নগরের মাস্টারপ্ল্যান হতে হবে সুসমন্বিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৭ জুন ২০২২, ১২: ১৯
Thumbnail image

চট্টগ্রাম মহানগর এলাকার মাস্টারপ্ল্যান (২০২০-২০৪১) প্রণয়ন প্রকল্পের প্রাথমিক প্রতিবেদন উপস্থাপন এবং মতবিনিময় সভা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম নগরীর একটি হোটেলে এই মতবিনিময় হয়। এ সময় সব সংস্থাকে মিলে মাস্টারপ্ল্যান করতে হবে বলে মত দিয়েছেন বক্তারা।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। 
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম–১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘চট্টগ্রামের সব উপকারভোগীকে (স্টেক হোল্ডার) নিয়ে যদি আমরা এক টেবিলে বসতে পারি, তাহলে সব সমস্যার সমাধান হবে। অনেকেই প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার নেতৃত্ব দেওয়ার সময় মনে করে এটা নিজের প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠান যে দেশের সম্পদ, তার চেয়েও সেখানে নিজের ইগোকে বেশি প্রাধান্য দেন। ফলে অন্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এ অসুস্থ প্রতিযোগিতার কারণে আমরা দেখেছি ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটারের ড্রেনে বছরের পর বছর কেউ হাতও দেয়নি।’

শিক্ষা উপমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে সিটি করপোরেশনের মেয়রের প্রশংসাও করেন। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান যে এ শহরে আছে, এখন আমরা চোখে দেখতে পাচ্ছি।’ এ সময় আগের মেয়রকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন আমরা সিটি করপোরেশনের চেহারা দেখতে পাইনি। করপোরেশন বর্তমানে খাল-নালায় কাজ করছে। আমাদের মেয়রকে ধন্যবাদ দিতে চাই, তিনি একনেক সভায় বসে থেকে প্রকল্প অনুমোদন করে নিয়ে এসেছেন। এটা হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক নেতৃত্বের বড় পরিচয়। ব্যক্তি রেষারেষিতে জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হন। গত ৫-৬ বছর খালগুলোতে কোনো হাত দেওয়া হয়নি। তাহলে এ ময়লাগুলো কোথায় যাবে?’

সভাপতির বক্তব্যে সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘মাস্টারপ্ল্যানে প্রথমবারের মতো আমরা ড্রোন দিয়ে সমীক্ষা করেছি। নতুন মাস্টারপ্ল্যান বলা হলেও আসলে মূলত আগের মাস্টারপ্ল্যান রিভিউ করা এবং আগে বাদ পড়া কাজগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘অতীতেও বিভিন্ন সময়ে মাস্টারপ্ল্যান হয়েছে কিন্তু আমরা তা বাস্তবায়ন হতে দেখিনি। নগরীতে একের পর এক ভবন নির্মাণ হচ্ছে। আমরা সবুজ হারিয়ে ফেলছি, শিশুদের খেলার মাঠ নেই, পার্ক নেই। অতীতেও মাস্টারপ্ল্যানে সবুজের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সবুজের জন্য কোনো জায়গা রাখা হয়নি।’

জলাবদ্ধতার বিষয়ে সিটি মেয়র বলেন, ‘আমাদের কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পাহাড় কাটার ফলে খাল ও ড্রেনে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। খালের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। সমন্বিতভাবে অভিযান চালিয়ে খাল উদ্ধার করতে হবে।’

সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফ বলেন, সব সংস্থাকে মিলে একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করতে হবে এবং সব সংস্থাকে ওই মাস্টারপ্ল্যান অনুসরণ করতে হবে। কিন্তু আমাদের প্রতিটি সংস্থা নিজেদের ইচ্ছামতো একেকটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে রেখেছে। আমাদের মাস্টারপ্ল্যান হয় কিন্তু এর সুফল জনগণ দেখে না। 
বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, ‘আমাদের প্রতি ইঞ্চি জমি কাজে লাগাতে হবে এবং কোথায় কী পরিকল্পনা রয়েছে তা মাস্টারপ্ল্যানে উল্লেখ থাকতে হবে।’

এর আগে গত ১৯ এপ্রিল এ মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করে সিডিএ। সেদিন সিডিএর চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ মাঠ পর্যায়ে এ মহাপরিকল্পনার কাজের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর ভূ-স্থানিক ডেটা সংগ্রহের জন্য সিডিএ কার্যালয়ের আকাশে ওড়ানো হয় ড্রোন। পরে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে ভূতাত্ত্বিক জরিপের কাজ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত