এ আর চন্দন, ঢাকা
১৯৭১ সালের উত্তাল মার্চের ১৭ তারিখ বুধবার ছিল মুক্তিকামী বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫১তম জন্মবার্ষিকী। অসহযোগ আন্দোলনের মধ্যে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দলীয় নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ এ দিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মিছিল করে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে গিয়ে প্রাণপ্রিয় নেতাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায়। সেদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনাকালে এক প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, জনগণের সার্বিক মুক্তিই তাঁর জন্মদিনের সবচেয়ে বড় ও পবিত্র কামনা। (দৈনিক ইত্তেফাক, ১৮ মার্চ ১৯৭১)
এদিন বঙ্গবন্ধু তাঁর বাসভবনে পৌঁছালে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের অনুরোধে তিনি তাঁদের সঙ্গে এক ঘরোয়া বৈঠকে মিলিত হন। এক বিদেশি সাংবাদিক জানতে চান জন্মদিনে তাঁর কামনা কী? জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘জনগণের সার্বিক মুক্তি।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমি জনগণেরই একজন। আমার জন্মদিনই কি আর মৃত্যুদিনই কি! আমার জনগণের জন্যই আমার জীবন ও মৃত্যু।’
পরদিন আজাদ পত্রিকার প্রথম পাতায় প্রধান প্রতিবেদনের নিচে দুই কলাম শিরোনাম ছিল ‘আমি তোমাদেরই লোক’। এটি ছিল জন্মদিনে বঙ্গবন্ধুর উক্তি। ইত্তেফাক ১৭ মার্চই সম্পাদকীয় পাতায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা জসীমউদ্দীনের একটি কবিতা ছেপেছিল।
এদিন সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে মিলিত হন। কড়া সামরিক পাহারার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে বৈঠক। পাকিস্তানিদের ভাষায়, সে বৈঠক ছিল একটা ‘টাফ সেশন’। এ দিনও বঙ্গবন্ধু বৈঠকের শুরুতেই সামরিক শাসন প্রত্যাহার ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রথম দিনের মতোই আলোচনা শেষে অপেক্ষমাণ দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের বঙ্গবন্ধু বলেন, আলোচনা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। তবে আলোচনার পরবর্তী সময়ও ঠিক হয়নি। আলোচনা চলছে। লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনও চলবে। পরদিন দৈনিক সংবাদে ব্যানার শিরোনাম ছিল ‘লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলিবেঃ মুজিব’। শোল্ডারে ছিল ‘প্রেসিডেন্টের সহিত দ্বিতীয় দফা বৈঠক সম্পন্নঃ আজ পুনরায় আলোচনার সম্ভাবনা’। ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম ছিল ‘লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকিবে’। আজাদের প্রধান শিরোনাম ছিল ‘মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠক’। ইনসেটে ছিল ‘সফল কি ব্যর্থ জানি না—আলোচনা চলিতেছেঃ মুজিব’।
‘জনতার সংগ্রাম চলবেই, আমাদের সংগ্রাম চলবেই’; ‘সংগ্রাম, সংগ্রাম, সংগ্রাম,/ চলবেই দিনরাত অবিরাম’—এ রকম অনেক উদ্দীপনামূলক গান বেতারে টিভিতে প্রচারিত হচ্ছিল ১৯৭১ সালের মার্চের উত্তাল দিনগুলোতে। ১৭ মার্চও এর ব্যতিক্রম ছিল না। বরং তত দিনে বাংলার শিল্পী-সাংবাদিক-লেখকরাও রাজপথে শামিল, এমনকি তুলি হাতে চিত্রশিল্পীরাও। সংগত কারণেই একাত্তরের এই দিনে দৈনিক পূর্বদেশ শিরোনাম করেছিল ‘শিল্পীর তুলি বন্দুকের চেয়েও তীক্ষ্ণ’। চারু ও কারু শিল্পী সংগ্রাম পরিষদের আগের দিনের এক সভার ওপর ছিল প্রতিবেদনটি।
ঢাকায় অবস্থান করে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াও নিশ্চিত হয়েছিলেন যে এ অংশে পাকিস্তানের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। বঙ্গবন্ধুর ইশারায়ই চলছে সব। একাত্তরের ১৭ মার্চ ছিল পূর্বঘোষিত অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের ষোড়শ দিন। আলোচনার মধ্যেই এ দিনও যথারীতি উত্তাল ছিল রাজপথ। বিমা শিল্পের কর্মীরাও এ দিন রাস্তায় নেমে আসেন। পরদিন পূর্বদেশ পত্রিকা প্রধান শিরোনামের নিচে সেই মিছিলের ছবি ছাপে। ইত্তেফাকের প্রথম পাতায় প্রধান শিরোনামের নিচে দুই কলাম একটি প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয় ১৭ মার্চের ঢাকার চিত্র। শিরোনাম ছিল ‘মিছিল ও সভায় স্বাধিকার আদায়ের বজ্রশপথ’। দৈনিক সংবাদ ১৮ মার্চ প্রথম পাতায় নিচ দিকে ‘অহিংস অসহযোগ অব্যাহত’ শিরোনামে তুলে ধরে আগের দিনের আন্দোলনের খবর। এর ওপরে তিন কলাম ছবি ছাপা হয় মহিলা পরিষদের আগের দিনের কুচকাওয়াজের।
মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠকের ওপর দ্য পিপল ১৭ মার্চ শিরোনাম করেছিল ‘পাকিস্তান থাকবে কী থাকবে না সিদ্ধান্ত নিতে মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠক: বাংলাদেশের স্বাধীনতা অনিবার্য’।
১৯৭১ সালের উত্তাল মার্চের ১৭ তারিখ বুধবার ছিল মুক্তিকামী বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫১তম জন্মবার্ষিকী। অসহযোগ আন্দোলনের মধ্যে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দলীয় নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ এ দিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মিছিল করে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে গিয়ে প্রাণপ্রিয় নেতাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায়। সেদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনাকালে এক প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, জনগণের সার্বিক মুক্তিই তাঁর জন্মদিনের সবচেয়ে বড় ও পবিত্র কামনা। (দৈনিক ইত্তেফাক, ১৮ মার্চ ১৯৭১)
এদিন বঙ্গবন্ধু তাঁর বাসভবনে পৌঁছালে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের অনুরোধে তিনি তাঁদের সঙ্গে এক ঘরোয়া বৈঠকে মিলিত হন। এক বিদেশি সাংবাদিক জানতে চান জন্মদিনে তাঁর কামনা কী? জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘জনগণের সার্বিক মুক্তি।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমি জনগণেরই একজন। আমার জন্মদিনই কি আর মৃত্যুদিনই কি! আমার জনগণের জন্যই আমার জীবন ও মৃত্যু।’
পরদিন আজাদ পত্রিকার প্রথম পাতায় প্রধান প্রতিবেদনের নিচে দুই কলাম শিরোনাম ছিল ‘আমি তোমাদেরই লোক’। এটি ছিল জন্মদিনে বঙ্গবন্ধুর উক্তি। ইত্তেফাক ১৭ মার্চই সম্পাদকীয় পাতায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা জসীমউদ্দীনের একটি কবিতা ছেপেছিল।
এদিন সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে মিলিত হন। কড়া সামরিক পাহারার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে বৈঠক। পাকিস্তানিদের ভাষায়, সে বৈঠক ছিল একটা ‘টাফ সেশন’। এ দিনও বঙ্গবন্ধু বৈঠকের শুরুতেই সামরিক শাসন প্রত্যাহার ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রথম দিনের মতোই আলোচনা শেষে অপেক্ষমাণ দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের বঙ্গবন্ধু বলেন, আলোচনা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। তবে আলোচনার পরবর্তী সময়ও ঠিক হয়নি। আলোচনা চলছে। লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনও চলবে। পরদিন দৈনিক সংবাদে ব্যানার শিরোনাম ছিল ‘লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলিবেঃ মুজিব’। শোল্ডারে ছিল ‘প্রেসিডেন্টের সহিত দ্বিতীয় দফা বৈঠক সম্পন্নঃ আজ পুনরায় আলোচনার সম্ভাবনা’। ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম ছিল ‘লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকিবে’। আজাদের প্রধান শিরোনাম ছিল ‘মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠক’। ইনসেটে ছিল ‘সফল কি ব্যর্থ জানি না—আলোচনা চলিতেছেঃ মুজিব’।
‘জনতার সংগ্রাম চলবেই, আমাদের সংগ্রাম চলবেই’; ‘সংগ্রাম, সংগ্রাম, সংগ্রাম,/ চলবেই দিনরাত অবিরাম’—এ রকম অনেক উদ্দীপনামূলক গান বেতারে টিভিতে প্রচারিত হচ্ছিল ১৯৭১ সালের মার্চের উত্তাল দিনগুলোতে। ১৭ মার্চও এর ব্যতিক্রম ছিল না। বরং তত দিনে বাংলার শিল্পী-সাংবাদিক-লেখকরাও রাজপথে শামিল, এমনকি তুলি হাতে চিত্রশিল্পীরাও। সংগত কারণেই একাত্তরের এই দিনে দৈনিক পূর্বদেশ শিরোনাম করেছিল ‘শিল্পীর তুলি বন্দুকের চেয়েও তীক্ষ্ণ’। চারু ও কারু শিল্পী সংগ্রাম পরিষদের আগের দিনের এক সভার ওপর ছিল প্রতিবেদনটি।
ঢাকায় অবস্থান করে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াও নিশ্চিত হয়েছিলেন যে এ অংশে পাকিস্তানের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। বঙ্গবন্ধুর ইশারায়ই চলছে সব। একাত্তরের ১৭ মার্চ ছিল পূর্বঘোষিত অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের ষোড়শ দিন। আলোচনার মধ্যেই এ দিনও যথারীতি উত্তাল ছিল রাজপথ। বিমা শিল্পের কর্মীরাও এ দিন রাস্তায় নেমে আসেন। পরদিন পূর্বদেশ পত্রিকা প্রধান শিরোনামের নিচে সেই মিছিলের ছবি ছাপে। ইত্তেফাকের প্রথম পাতায় প্রধান শিরোনামের নিচে দুই কলাম একটি প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয় ১৭ মার্চের ঢাকার চিত্র। শিরোনাম ছিল ‘মিছিল ও সভায় স্বাধিকার আদায়ের বজ্রশপথ’। দৈনিক সংবাদ ১৮ মার্চ প্রথম পাতায় নিচ দিকে ‘অহিংস অসহযোগ অব্যাহত’ শিরোনামে তুলে ধরে আগের দিনের আন্দোলনের খবর। এর ওপরে তিন কলাম ছবি ছাপা হয় মহিলা পরিষদের আগের দিনের কুচকাওয়াজের।
মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠকের ওপর দ্য পিপল ১৭ মার্চ শিরোনাম করেছিল ‘পাকিস্তান থাকবে কী থাকবে না সিদ্ধান্ত নিতে মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠক: বাংলাদেশের স্বাধীনতা অনিবার্য’।
পর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে‘বঙ্গবন্ধু’ পদবি বিলীন হবে না। হতে পারে না। যেমনটি ‘দেশবন্ধু’ চিত্তরঞ্জন দাশের পদবি বিলীন হয়নি। ইতিহাসে এসব পদবি অম্লান ও অক্ষয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ছিল অনন্যসাধারণ। আপনজনকে তো অবশ্যই, শত্রুপক্ষের লোকেরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদের
২ দিন আগে