মাঠ আছে, কমিটি আছে নেই খেলার আয়োজন

মোহনগঞ্জ (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২১, ০৫: ০২
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ৩৬

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পৌর শহরের মাইলোড়া এলাকায় বিশাল খেলার মাঠ, শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নামে রয়েছে ভবন, আছে ক্রীড়া সংস্থার কমিটিও, কিন্তু নেই খেলাধুলার কোনো আয়োজন।

নিজেদের দেওয়া চাঁদার টাকায় খেলার সামগ্রী কিন মাঝে মধ্যে খেলেন এলাকার খেলাধুলা প্রেমী তরুণেরা।

কাগজে কলমে সংস্থাটির অস্তিত্ব থাকলেও বাস্তবে এর কোনো কার্যক্রম নেই। এমনকি তিন বছর মেয়াদি এই কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও এর মধ্যে ডাকা হয়নি কোনো সভা।

তাদের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি কোনো খেলার সামগ্রী। কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ভুলেই গেছেন এ কমিটি কবে হয়েছিল।

এলাকার খেলাধুলাপ্রেমী তরুণেরা বলেন, বর্তমানে যতটুকু খেলাধুলা হয়, তার সবটুকুই নিজেদের উদ্যোগে। মিনি স্টেডিয়ামের ভবনটিতে বর্তমানে ওএমএসর চাল বিতরণ করা হয়।

প্রায়ই এলাকার তরুণদের নিয়ে খেলাধুলার আয়োজন করেন কামরুল ইসলাম ও আমিরুল ইসলাম মানিক নামে দুই সাবেক খেলোয়ার।

খেলার প্রতি প্রচণ্ড ভালোবাসা থেকেই তাদের এই উদ্যোগ। তারা জানান, এখানে মাঠ থাকলেও খেলাধুলার কোনো আয়োজন নেই। আমরা নিজেরা চাঁদা তুলে ভল কিনে শিক্ষার্থীদের নিয়ে টুকটাক খেলাধুলা করি। এতে করে চর্চাটা ধরে রাখা শুধু।

ক্রীড়া সংস্থা বা সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ নিয়ে টুর্নামেন্ট ছাড়া হলে তরুণেরা খেলাধুলায় আগ্রহী হতো। করোনার সময়টাতেও আমরা নিজের চেষ্টায় খেলাধুলাটা চালু রেখেছি। এতে করে শিক্ষার্থীরা খারাপ অভ্যাসে জড়াবে না। সুস্থ মনমানসিকতা বজায় রাখা ও মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে খেলাধুলার কোনো বিকল্প নেই বলেও জানান তারা।

জানা গেছে, গত তিন বছরের বেশি সময় আগে মোহনগঞ্জ ক্রীড়া সংস্থার কমিটি গঠন করা হয়েছিল। পদাধিকার বলে এই কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)।সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ নেতা আবু ফয়েজ চৌধুরী কেন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরেক আওয়ামী লীগ নেতা এমদাদুল ইসলাম খোকন।

স্থানীয় তরুণদের দাবি, ক্রীড়া সংস্থার কমিটির বড় পদগুলোতে ক্রীড়া অনুরাগীদের রাখা হোক। তাতে খেলাধুলার প্রতি তাদের টান থাকবে।

ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল ইসলাম খোকন বলেন, খেলাধুলার আয়োজন হলে তরুণেরা এ দিকে আকৃষ্ট হবে। ফলে শারীরিক ফিটনেসের পাশাপাশি মাদক থেকেও দূরে থাকবে।

তবে দুঃখজনক হল-তিন বছর মেয়াদি ক্রীড়া সংস্থার কমিটি গঠন করার পর এর মেয়াদ চলে গেছে তবু আজ পর্যন্ত একটি সভাও হয়নি। এটি শুধু নামে কমিটি। কাজ বলতে কিছুই হয়নি। এত বড় মাঠ, ভবন, তবুও খেলার কোনো আয়োজন নেই। খেলার জন্য বেশি বাজেট বরাদ্দের দরকার নেই। এখানে উদ্যোগটাই মুখ্য।

ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আবু ফয়েজ চৌধুরী কেনু বলেন, খেলাধুলার জন্য আমাদের কোনো বাজেট নেই।

আর এখন তো ফুটবল খেলার সময় না। ফুটবল খেলার সময় (বর্ষাকাল) আসলে সেটা হয়তো দেখা যেতে পারে। ক্রিকেট খেলাতে ঝগড়া হয়। তাই ক্রিকেট খেলার টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয় না। তবে বাজেটের জন্য ইউএনওকে অনেকবার বলেছি। অনেক রেজ্যুলেশন করেছি। কিন্তু কোনো বাজেট বরাদ্দ পাইনি।

ক্রিয়া সংস্থার সভাপতি ও ইউএনও সাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি বলেন, খেলাধুলার সরঞ্জামাদি কেনার কোনো বাজেট নেই।

ক্রীড়া সংস্থার কমিটির মেয়াদও হয়তো শেষ হয়েছে। বাজেটে বরাদ্দ সংগ্রহ করে সরঞ্জামাদি কিনে খেলাধুলার আয়োজন করা হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত