Ajker Patrika

যুবককে হত্যার অভিযোগ ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ৫২
যুবককে হত্যার অভিযোগ  ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে

বালুচরে একটি লাশ পাওয়া যায়। রফিকুল ইসলাম (৩২) নামের ওই ব্যক্তি বজ্রপাতে মারা গেছেন বলে থানায় প্রথমে একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়। তিন মাস পর স্বামীকে হত্যার অভিযোগে মামলা করেন রফিকুলের স্ত্রী। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এ মামলার তদন্ত শুরু করে। তদন্তে বেরিয়ে আসে, পাঁচজন পুলিশ সদস্য হত্যা করেন রফিকুলকে। তারপর এক বছরের বেশি সময় কেটে গেছে। মামলার আর অগ্রগতি হয়নি।

রফিকুল ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার পোলাডাঙ্গা গাইনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর বাবার নাম ফজলুর রহমান। ২০২০ সালের ২২ মার্চ সকালে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার দেওয়ানপাড়া এলাকার পদ্মার চরে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। লাশ উদ্ধারের পর থানা-পুলিশ ওই ব্যক্তি বজ্রপাতে মারা গেছেন বলে একটি অপমৃত্যুর মামলা করে। তবে নিহতের স্ত্রী রুমিসা খাতুন (২৬) ওই বছরেরই ১৭ জুন বাদী হয়ে শরিফুল ইসলাম (৩২) এবং জামাল উদ্দিন (৩২) নামে দুজনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন।

এই মামলার কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না বলে গতকাল রোববার রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে রুমিসা খাতুন সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, তাঁর মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান পিবিআইয়ের রাজশাহীর উপপরিদর্শক (এসআই) জামাল উদ্দিন। তিনি ইসাহাক আলী ওরফে ইসা (২৯) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেন। এই আসামি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ২০২০ সালের ৩০ অক্টোবর রাজশাহীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল মাহমুদের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এতে তিনি জানান, পাঁচ পুলিশের হাতে খুন হন রফিকুল।

এই পাঁচ পুলিশ সদস্য হলেন গোদাগাড়ী থানার তৎকালীন এসআই মিজানুর রহমান, এসআই আবদুল মান্নান, এসআই রেজাউল ইসলাম, কনস্টেবল শাহাদাত হোসেন ও কনস্টেবল শফিকুল ইসলাম। জবানবন্দি দেওয়া ইসাহাক পুলিশের সোর্স।

জানা গেছে, রফিকুল একজন হেরোইন পাচারকারী ছিলেন। ঘটনার রাতে রফিকুল ও জামাল উদ্দিন নামের আরেক ব্যক্তি হেরোইন নিয়ে আসছিলেন। পুলিশ গিয়ে ৫০০ গ্রাম হেরোইনসহ তাঁদের ধরে ফেলে। তখন পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি ও কিলঘুষিতে রফিকুল মারা যান। পুলিশ তাঁর লাশ ফেলে রেখে চলে আসে। আর ওই এলাকা থেকেই ১০০ গ্রাম হেরোইনসহ গ্রেপ্তার দেখিয়ে জামালের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এই মামলায় পলাতক আসামি করা হয় রফিকুলকে। ইসাহাক তাঁর স্বীকারোক্তিতে বলেছিলেন, হেরোইনের এই চালানটি ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশের সঙ্গে তাঁর দুই লাখ টাকার চুক্তি হয়েছিল। আর এক লাখ টাকা পাঠানোর পর ভারত থেকে চালানটি তাঁর কাছেই আসছিল। চালান ধরিয়ে দিতে তিনি নিজেই পুলিশের সঙ্গে পদ্মার চর এলাকায় গিয়েছিলেন।

রফিকুলের স্ত্রী মামলা করার সময় রফিকুলের সঙ্গে যাওয়া জামালকেও আসামি করেছিলেন। আর জামালকেই পুলিশ হেরোইনসহ গ্রেপ্তার দেখিয়েছিল। আবার সেদিনই রফিকুলের লাশ পাওয়া যায়। তাই এখান থেকেই হত্যা মামলার তদন্ত শুরু করেন পিবিআই কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন। এতেই উদ্‌ঘাটিত হয় হত্যাকাণ্ডের রহস্য। তবে এখন পর্যন্ত মামলার অভিযোগপত্র দাখিল হয়নি।

তদন্ত কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন বলেন, তাঁর গাজীপুরে বদলির অর্ডার হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে চলে যাবেন। নতুন তদন্ত কর্মকর্তা মামলার তদন্ত শুরু করবেন। মামলার অগ্রগতি না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মোবাইলে এসব নিয়ে কথা বলতে চাননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাবিতে জানাজা হলো না সাবেক ভিসি আরেফিন সিদ্দিকের, তীব্র সমালোচনার মুখে প্রশাসন

প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় সাবেক শিবির নেতা আটক

মধ্যরাতে মহাসড়কে ৩৭ লাখ টাকাসহ এলজিইডি প্রকৌশলী আটক

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ অমান্য করে রাষ্ট্রদূতের ফেসবুকে পোস্ট, পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত

প্রত্যাহার হওয়া ওসির খোঁজে থানায় ভিড় পাওনাদারদের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত