ফুটবলে নতুন একটা জোয়ার আসুক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ২৯ মে ২০২৩, ০৯: ৪৮

বাবা মোহামেডানের পাঁড় ভক্ত। মামুনুল ইসলাম নিজেও একাধিকবার গায়ে চাপিয়েছেন ঐতিহ্যবাহী সাদা-কালো জার্সি। তবে ব্যক্তিগতভাবে মামুনুল ইসলাম আবার বাবার উল্টো, তিনি নিজে আবাহনীর সমর্থক।

আবাহনীর সমর্থক মামুনুল জড়িয়ে আছেন মোহামেডানের ইতিহাসের সঙ্গে। ২০০৯ সালে শেষবার যখন মোহামেডান ফেডারেশন কাপের শিরোপা জিতেছিল, জাতীয় দলের সাবেক তারকা মামুনুল ছিলেন সেই দলের অপরিহার্য অংশ। মোহামেডান সেবার শিরোপা জিতেছিল মামুনুলেরই প্রিয় দল আবাহনীকে টাইব্রেকারে হারিয়ে। সেই শিরোপা জয়ের দীর্ঘ ১৪ বছর আর ফেডারেশন কাপের ফাইনালে খেলা হয়নি মোহামেডানের।

দীর্ঘ অপেক্ষার পর আবারও ফেডারেশন কাপের ফাইনালে মোহামেডান। আগামীকাল কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ১০ বারের ফেডারেশন কাপ জয়ী দলটির প্রতিপক্ষ রেকর্ড ১২ বারের চ্যাম্পিয়ন ও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড। মোহামেডান ও আবাহনী—দুই দলের হয়ে খেলা মামুনুলের তাই ‘শ্যাম রাখি না কুল রাখি’ অবস্থা! আগামীকালের ফাইনালে কে জিতবে, সেই প্রশ্নে কূটনৈতিক উত্তর জাতীয় দলের সাবেক এই মিডফিল্ডারের, ‘কে কী সমর্থন করি, সেটা বড় বিষয় নয়, আমি চাই ফুটবলের জয় হোক। বাংলাদেশের ফুটবলে আবাহনী-মোহামেডান বড় দুটি ব্র্যান্ড। সেই ব্র্যান্ডিংয়ে দীর্ঘ একটা ঘাটতি পড়েছিল। যদি একটা ফাইনালের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ফুটবলে পরিবর্তন আসে, তবে তা-ই হোক।’ 

২০০৯ সালের পর মোহামেডান যখন ধীরে ধীরে ফুটবলে নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে, তখন আবাহনী জিতেছে টানা শিরোপা। মামুনুলের চোখে এবারের ফেডারেশন কাপ ফাইনালে মোহামেডান ‘আন্ডার ডগ’, যারা সেমিফাইনালে বসুন্ধরা কিংসকে হারিয়ে অনেক আত্মবিশ্বাসী। ফাইনালে অতি আত্মবিশ্বাসী না হয়ে মোহামেডানকে সতর্ক ফুটবল খেলার পরামর্শ মামুনুলের। আজকের পত্রিকাকে তিনি বললেন, ‘আবেগ দিয়ে শিরোপা জেতা যায় না। জিততে হলে বাস্তবতা মেনে শিরোপা জিতে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। আবাহনী খেলে একটা দল হয়ে। মোহামেডান এখানে পিছিয়ে আছে।’ 

আবাহনী একটা দল হয়ে খেলে—মামুনুলের চোখে এই গুণ আকাশি-নীলদের এগিয়ে রাখছে মোহামেডানের তুলনায়। বিদেশি খেলোয়াড় আর শক্তিমত্তায় আবাহনীই এগিয়ে থাকবে, এমনটাই মত বর্তমানে ফর্টিস এফসিতে খেলা মামুনুলের। বললেন, ‘মোহামেডান ফাইনাল পর্যন্ত এসেছে সুলেমান দিয়াবাতের অসাধারণ নৈপুণ্যে। আবাহনীর দেশি-বিদেশি খেলোয়াড়—সবাই ভালো। দুই দলের পার্থক্য এতেই পরিষ্কার। আবাহনীর খেলোয়াড়েরা বড় ম্যাচের খেলোয়াড়, তারা মানসিকভাবে বেশ শক্তিশালী।’ 

তবে শক্তিমত্তায় যেমনই হোক, মামুনুলের চাওয়া, দেশ আবারও ভাগ হয়ে যাক আবাহনী-মোহামেডানের ফাইনালকে কেন্দ্র করে। ফাইনালটা যেন হয় উপভোগ্য। কুমিল্লায় আবারও দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর দ্বৈরথটা যেন হয় মনে রাখার মতো, সেটাই চাওয়া তাঁর, ‘আমি চাই, দেশ আবারও ভাগ হয়ে যাক দুই দলের সমর্থনে। ফুটবলের নতুন একটা জোয়ার আসুক। আবাহনী হয়তো এগিয়ে, তবে মোহামেডান জিতলে তারা নতুন করে সাহস পাবে, শক্তি পাবে ভালো দল গড়ার। ক্লাবের পরিবেশ পাল্টে যাবে। আর সেটা হলে ফুটবলেরই মঙ্গল।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত