আজিজুর রহমান, চৌগাছা
চৌগাছার সিংহঝুলি ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রাম। পরে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘মুক্তিনগর’।
এ গ্রামসহ পাশের কয়েকটি গ্রামে ১৯৭১ সালের ২০ নভেম্বর ঘটে ব্যতিক্রমী ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বিরল ঘটনা সেটি। সেদিন মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে হানাদার পাকিস্তানি সেনাদের জগন্নাথপুরের আমবাগানে হাতাহাতি বা মল্লযুদ্ধ হয়।
উভয় পক্ষের গোলাবারুদ শেষ হয়ে যাওয়ায় একে অপরের সঙ্গে তাঁরা মল্লযুদ্ধে লিপ্ত হন। এ ঘটনা এখনো সেখানকার বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষের বুকে শিহরণ তোলে।
‘মুক্তিনগরের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস’ বর্ণনাকালে মুক্তিনগর শহীদ সরণি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান আলী লিখেছেন, ১৯৭১ সালের ২০ নভেম্বর ছিল ঈদের দিন। ওই দিন সন্ধ্যায় যৌথবাহিনী ভারতীয় সীমান্ত বয়রা অতিক্রম করে মুক্তিনগর (জগন্নাথপুর) গ্রামের ১ কিলোমিটার দক্ষিণে মাঠপাড়ায় বিপুল সৈন্য ও সরঞ্জামসহ অবস্থান নেয়।
পাকিস্তানি সেনারা বিষয়টি জানার পর রাতেই চৌগাছা ঘাঁটি থেকে বর্তমান চৌগাছা-যশোর সড়কের সিংহঝুলি ও মশিউরনগরের সড়কের বরাবর অবস্থান নেয়। সন্ধ্যার পর থেকেই থেমে থেমে দক্ষিণ দিক থেকে সিংহঝুলির সড়কের আশপাশে মর্টার শেল পড়তে থাকে। পরদিন (২১ নভেম্বর) ভোর হওয়ার পর যৌথবাহিনীর সদস্যরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে দক্ষিণ দিক থেকে গ্রামের দিকে এবং পশ্চিমাংশে মাঠ দিয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে থাকে।
সকালে পাকিস্তানি সেনা ও যৌথবাহিনী মুখোমুখি হয়ে যায়। শুরু হয় যুদ্ধ। আস্তে আস্তে তা তুমুল আকার ধারণ করে।
গুলি, মর্টার শেল এবং কামানের গোলায় গোটা গ্রাম ধোয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। মানুষ দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করে। নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে থাকে। গোলাবারুদ শেষ হয়ে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে শুরু হয় মল্লযুদ্ধ। সারা দিন যুদ্ধ চলার পর বিকেলে থেমে যায়। গ্রামের অনেক মানুষ চলে যায়।
প্রাণ হারায় পাকিস্তানি সেনা, মুক্তিসেনা ও ভারতীয় সেনারা। পুড়ে যায় অনেক ঘরবাড়ি, গরু-ছাগল, ধানের গোলা। ওই যুদ্ধে যারা শহীদ হন, তাঁদের অনেকেরই কবর দেওয়া সম্ভব হয়নি। পাকিস্তানি বাহীনি গ্রামের ছেলেদের দিয়ে গরুর গাড়িতে করে বহু লাশ যশোর-চৌগাছা সড়কের পাশে নিয়ে যেতে বাধ্য করে।
এরপর বিকেলে পাকিস্তানিরা বিমান হামলা শুরু করে। তাঁরা যৌথবাহিনীর অবস্থানের ওপর একের পর এক আঘাত হানে। মাঠের মধ্যে অবস্থানস্থল ও পর্যাপ্ত পরিখা না থাকায় সেই হামলায় যৌথবাহিনীর অনেক সদস্য নিহত হন। হামলার কিছু সময় পর বিমানগুলোর বেশির ভাগ বিধ্বস্ত হয়। পাকিস্তানিরা এর পর পিছু হটে। তাঁরা যশোর-চৌগাছা সড়কের পাশে অবস্থান নেয় এবং যৌথবাহিনী গ্রামটিতে অবস্থান নেয়।
২২ নভেম্বর পাকিস্তানিরা সলুয়া বাজারে অবস্থান নেয় এবং এই অঞ্চল মুক্ত হয়। পরে গ্রামের লোকজন ফিরতে শুরু করেন।
জগন্নাথপুর দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা সত্তর বছরের আমির হোসেন বলেন, ‘ওই সময় আমার বয়স ২০ বছর। দক্ষিণপাড়ার মোজামের ভূঁই (খেত) আর উল্টো পাশে দাউদের ভুঁইতে পাঞ্জাবি আর ভারতের সৈন্যদের হাতাহাতি যুদ্ধ দেখেছি; আমরা তফাতে (দূরে) দাঁড়িয়েছিলাম।’
স্থানীয়রা জানান, ওই যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাসহ ৫৭ জন সাধারণ মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। তাঁদের ১৯ জনের নাম জানা গেছে। তাঁদের নাম স্কুলের সামনে স্মৃতিসৌধে রয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চৌগাছার সাবেক কমান্ডার রুহুল আমীন বলেন, ‘আমার জানামতে, মুক্তিযুদ্ধের সময় অন্য কোথাও মল্লযুদ্ধ হয়নি।’
চৌগাছার সিংহঝুলি ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রাম। পরে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘মুক্তিনগর’।
এ গ্রামসহ পাশের কয়েকটি গ্রামে ১৯৭১ সালের ২০ নভেম্বর ঘটে ব্যতিক্রমী ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বিরল ঘটনা সেটি। সেদিন মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে হানাদার পাকিস্তানি সেনাদের জগন্নাথপুরের আমবাগানে হাতাহাতি বা মল্লযুদ্ধ হয়।
উভয় পক্ষের গোলাবারুদ শেষ হয়ে যাওয়ায় একে অপরের সঙ্গে তাঁরা মল্লযুদ্ধে লিপ্ত হন। এ ঘটনা এখনো সেখানকার বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষের বুকে শিহরণ তোলে।
‘মুক্তিনগরের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস’ বর্ণনাকালে মুক্তিনগর শহীদ সরণি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান আলী লিখেছেন, ১৯৭১ সালের ২০ নভেম্বর ছিল ঈদের দিন। ওই দিন সন্ধ্যায় যৌথবাহিনী ভারতীয় সীমান্ত বয়রা অতিক্রম করে মুক্তিনগর (জগন্নাথপুর) গ্রামের ১ কিলোমিটার দক্ষিণে মাঠপাড়ায় বিপুল সৈন্য ও সরঞ্জামসহ অবস্থান নেয়।
পাকিস্তানি সেনারা বিষয়টি জানার পর রাতেই চৌগাছা ঘাঁটি থেকে বর্তমান চৌগাছা-যশোর সড়কের সিংহঝুলি ও মশিউরনগরের সড়কের বরাবর অবস্থান নেয়। সন্ধ্যার পর থেকেই থেমে থেমে দক্ষিণ দিক থেকে সিংহঝুলির সড়কের আশপাশে মর্টার শেল পড়তে থাকে। পরদিন (২১ নভেম্বর) ভোর হওয়ার পর যৌথবাহিনীর সদস্যরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে দক্ষিণ দিক থেকে গ্রামের দিকে এবং পশ্চিমাংশে মাঠ দিয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে থাকে।
সকালে পাকিস্তানি সেনা ও যৌথবাহিনী মুখোমুখি হয়ে যায়। শুরু হয় যুদ্ধ। আস্তে আস্তে তা তুমুল আকার ধারণ করে।
গুলি, মর্টার শেল এবং কামানের গোলায় গোটা গ্রাম ধোয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। মানুষ দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করে। নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে থাকে। গোলাবারুদ শেষ হয়ে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে শুরু হয় মল্লযুদ্ধ। সারা দিন যুদ্ধ চলার পর বিকেলে থেমে যায়। গ্রামের অনেক মানুষ চলে যায়।
প্রাণ হারায় পাকিস্তানি সেনা, মুক্তিসেনা ও ভারতীয় সেনারা। পুড়ে যায় অনেক ঘরবাড়ি, গরু-ছাগল, ধানের গোলা। ওই যুদ্ধে যারা শহীদ হন, তাঁদের অনেকেরই কবর দেওয়া সম্ভব হয়নি। পাকিস্তানি বাহীনি গ্রামের ছেলেদের দিয়ে গরুর গাড়িতে করে বহু লাশ যশোর-চৌগাছা সড়কের পাশে নিয়ে যেতে বাধ্য করে।
এরপর বিকেলে পাকিস্তানিরা বিমান হামলা শুরু করে। তাঁরা যৌথবাহিনীর অবস্থানের ওপর একের পর এক আঘাত হানে। মাঠের মধ্যে অবস্থানস্থল ও পর্যাপ্ত পরিখা না থাকায় সেই হামলায় যৌথবাহিনীর অনেক সদস্য নিহত হন। হামলার কিছু সময় পর বিমানগুলোর বেশির ভাগ বিধ্বস্ত হয়। পাকিস্তানিরা এর পর পিছু হটে। তাঁরা যশোর-চৌগাছা সড়কের পাশে অবস্থান নেয় এবং যৌথবাহিনী গ্রামটিতে অবস্থান নেয়।
২২ নভেম্বর পাকিস্তানিরা সলুয়া বাজারে অবস্থান নেয় এবং এই অঞ্চল মুক্ত হয়। পরে গ্রামের লোকজন ফিরতে শুরু করেন।
জগন্নাথপুর দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা সত্তর বছরের আমির হোসেন বলেন, ‘ওই সময় আমার বয়স ২০ বছর। দক্ষিণপাড়ার মোজামের ভূঁই (খেত) আর উল্টো পাশে দাউদের ভুঁইতে পাঞ্জাবি আর ভারতের সৈন্যদের হাতাহাতি যুদ্ধ দেখেছি; আমরা তফাতে (দূরে) দাঁড়িয়েছিলাম।’
স্থানীয়রা জানান, ওই যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাসহ ৫৭ জন সাধারণ মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। তাঁদের ১৯ জনের নাম জানা গেছে। তাঁদের নাম স্কুলের সামনে স্মৃতিসৌধে রয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চৌগাছার সাবেক কমান্ডার রুহুল আমীন বলেন, ‘আমার জানামতে, মুক্তিযুদ্ধের সময় অন্য কোথাও মল্লযুদ্ধ হয়নি।’
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে