কিশোর-কিশোরী ক্লাবের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

আবুল কাশেম, কুতুবদিয়া (কক্সবাজার)
প্রকাশ : ১৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০৭: ৩৯
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ২৬

কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের আওতাধীন কিশোর-কিশোরী ক্লাবের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ রয়েছে, কুতুবদিয়ায় মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা নেই। এ সুযোগে মহিলাবিষয়ক অফিসের প্রশিক্ষক জাকের হোছাইন অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেন জাকের হোছাইন। তিনি জানান, উপজেলা জেন্ডার প্রমোটর প্রদত্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী তিনি বিল প্রস্তুত করেন। এ ছাড়া সব কিশোর-কিশোরী ক্লাব নিয়মিত চলছে বলে দাবি করেন তিনি।

জানা গেছে, কুতুবদিয়ার ৬ ইউনিয়নে সরকারি প্রাথমিক/মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গান ও কবিতা আবৃতি প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যে কিশোর-কিশোরী ক্লাব গঠন করা হয় দুই বছর আগে। করোনাকালে প্রকল্পটি বন্ধ থাকলেও ফের চালু করা হয়। প্রতিটি ক্লাবে ২০ জন ছাত্রী ও ১০ জন ছাত্র নিয়ে ক্লাস নেওয়ার লক্ষ্যে ২ জন শিক্ষক, একজন ফিল্ড সুপারভাইজার নিয়োগ দেওয়া হয়।

এ জন্য প্রতি মাসে তাঁদের শুধু নাশতা খরচ ৫০ হাজার ৪০০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। শিক্ষকদের প্রতি কর্মদিবসে ৫০০ টাকা করে সম্মানী দেওয়া হয়।

তবে প্রতিটি ক্লাবেই অধিকাংশ ভুয়া কিশোর-কিশোরীর নাম তালিকায় রয়েছে। আর নাশতা দেওয়া হয় বরাদ্দের থেকে কম টাকার।

কুতুবদিয়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিন দেখা গেছে, ৭ জন কিশোর-কিশোরী উপস্থিত রয়েছে। শিক্ষক আসেননি। ওই দিন ২৬ জনের নাশতার অর্ডার করা হয়েছে। উপস্থিতি পুরো দেখানো হয়েছে।

দক্ষিণ ধুরুং জলিলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. খিজির জানান, তাঁর বিদ্যালয়ে স্থাপিত ক্লাবে সরঞ্জাম দেওয়ার পর কোনো দিন কেউ আসেনি। হারমোনিয়াম, তবলা, ক্যারম বোর্ড নষ্ট হয়ে গেছে।

কৈয়ারবিল জিএম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, তাঁর বিদ্যালয়ে আগে কিছুদিন ক্লাবের শিক্ষকেরা আসতেন। দুমাস ধরে কেউ আসেন না।

এ ব্যাপারে জেন্ডার প্রমোটর নিগারমনি বলেন, ‘করোনাকালে আমাকে দিয়ে অন্য ডিউটি করানো হয়েছে। তবে ২০২০ সালে কোনো সম্মানী পাইনি। ক্লাবে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমের ব্যাপারে অফিসকে অনেকবার জানিয়েছিলাম। তবে আমাকে পুরো উপস্থিতি দেখানোর নির্দেশ দেন প্রশিক্ষক জাকের হোছাইন।’

নিগারমনি আরও বলেন, ‘অন্য উপজেলায় বাইসাইকেল দেওয়া হলেও তাঁকে দেওয়া হয়নি। টিএ/ডিএ দেওয়া হয় না। প্রতিটি ক্লাবের জন্য ক্রোকারিজ বাবদ ২ হাজার টাকাসহ গত জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের জন্য ২ লাখ ৫১ হাজার ২০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে অফিসকে দিয়েছি।’

অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা শওকত হোছাইন বলেন, ‘দু-একটা ক্লাবে উপস্থিতির সংখ্যা কম, এটা ঠিক। তবে তা কাটছাঁট করে বিল করা হয়।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরের জামান চৌধুরী জানান, উপজেলায় কিশোর-কিশোরী ক্লাবের বিষয়ে তাঁকে অবহিত করা হয়নি। বিষয়টি তিনি খোঁজ নেবেন। কোনো অসংগতি পেলে ব্যবস্থা নেবেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত