চট্টগ্রাম নগরের ঝাউতলা রেলগেটে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও টেম্পোকে ধাক্কা দিয়ে ডেমু ট্রেনের ওপর আছড়ে ফেলেই পালিয়ে যান বাসচালক মো. শহিদুল আলম। আশ্রয় নেন মিরসরাই উপজেলার শায়েরখালির সমুদ্র উপকূলের বেড়িবাঁধ এলাকায়। সেখান থেকে ঢাকা হয়ে পুনরায় মিরসরাইয়ে ফিরে একটি তালাবদ্ধ ঘরে লুকিয়ে থাকেন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। গত বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-৭।

এ বিষয়ে বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে র‍্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে করে বিস্তারিত জানানো হয়। এতে র‍্যাব-৭ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, ঘটনার পরপরই পালিয়ে যান শহিদুল। এরপর মোবাইল ফোন নম্বর বদলে ফেলেন তিনি। কয়েক দফায় জায়গা পরিবর্তনও করেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শহিদুল তাঁর দায় স্বীকার করেছেন। তাঁর ইচ্ছে ছিল ডেমু ট্রেন অতিক্রম করার আগেই রেলগেট পেরিয়ে যাওয়া। সে জন্য দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু সামনে অটোরিকশা ও টেম্পো দাঁড়িয়ে যাওয়ায় তিনি গাড়ির নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি।

গত শনিবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ দুর্ঘটনায় তিনজন মারা যান। এই দুর্ঘটনার জন্য বাসচালককেই দায়ী করছিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। সে দিন রেলগেটের এক পাশে লোহার প্রতিবন্ধক ফেলা থাকলেও অন্য পাশ ছিল খোলা। সেই সুযোগে ওই পাশে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও টেম্পোগুলো রেললাইনের পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ছিল। তখন রেলগেট দিয়ে নাজিরহাট থেকে বটতলী স্টেশনগামী ডেমু ট্রেনটি অতিক্রম করছিল। এ সময় জিইসি মোড় থেকে দ্রুতগতিতে আসা ওই বাসটি দাঁড়িয়ে থাকা অটোরিকশা ও টেম্পোকে ধাক্কা দেয়। এতে সেগুলো চলন্ত ট্রেনের সঙ্গে গিয়ে ধাক্কা খায়। এতে এইচএসসি পরীক্ষার্থী সাতরাজ উদ্দিন শাহীন, ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সৈয়দ বাহাউদ্দিন নিহত হন। প্রাণ হারান দায়িত্ব পালনরত ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল মো. মনিরুল ইসলামও।

ঘটনার দিন রাতে রেলওয়ে পুলিশ বাদী হয়ে বাসচালকের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করে। ঘটনার পর গেটম্যান আশরাফুল আলম ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে অধরা ছিলেন বাসচালক শহিদুল। অবশেষে ঘটনার পাঁচ দিন পর তিনি গ্রেপ্তার হলেন।