নাগরিকের পূর্ণাঙ্গ তথ্যভান্ডার হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৬: ৪৮
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯: ১২

দেশে প্রথমবারের মতো নাগরিকের মৌলিক সব তথ্য নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্যভান্ডার করছে সরকার। জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার বা এনপিআর নামের এ তথ্যভান্ডারে গুরুত্বপূর্ণ ৩৩ ধরনের তথ্য থাকবে। এর ফলে একজন নাগরিক সম্পর্কে জানতে সহজ হবে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) কার্যালয়ে সংস্থা আয়োজিত জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার-বিষয়ক কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এনপিআর আমাদের ব্যক্তি-সমাজে দারুণ ভূমিকা রাখবে। ভারতীয় নাগরিকের সব তথ্য থাকে তাদের আধার কার্ডে। ভারতের আধার কার্ডের চেয়েও শক্তিশালী নাগরিক ডেটাবেইস তৈরি করতে যাচ্ছে বিবিএস। বর্তমানে এর নীতিকাঠামো নিয়ে কাজ চলছে। এনপিআরে একজন নাগরিকের ৩৩ ধরনের তথ্য থাকবে।’

এম এ মান্নান বলেন, ‘করোনার কারণে আমরা জনশুমারি সময়মতো করতে পারলাম না। তবে এনপিআর যেন তাড়াতাড়ি হয়, সেই দাবি থাকবে বিবিএসের প্রতি। আমাদের একটা আলাদা পরিচয় দরকার। আমি মনে করি, এনপিআর সে চাহিদা পূরণ করবে।’

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, ‘আমরা এনপিআর করতে পারলে আমাদের কাছে সকল হিসাব থাকবে। বাংলাদেশে কী পরিমাণ বিদেশি শ্রমিক কাজ করছেন, কত টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে—এসব তথ্য সহজেই পাওয়া যাবে। দেশে কত লোক বাইরে থেকে আসছেন, তারও কোনো হিসাব নেই। এনপিআর প্রণয়ন করতে পারলে বিশ্বের বুকে আমাদের নাগরিক মর্যাদা বাড়বে। প্রতারণা করে কেউ রেহাই পাবে না।’

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেখি ভূমি নিয়ে নানা ধরনের জটিলতা থাকে। এনপিআর হলে এই সমস্যা থাকবে না। কারণ, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একজন নাগরিকের সকল তথ্য থাকবে এনপিআরে। তবে আমারও চাওয়া এনপিআর যাতে সময়মতো শেষ হয়।’

বিবিএস জানায়, এনপিআরে যে ৩৩ ধরনের তথ্য থাকবে, এর মধ্যে অন্যতম হলো ব্যক্তির নাম, এনআইডি-পাসপোর্ট-জন্মনিবন্ধন-মোবাইল নম্বর, ই-মেইল আইডি, জরুরি নম্বর, পিতা-মাতার নাম, স্ত্রী/স্বামীর নাম, বসতবাড়ি, জন্মতারিখ, লিঙ্গ, বৈবাহিক অবস্থা, জন্মস্থান, জাতীয়তা, ধর্ম, ব্লাড গ্রুপ, রেসিডেন্স স্ট্যাটাস, বর্তমান ঠিকানা, ঘরের ধরন, পানির উৎস/স্যানিটেশন/আলোর উৎস, স্থায়ী ঠিকানা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, নাগরিকত্ব, কান্ট্রি মাইগ্রেশন, করোনিক ডিজিস, জেনেটিক ডিজিস প্রভৃতি তথ্য। বলা যায় একজন নাগরিকের জন্ম থেকে শুরু মৃত্যু পর্যন্ত মৌলিক প্রায় সব ধরনের তথ্যই থাকবে। এই তথ্য ভোটারের জন্য নির্বাচন কমিশনও ব্যবহার করতে পারবে। মানুষের মৃত্যু হলেও তার তথ্য সংরক্ষিত থাকবে।

বিবিএসের সেন্সাস উইংয়ের সাবেক পরিচালক ও এনপিআরের পরামর্শক ড. মোহাম্মদ সাহাদাত হোসেন কর্মশালায় বলেন, ভারতের আধার কার্ড থেকেও শক্তিশালী হবে এনপিআর। মানুষ মারা গেলেও ওই তথ্য বছরের পর বছর জমা থাকবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত