‘বোঝেন, সীমিত আয়ের মানুষ কোন সিস্টেমে আছি’

মাগুরা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২১, ০৮: ৫৪
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২১, ১৪: ১১

‘পেঁয়াজ ৪২ টাকা থেকে তিন দিনে বেড়ে ৭৫ টাকা কেজি হয়েছে। সয়াবিন তেলের দাম তো প্রতিদিন বাড়ে। ১৩৫ টাকা থেকে বেড়ে ১৫০ টাকা লিটার হয়ে গেছে। কোনদিকে যাবেন? বাজারের ব্যাগ তো ছোট হয়ে গেছে। আগে ১০ টাকার ব্যাগে বাজার করতাম, এখন পাঁচ টাকার ব্যাগও খালি থেকে যায়। বোঝেন, আমরা সীমিত আয়ের মানুষ কোন সিস্টেমে আছি।’

ক্ষোভের সঙ্গে বলছিলেন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করা শাহানুর রহমান। মাগুরা পুরাতন বাজারে শুক্রবার সকালে কেনাকাটা করছিলেন তিনি।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রাবেয়া বেগম একই বাজারে কেনাকাটা করছিলেন। তিনি বলেন, ‘চিনি ৮৫ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭০ টাকা। সম্প্রতি মসুরের ডালের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। আজ শুনলাম আটার দাম বেড়েছে কেজিতে ছয় টাকা। আবার তরকারির জন্য প্রধানত মসলা পেঁয়াজ, সেটি নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে। শুনছি, কাল পরশু ১০০ টাকাও হতে পারে। নির্দিষ্ট বেতনে ৯ জনের সংসার কীভাবে চলবে বলেন।’

এই দুজনের মতো ভায়না বাজার এলাকার ক্রেতা রুহুল মোল্যাও বলেন, ‘মাছের দাম অনেক। গত দুদিন সে জন্য মাছ কিনিনি।’

মাগুরার বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতাদের অভিযোগের সত্যতা মিলল। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম তাঁদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ সবারই। ভোগ্যপণ্যের মতো কাঁচা শাক-সবজির দামও চড়া। আলু এবং পেঁপে ছাড়া মোটামুটি সব সবজির দামই ৫০ টাকা কেজি ছাড়িয়েছে।

ক্রেতাদের অভিযোগ, দাম নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের নজরদারি নেই। নেই বাজার কমিটির কোনো তদারকি। সরকারি চাকরি করেই বাজার করা কঠিন হয়ে গেছে, সেখানে বেসরকারি চাকরিজীবীদের অবস্থা তো আরও খারাপ।

তবে বিক্রেতারা পণ্যের দাম বৃদ্ধির দায় নিচ্ছেন না। মাগুরা নতুন বাজার এলাকার মুদি দোকানি রসুল মিয়া বলেন, ‘মসুরের ডাল কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। পাইকাররা এমনটা প্রায় করেন। পেঁয়াজ কিনছি ৬৮ টাকায়, দুই টাকা লাভে ছেড়ে দিচ্ছি। মানুষ দাম শুনে মন খারাপ করে। নিজের কাছেও খারাপ লাগে। কিন্তু আমরা খুচরা বিক্রি করি। আমাদের ওপরে রয়েছে ডিলার ও পাইকার। তাঁরা যেভাবে দাম চান আমরা সেভাবে কিনে বিক্রি করি।’

পুরাতন বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী স্বপন কুন্ডু বলেন, ‘সরকার যাদের উৎপাদন এবং আমদানির লাইসেন্স দিয়েছে তাঁরাই এমন দাম নিচ্ছেন আমাদের কাছ থেকে। আমরা চালানের টাকা পাঠাই, তাঁরা ট্রাক ভরে দর অনুযায়ী মাল পাঠিয়ে দেন। আমাদের দাম কম বা বেশি করার সুযোগ নেই।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত