আমরা এখন কীভাবে বাঁচব, ছাত্র আন্দোলনে নিহত রথিনের ভাবির আকুতি

কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯: ০৫

‘আমার স্বামী শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ও একজন সরল প্রকৃতির মানুষ। একজন ননদ, সে-ও প্রতিবন্ধী। দেবর রথিন বিশ্বাসের সহযোগিতায় আমাদের সংসার চলত। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রথিন শহীদ হয়। এর পর থেকে আমরা খুব অসহায় হয়ে পড়েছি। আমাদের যেকোনো বিপদে-আপদে রথিনই ছিল একমাত্র ভরসা। রথিনকে আমরা সন্তানের মতো জানতাম। আমরা এখন কীভাবে বাঁচব?’ 

কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত রথিন বিশ্বাসের ভাই বিপ্লব বিশ্বাসের স্ত্রী মাধবী বাড়ৈ। রথিন বিশ্বাস গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার শুয়াগ্রামের মৃত দানিয়েল বিশ্বাসের ছেলে। 

মাধবী আরও বলেন, ‘রথিন ঢাকার রাজাবাজার উইলিয়াম কেরি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে অফিস সহকারী পদে কর্মরত ছিল। তার চাকরির আয়েই আমাদের সংসার চলত। এখন আমাদের সংসার কীভাবে চলবে, তা ভেবে ভেবেই আমাদের দিন কাটছে।’ 

স্বজন সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় রথিন বিশ্বাস আহত হন। এরপর নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ওই দিনই তিনি মারা যান। পরদিন কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে গ্রামের বাড়িতে এনে বাবা-মায়ের সমাধির পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়। বিষয়টি বাড়ির বাইরের লোকজন খুব একটা জানতেন না। গত বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে রথিনের বাড়িতে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। 

জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘জেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ হওয়া চারজনের তালিকা আমরা পেয়েছি। পর্যায়ক্রমে সকলের পরিবারের সঙ্গে আমরা সাক্ষাৎ করছি। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছি। তাঁদের কোনো সমস্যা থাকলে সেগুলো জেনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাচ্ছি। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা শহীদ রথিন বিশ্বাসের বাড়ি ঘুরে এসেছি। তাঁর পরিবারের পাশে জেলা প্রশাসন সব সময় থাকবে।’ 

জেলা প্রশাসক জানান, রথিন বিশ্বাসের ভাই ও বোনের জন্য দ্রুত প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করাসহ চিকিৎসার উদ্যোগ নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সব ধরনের সরকারি সহযোগিতা ওই পরিবারকে দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত