১ কেজি ধানও সংগ্রহ হয়নি

আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া
প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ০৮: ০৯
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ৫৯

গঙ্গাচড়ায় সরকারি খাদ্যগুদামে এবার ১ হাজার ৪০৪ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও গতকাল রোববার পর্যন্ত এক কেজি ধানও কেনা সম্ভব হয়নি। বর্তমান বাজার দরের চেয়ে সরকারি দাম প্রতি কেজিতে তিন থেকে চার টাকা বেশি পাওয়া গেলেও কৃষকেরা গুদামে ধান দিচ্ছেন না। তাঁরা মানের বিষয়ে কড়াকড়ি ও টাকা পাওয়া নিয়ে ঘোরাঘুরিসহ বিভিন্ন ঝামেলার কারণে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর আমন মৌসুমে ৪৫৭ মেট্রিক টন চাল এবং ১ হাজার ৪০৪ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে চাল সংগ্রহ শেষ হলেও কোনো ধান কিনতে পারেনি খাদ্যগুদাম।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ১৫ নভেম্বর ধান ও চাল সংগ্রহ শুরুর আগে প্রতিটি ইউনিয়নে মাইকিং করা হয়। ধান সংগ্রাহ ৩০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। সরকারিভাবে প্রতি কেজি ধানের মূল্য ২৭ এবং চাল ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খাদ্যগুদামে দেওয়া ধান একটু কম শুকানো হলে নিতে চায় না। তখন ধান নিয়ে আবার ফেরত আসতে হয়। আবার পরিবহন খরচ, গুদামের শ্রমিকদের চাঁদা, এসব বাড়তি খরচ তো আছেই। আর বাজারের পাইকারদের কাছে ধান বিক্রিতে কোনো ঝামেলা নেই। কিছু কিছু পাইকার ধান মাড়াইয়ের পর বাড়ি থেকে কিনে নিয়ে যান। সার্বিকভাবে বর্তমানে সরকারি মূল্যের চেয়ে বাজারে বিক্রি করলে ভালো দাম মিলছে। গুদামে ধান ‍দিলেও টাকা তুলতে সময় লাগে। এ জন্য সংসারের কাজ ছেড়ে অফিসে ঘোরার সময় নেই তাঁদের।

বড়বিল ইউনিয়নের মালিপের বাজার এলাকার কৃষক রুবেল বলেন, ‘ধান মাড়াইয়ের পর বাড়িত থাকি বিক্রি করি ৯২০ টাকা মণ (৪০ কেজি) দরে। পাইকার আসি নিয়া যায়। আর ওই এক মণ ধান খাদ্যগুদামের জন্যে শুকি, ফ্যান করি দিবার গেইলে দুই-তিন কেজি কম হয়। ২৭ টাকা কেজি দরে ৩৭ কেজি ধানের দাম হয় ৯৯৯ টাকা। কিন্তু গুদামে ধান নিজে ভাড়া দিয়া নিয়া যাওয়া লাগে। হিসাব করলে, গুদামে ধান দিবার গেইলে ঝামেলা বেশি, সময় লাগে বেশি। এ জন্যে গুদামে ধান না দিয়া বাড়িত পাইকার ডাকে বিক্রি করি দিচুং।’

একই ঝামেলার কথা জানিয়ে কোলকোন্দ ইউনিয়নের মন্টু মিয়া বলেন, ‘খাদ্যগুদামোত ধান দিবার গেইলে এক টন ধান গাড়ি থাকি নামার জন্যে খাদ্যগুদামের লেবাররাই ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা নেয়। ফির গাড়ি ভাড়া যায় ৪০০ টাকা। তার ওপর আরও ঝামেলা অনেক। যদি কোনো দিন ধান ৫০০ টাকা মণ উঠে তখন ভাবি দেখিম, খাদ্যগুদামোত ধান দেওয়া যায় কি না।’

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা উপ-খাদ্য পরিদর্শক কাওছার জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা তো খাদ্যগুদামে ধান দিতে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে কৃষকদের মাইকিংয়ের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছি। এখনো সময় আছে, দেবে হয়তো।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত