৪ বছরের চেষ্টায় আগাম তরমুজ চাষে সফল

পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৬: ৪২
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১: ১০

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের ৩০ শতক জমিতে আগাম জাতের তরমুজ চাষ করেছেন ইউনুস আহমদ (৪৭)। বর্তমানে তাঁর খেত তরমুজে ভরে গেছে। দেড় হাজার গাছের মধ্যে অন্তত এক হাজার গাছে ফলন এসেছে। তিনি জানান, চার বছর ধরে তিনি আগাম তরমুজ চাষে সফলতা পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। এবারই প্রথম তিনি লাভের দেখা পেয়েছেন।

এই জাতে একটি গাছে একটি ফল ধরে। ইউনুস আহমদ পাহাড়ি ঢালু জমিতে এই চাষ করেছেন। লতাগুল্মের সঙ্গে লেপ্টে থাকা তরমুজে ভোরের শিশির জমে থাকে। এতে যখন সূর্যের কিরণ পড়ে ঝিলমিল করে ওঠে, তখন খেত অন্য রকম সুন্দর দেখায়। মনে হয়, খেতে এসব ফল কেউ যেন সাজিয়ে রেখেছে।

ইউনুস আহমদ চার বছরের চেষ্টায় এবার এমন ভালো ফলন পেয়েছেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিনি নতুন জাত ও ধরনের বিভিন্ন ফসলের চাষ করতে ভালোবাসেন। এর আগে মাল্টা চাষ করে তিনি সফলতা পেয়েছেন।

ইউনুস আহমদ জানান, পাহাড়ের পতিত জমিতে তিনি পরীক্ষামূলকভাবে চাষাবাদ শুরু করেন। তাঁর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে তিনি চাষাবাদ করেন। কিছু ক্ষেত্রে সফল হলেও কয়েকটি ফসল চাষে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। ঝুঁকি মাথায় নিয়েই তিনি নতুন জাতের ফসলের চাষাবাদ করেন। ইতিমধ্যে লিচু, মাল্টা, তরমুজ ও শসার চাষ করেছেন।

ইউনুস আহমদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কৃষিতে নতুনত্ব নিয়ে কাজ করা আমার কাছে নেশার মতো। সাধারণ কৃষকদের মতো ধান চাষ করি। তবে পাশাপাশি নতুন ধরনের চাষাবাদে আগ্রহী। সেই আগ্রহ থেকে চার বছর ধরে আগাম তরমুজ চাষে সফলতা পাওয়ার চেষ্টা করছি। চলতি বছরের কার্তিক মাসে দুই হাজার বীজ বপন করি। সেখান থেকে দেড় হাজার চারা পাই। চারাগুলো ৩০ শতক জমিতে রোপণ করি। এর মধ্যে এক হাজার গাছে ফলন হয়েছে। মাঘ মাসে বিক্রির উপযুক্ত হয়েছে। যাবতীয় ব্যয় বাদ দিয়ে এতে আমার ৫০ হাজার টাকার মতো লাভ হয়েছে।’

ইউনুস নিজের আশার কথা জানিয়ে আরও বলেন, ‘কৃষি বিভাগের সহযোগিতা পেলে নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আগামী বছর তরমুজ চাষের পরিধি বাড়াব। তা ছাড়া ৪০ শতক জমির মাল্টাবাগান থেকে বারোমাসি ফলন পাচ্ছি। মাল্টায় আমি এখন লাভের ঘরে। ইতিমধ্যে পুঁজি উঠে এসেছে। এই বাগান থেকে আরও অন্তত ১০ বছর ফলন পাওয়া যাবে।’

আগাম তরমুজ চাষের বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তপন কুমার রায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গ্লোরি জাতের তরমুজ চাষে আড়াই থেকে তিন মাসে ফলন পাওয়া যায়। হারভেস্ট পিরিয়ড শেষ হয়ে গেলে তরমুজগাছ নষ্ট হয়ে যায়। ইউনুসের আগাম তরমুজ চাষ সাধারণ কৃষকদের মধ্যে অনুপ্রেরণার সৃষ্টি করেছে। অন্য কৃষকেরা তরমুজ চাষে আগ্রহী হলে ইউনুসের মতো তাঁদেরও আমরা পরামর্শ দেব, সহযোগিতা করব।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত