বয়স ৩০ থেকে ৪৫ দিনের ভেতরে রোপণ করবেন। হাইব্রিড ও দেশি ধানের চারা তৈরি করছেন বলেও জানান তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জনি খান বলেন, বোরো ধান চাষ করার জন্য আমরা কৃষকদের সহযোগিতা ও উৎসাহ দিচ্ছি। এ উপজেলায় আগের তুলনায় বোরো চাষ অনেক বেড়েছে।

উপজেলার অনেক কৃষক আগাম জাতের বোরো ধানের চারা রোপণ করতে শুরু করছেন। গত বছরের তুলনায় এবার খরচ কিছুটা বাড়লেও তেমন কোনো সমস্যা হবে না।