কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় রাশেদুল ইসলাম রাশেদ হত্যা মামলায় ‘নকল’ আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠে গত সোমবার।

মামলার সাক্ষীরা আদালতে আত্মসমর্পণকারী প্রধান আসামিকে ভুয়া বলে দাবি করেন। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আদালত আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

তিন দিনের রিমান্ড শেষে এ হত্যা মামলার প্রধান আসামির আসল পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি এ হত্যা মামলার প্রধান আসামি তাছের পীর নন। তাঁর প্রকৃত পরিচয় উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা নাজিম উদ্দীন প্রামাণিক।

রিমান্ড শেষে নাজিম উদ্দীন প্রামাণিককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৬ জুন সকালে উপজেলার চরদিয়ার কল্যাণপুর দরবার শরিফে রাশেদুল ইসলাম রাশেদকে (২৮) দরবারের লোকজন বাগানের মধ্যে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন। রাশেদ একই উপজেলার হরিণগাছী গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।

এ ঘটনায় রাশেদের বাবা আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় ওই দরবারের পীর সৈয়দ তাছের আহমেদকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর পুলিশ ৬ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়।

মামলার সাক্ষী রেজা বলেন, ‘সোমবার তাছের নামের ওই ব্যক্তিকে আদালতে হাজির করা হলে আমরা সাক্ষীরা মুখ দেখে চিনতে পারি তিনি আসলে তাছের নন অন্য কেউ। পরে বিষয়টি আদালতকে জানাই তিনি নকল আসামি।’

এ বিষয়ে মামলার বাদী আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘আদালতে আত্মসমর্পণ করা ওই ব্যক্তি মামলার প্রধান আসামি তাছের পীর না, আমি নিজে শনাক্ত করেছিলাম।’

এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (সিআইডি) পরিদর্শক মো. সেলিম বলেন, ‘মামলার সাক্ষীরা আদালতে আত্মসমর্পণকারী আসামি সৈয়দ তাছের আহমেদকে ভুয়া বলে দাবি করেন। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমি গত সোমবারই কুষ্টিয়া আমলি আদালতে আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করি। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।’

এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, তিন দিনের রিমান্ড শেষে আসামির আসল পরিচয় পাওয়া গেছে। আসামির প্রকৃত পরিচয় হলো তিনি দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা নাজিম উদ্দীন প্রামাণিক।

মো. সেলিম আরও বলেন, ‘তিন দিনের রিমান্ডে আসামি জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে তাঁর দেওয়া জবানবন্দি আইনি প্রক্রিয়ার অগ্রতির জন্য এখনই প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। রিমান্ড শেষে আসামিকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।’

এদিকে আদালতের একটি সূত্র জানান, আদালতের কাছে আত্মসমর্পণের সময় তাছেরের একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জজ কোর্টের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী বলেন, ‘বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আদালতের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে আসামি সৈয়দ তাছের আহমেদের আসল জাতীয় পরিচয়পত্র দাখিল করতে বলা হয়েছে।’