চালে আশা, ধানে নিরাশা

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭: ১৯
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ৩৯

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে সরকারি চাল সংগ্রহ আশার মুখ দেখলেও মুখ থুবড়ে পড়েছে ধান সংগ্রহ অভিযান। গত দুই মাসে সরকারিভাবে ৩ হাজার ৪৯৮ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ হলেও ধান সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৬ মেট্রিক টন। ফলে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

উপজেলার কৃষকেরা জানান, সরকার ২৭ টাকা কেজি দরে ধানের দাম নির্ধারণ করেছে; কিন্তু স্থানীয় বাজারে মণপ্রতি দেড় শ থেকে দু শ টাকা ধানের দাম বেশি পাওয়া যাচ্ছে। একই সঙ্গে সরকারি গুদামে ধান দিতে গেলে ১৪ শতাংশ ময়েশ্চারাইজার বা আর্দ্রতা লাগে এবং প্রক্রিয়াজাতকরণসহ নানা ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। অথচ ওই ধান বাজারে দাম বেশি ও ময়েশ্চারাইজার মাপার ঝামেলা নেই, তাই বাজারেই ধান বিক্রি করছেন তাঁরা। ফলে সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিতে কৃষকের অনীহা।

জানা যায়, গত বছরের ২৩ নভেম্বর থেকে কৃষকের কাছ থেকে ২৭ টাকা কেজি দরে এক হাজার মেট্রিক টন ধান এবং ৪০ টাকা কেজি দরে ৩ হাজার ৯৪৪ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়। যা চলতি মাসের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এ জন্য উপজেলার ১৪০ জন মিলার সরকারি খাদ্যগুদামে ধান-চাল দেওয়ার অনুমোদন পান।

এ ছাড়া গত আমন মৌসুমে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৮ হাজার ১৮২ হেক্টর জমিতে, চাষাবাদ হয়েছে ১৮ হাজার ১৯০ হেক্টর জমি। উৎপাদন হয়েছে ৭৭ হাজার ৭৬১ মেট্রিক টন ধান, যা চালে ৫১ হাজার ৮৪১ মেট্রিক টন। উপজেলায় কার্ডধারী মোট কৃষকের সংখ্যা ৩২ হাজার ৫৫০ জন। এর মধ্যে সরকারি গুদামে ধান-চাল দেওয়ার জন্য লটারির মাধ্যমে ৬৫০ জন কৃষক সুযোগ পান।

ফুলবাড়ী উপজেলা ধান-চাল মিল মালিক সমিতির আহ্বায়ক প্রভাষক মো. মঞ্জিল মোরশেদ ও যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বলেন, সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী উপজেলার মিলাররা খাদ্যগুদামে চাল দিচ্ছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই চাল সরবরাহ সম্পন্ন করা হবে বলে আসা করছেন তিনি। মিলাররা যেহেতু সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ তাই লোকসান হলেও মিলাররা সরকারি গুদামে চাল দিতে বাধ্য। আর কৃষকেরা সরকারের কাছে ধান দিতে বাধ্য না। তা ছাড়া গুদামে ধান দিতে নানা ঝক্কি ঝামেলা অথচ সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাজারে দাম বেশি, তাই কৃষকেরা গুদামে ধান না দিয়ে বাজারেই বিক্রি করছেন।

ফুলবাড়ী-মাদিলাহাট সরকারি খাদ্যগুদামের পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অনিমেষ সরকার ও মো. এমরান হোসেন জানান, আশা করছি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। তবে বাজারে ধানের দাম পাওয়ায় গুদামে ধান দিচ্ছেন না কৃষকেরা।

ফুলবাড়ী উপজেলা ধান-চাল ক্রয় কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। কিন্তু বাজারে ধানের দাম বেশি পাওয়ায় খাদ্যগুদামে ধান দিতে অনীহা প্রকাশ করেন কৃষকেরা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত