হাদিসে পরিমিত পানাহারের তাগিদ

ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান
প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২২, ১৫: ১৪

আল্লাহ তাআলা মানুষের জন্য পৃথিবীর অনেক খাদ্য হালাল করেছেন। খাদ্য হালাল বলে অতিভোজন কোনোভাবেই সুন্নতসম্মত নয়। বরং পরিমিত পানাহারই সুন্নত। মানুষ সাধারণত দিনে তিনবার খাওয়াদাওয়া করে। অতিরিক্ত পানাহার কোনো সময়েই উচিত নয়।

পানাহারের পদ্ধতি সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেন, ‘পেটের চেয়ে নিকৃষ্ট কোনো পাত্র মানুষ পূর্ণ করে না। মানুষের জন্য ততটুকু খাদ্য যথেষ্ট, যতটুকু তার পিঠ সোজা করে রাখে। আর যদি এর চেয়ে বেশি খেতেই হয়, তাহলে সে যেন তার পেটের এক-তৃতীয়াংশ খাদ্য গ্রহণের জন্য, এক-তৃতীয়াংশ পানীয়ের জন্য, আর তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য ব্যবহার করে।’ (তিরমিজি)

মহানবী (সা.) আরও বলেন, ‘দুনিয়াতে যেসব লোক ভূরিভোজ করে, তারাই হবে কিয়ামতের দিন অধিক ক্ষুধার্ত।’ (ইবন মাজাহ) স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের পরিভাষায়, মানুষ যে খাদ্যই গ্রহণ করুক না কেন, তা অবশ্যই স্বাস্থ্যসম্মত ও সুষম হতে হবে। সকালের নাশতায় একটু বেশি, দুপুরে একটু কম এবং রাতে আরও কম পানাহার স্বাস্থ্যসম্মত। এ নিয়মে পানাহার করলে সকালে ও দুপুরে খাওয়া খাবার দেহে শক্তি সঞ্চয় করবে এবং সারা দিনে তা ব্যয় হবে। আর রাতে অতিরিক্ত পানাহার করলে তা শক্তি জোগাবে বটে, কিন্তু ঘুমের কারণে তা ব্যয় হবে না। ফলে দেহে চর্বি জমবে এবং বিভিন্ন রোগবালাই সৃষ্টি হবে। তাই রাতে সামান্য পানাহারই যথেষ্ট।

সাহাবিরা কখনো কখনো একজনের খাবারে দুজন অংশগ্রহণ করতেন। মহানবী (সা.) বলেন, ‘একজনের খাবার দুজনের জন্য যথেষ্ট, দুজনের খাবার চারজনের জন্য যথেষ্ট এবং চারজনের খাবার আটজনের জন্য যথেষ্ট।’ (মুসলিম)

সুতরাং, সুন্নত পন্থায় পানাহার করলে যেমন সওয়াব লাভ করা সম্ভব, তেমনি তা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার অন্যতম উপায়। 

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত